প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এগিয়ে যাচ্ছেন

শামসুল ইসলাম সহিদ, সাংবাদিক
প্রকাশিত: ১১:৩১ এএম, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০১৯ | ৩৭৭

ছাত্রলীগ, যুবলীগ,স্বেচ্ছাসেবকলীগের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের তাদের পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যে অভিযান চলছে এবং দলের ভেতরে বাইরে শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে একেক করে দুর্নীতিবাজরা বেরিয়ে আসছেন তাতে করে দেশের সাধারণ মানুষ আশাবাদি। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে পরিচালিত এই অভিযানকে দলের ত্যাগি নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষ সমর্থন করে।দেশের মানুষের সমর্থনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিলো।  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনি সেভাবেই এগিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের বিশ্বাস আপনি পারবেন। দেশের সাধারণ মানুষের পূর্ণ সমর্থন আপনার প্রতি আছে, আপনি এগিয়ে যাচ্ছেন এবং এগিয়ে যান।

পশ্চিম পাকিস্তানিদের শোষণের বিরুদ্ধে বাঙালী জাতি যখন আন্দোলন সংগ্রাম চালাতে থাকে তারই সূত্র ধরে একসময় এই আন্দোলন সংগ্রামের কান্ডারির ভূমিকায় আসেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। জাতি আশার আলো দেখতে পায়। ভরসা রাখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ওপর। বঙ্গবন্ধুও তখন এদেশের মুক্তিকামী সাধারণ মানুষকে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখান। জাতি অত্যন্ত দৃঢ়তা ও আস্থার সাথে বঙ্গবন্ধু সকল আন্দোলন সংগ্রামের সাথে যুক্ত হতে থাকে। সেই ভরসা ও আস্থার প্রতীক হিসেবে ১৯৭১ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাঙালী জাতি স্বাধীনতা লাভ করে।

১৯৭৫ সালে দেশি বিদেশী চক্রান্তের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে পরিবারের প্রায় সব সদস্যসহ নির্মমভাবে হত্যা করে স্বাধীনতা বিরোধী পরাজিত শক্তি। দেশের বাইরে অবস্থান করায় বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনা বেঁচে যান। দেশ আবার পিছিয়ে পড়তে থাকে। একর পর এক সামরিক জান্তা ও শৈরতন্ত্রের শাসন চলতে থাকে।

বঙ্গবন্ধু কন্যা স্বজন হারানোর বেদনাকে বুকে চেপে পিতার আদর্শকে লালন করে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে ১৯৮১ সালে দেশে প্রত্যাবর্তন করেন। বাঙালী জাতি আবার ভরসা রাখে বঙ্গবন্ধু কন্যার ওপর। প্রথমেই স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের দায়িত্ব পড়ে শেখ হাসিনার কাধে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং তার সোনার বাঙলা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে যাত্রা শুরু হয় শেখ হাসিনার। দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে শেখ হানিার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। প্রথমবারের মত প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা। সেইসাথে ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী হয়ে এক বিরল রেকর্ড গড়েন শেখ হাসিনা।

দীর্ঘ ৩৮ বছর দলের প্রধান এবং চতুর্থবার দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে শেখ হাসিনা শুধু রেকর্ডই গড়েননি বরং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখে চলেছেন। এরই মধ্যে দেশের স্বাধীনতা বিরোধী পরাজিত শক্তি শেখ হাসিনাকে বার বার হত্যার চেষ্ঠা করেছে। সর্বক্ষণ দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। কিন্তু কোন ষড়যন্ত্রই শেখ হাসিনাকে থামাতে পারেনি। বরং দেশ আজ মধ্যম আয়ের দেশের স্বীকৃতি পেয়েছে।

দেশকে এগিয়ে নিতে নানা মুখি পদক্ষেপের অংশ হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই পদক্ষেপে দেশের সাধারণ মানুষ সাধুবাদ জানালেও বিভিন্ন দিক থেকে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে এবং ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের সম্পর্কে অভিযোগ উত্থাপিত হতে থাকে।

এ অবস্থায়  প্রধানমন্ত্রী দলের ভেতরে বাইরে কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন। শুধু হুশিয়ারি উচ্চারণ করেই প্রধানমন্ত্রী ক্ষান্ত হননি। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানিকে দল থেকে বাদ দিয়ে দেশের সাধারণ মানুষের কাছে প্রশংসিত হয়েছেন। নিজের আত্মীয় হলেও যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীকে তার পধ থেকে অব্যাহতি দেওয়া এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা কাউসারকে তার পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার পর দেশের সচেতন মানুষ প্রধানমন্ত্রীকে বাহবা দিতে থাকেন। দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক শুরু হয়ে গেছে। নেত্রী কাউকে ছাড় দিবেন না বলে বিভিন্ন পর্যায় কথা চলতে থাকে।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এবার শুদ্ধি অভিযান চলছে যুবলীগে। এই শুদ্ধি অভিযানে যুবলীগের প্রভাবশালী নেতাকর্মী এবং ক্যাসিনো স¤্রাটরা আইনের আওতায় চলে এসছে। অভিযুক্ত দুর্নীতি বাজরা গা ঢাকা দিয়ে বাঁচার চেষ্টা করলেও কেউ রেহায় পাবেনা বলে প্রধানমন্ত্রীর কড়া হুশিয়ারি।

প্রধানমন্ত্রী যুবলীগের পর আওয়ামী লীগ এবং এমপি মন্ত্রীদের উদ্দেশ্যে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তিনি বলেছেন দুর্নীতিবাজ শুধু দলের কেন আমার আত্মীয় হলেও ছাড় দেয়া হবেনা।

প্রধানমন্ত্রীর বর্তমান শুদ্ধি অভিযানের পদক্ষেপে কিছু দুর্নীতিবাজরা নাখোশ হলেও দেশের সাধারণ মানুষ আস্থা রেখেছে। দেশপ্রেমী সাধারণ মানুষ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উপর যেমনিভাবে আস্থা রেখেছে ঠিক তেমনিভাবে আস্থা রেখেছে তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার উপর।

স্বজন হারাবার বেদনা বুকে চাপা দিয়ে অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে আত্মপ্রত্যয় ও দৃঢ় মনোবল নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন তাতে কিছু দুর্নীতিবাজ নাখোশ হলেও সাধারণ মানুষ অত্যন্ত আশাবাদি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতাকামি মুক্তি পাগল বাঙালী জাতি যেভাবে ভরসা রেখেছিলো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উপর ঠিক আপনার উপরও আমাদের তেমনি আস্থা আছে। দেশের স্বার্থে এবং এদেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে আপনার প্রতিটি পদক্ষেকে আমরা সমর্থন জানাই। আপনার প্রতি দেশের সাধারণ মানুষের যথেষ্ট আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার স্বপ্ন যেমনিভাবে সফল হয়েছিল তার যোগ্য উত্তরসুরি হিসেবে সোনার বাংলা, দুর্নীতিমুক্ত এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে আপনার সংগ্রাম সফল হবেই। আপনি এগিয়ে যান।