আমার বিরুদ্ধে সব মামলাই রাজনৈতিক প্রতিহিংসার-খালেদা

আলোকিত প্রজন্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:০৩ পিএম, বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর ২০১৭ | ৫৫৭

আদালতে আত্মসমর্থনে দেয়া বক্তব্যে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ৩৬ মামলা দায়ের করা হয়েছে। কোনো মামলারই আইনগত ভিত্তি নেই। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার এসব মামলা করা হয়েছে। কারণ আমি রাজনীতিতে সক্রিয়, যা ক্ষমতাসীনদের জন্য চ্যালেঞ্জ।

বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী ৫নং বিশেষ জজ আখতারুজ্জামানের আদালতে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ প্রসঙ্গে খালেদা জিয়া বলেন, ভয়-ভীতি দেখিয়ে তাকে জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতির ভাগ্যে যদি এই হয়, সেখানে অন্য বিচারপতিদের সামনে ন্যায় বিচারের সুয়োগ ও পরিবশে কতরা থাকতে পারে? দেশের সর্বোচ্চ আদালতের প্রতি জনগণেরও কতটা আস্থা থাকবে?

ন্যায় বিচার পাবো কিনা সেই সংশয় নিয়ে এই মামলার জবাবনন্দী দিতে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপি প্রধান।

তিনি বলেন, কুয়েত শহীদ জিয়াউর রহমানের নামে এতিম খানা প্রতিষ্ঠার জন্য অনুদান দিয়েছিলো। এতে আমার কোনো সম্পৃক্ততা ছিলো না।

তিনি দাবি করেন কুয়েতের দেয়া অনুদানের অর্থ দুই ভাগ করে দু’টি ট্রাস্টকে দেয়া হয়। এতে আইনের কোনো লঙ্ঘন হয়নি। ব্যক্তিগতভাবে আমি কিংবা অন্য কারোর লাভবান হওয়ার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।

বিএনপি প্রধান বলেন, ট্রাস্ট দু’টির কোনো পদে আমি কখনো ছিলাম না বা এখনো নেই। প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও আমার কোন ধরনের সম্পৃক্ততা ছিলো না।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট একটি বেসরকারি ট্রাস্ট। এটি আইন সম্মতভাবে রেজিস্ট্রিকৃত বলেও তার দেয়া জবানবন্দীতে উল্লেক করেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।

এদিন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে দেওয়া বক্তব্যের দিন ধার্য করা হয়।

এর আগে খালেদা জিয়া আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন।

এর আগে বেলা পৌনে ১১টায় তিনি গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’ থেকে যাত্রা শুরু করেন আদালতের উদ্দেশ্যে।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী ২৩ নভেম্বর।

এই দুই দুর্নীতি মামলায় অন্তর্বর্তীজামিনে থাকা খালেদা জিয়া তার আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে স্থায়ী জামিন প্রার্থনা করেন। খালেদা জিয়ার পক্ষে এ জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবী জয়নাল আবেদীন।

দুর্নীতির এই মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে ১৯ অক্টোবর আদালতে আত্মসমপর্ণ করে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পান খালেদা জিয়া।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুদক।

২০১০ সালের ৫ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-আর রশিদ।

২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।

এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন— মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল (ইকোনো কামাল), ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।