আদিবাসী নারীকে গাছে বেঁধে নির্যাতন, থানায় মামলা

ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৯:২৯ এএম, মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারী ২০২১ | ৮৭০

টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে চুরি করার অপরাধে সন্তানদের সামনে মাকে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সাগরদিঘী ইউনিয়নের মালিরচালা গ্রামে। ওই গ্রামের আদিবাসী নারায়ন বর্মণের স্ত্রী সন্ধ্যা রানীকে (৩৫) গাছে বেধে নির্যাতন করে প্রতিবেশি মনিরুল ইসলামের পরিবারের লোকজন।

এঘটনায় গত রবিবার (১০ জানুয়ারি ) পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, নির্যাতিতা সন্ধ্যা রানী দুই ছেলে ও এক মেয়ে সন্তানের জননী। তার ছোট ছেলে পলাশ (৮) একই গ্রামের মনিরুল ইসলাম ভূইয়ার পরিবারের ছেলে মেয়েদের সাথে প্রায়ই খেলা করত। ঘটনার ১৫দিন আগে সন্ধ্যার ছেলে পলাশ প্রতিবেশি মনিরুল ভূইয়ার বাড়ি থেকে ঘুড়ি বানানোর জন্য পত্রিকা নিয়ে আসে।

পরে সেই ঘুরি বানিয়ে মনিরুলের বাড়ির শিশু সন্তানদের সাথে ঘুড়ি উড়ায়। ওইদিনই মনিরুলের বাড়ি থেকে স্বর্ণ ও টাকাসহ মূল্যবান কাগজপত্র চুরি যায় বলে অভিযোগ করা হয়। পরে চুরি যাওয়ার ঘটনার জের ধরে গত ৩ জানুয়ারি শিশু পলাশকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে মারধর করা হয় এবং মায়ের কাছে চুরির জিনিষপত্র আছে মর্মে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়। এরপর গত ৯ জানুয়ারি মনিরুলের দুই বোন খুকি (৩৭) ও সুমি আক্তার (৩২) সন্ধ্যা রানীর বাড়ি গিয়ে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। পরে তারা সন্ধ্যা রানীকে বাড়ির পাশের করিম ভূইয়ার আকাশমনি গাছের বাগানের একটি গাছে রশি দিয়ে বেঁধে রাখে। এ সময় মনিরুল ভূইয়া তার দুই ছেলে মোস্তফা ও দুই বোন মিলে তাকে লাঠি দিয়ে এলোপাথারি মারধর করে। পরে খবর পেয়ে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে।

প্রত্যেক্ষদর্শী ওই গ্রামের মহানন্দ চন্দ্র বর্মন বলেন, ঘটনার দিন সন্ধ্যা থেকে প্রায় চার ঘন্টা সন্ধ্যা রানীকে বেঁধে রেখে নির্যাতন করা হয়। এ সময় তার ৬ মাসের শিশু সন্তান মায়ের বুকের দুধ খাওয়ার জন্য কান্নাকাটি করলেও শিশুকে দুধ খেতে দেয়নি।

মামলার আসামীর মোস্তফা ভূইয়া বলেন, আমার ছোট বোনের গহনা চুরি করে সন্ধ্যা রানীর ছেলে পলাশ। সে চুরি করা গহনা তার মায়ের কাছে জমা দেয়। বারবার চাইলেও তারা দেয়না। তাই আমার ছোট বোন সুমি সন্ধ্যা রানীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখেছিল।

ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো.ছাইফুল ইসলাম বলেন, মামলার তদন্ত কাজ চলমান রয়েছে। আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।