আজ ৭ মে, মির্জাপুর গণহত্যা দিবস

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল ) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১১:৩৬ পিএম, সোমবার, ৬ মে ২০১৯ | ৭৪০

আজ ৭ মে, মির্জাপুর গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে টাঙ্গাইল জেলার প্রথম গণহত্যা সংগঠিত হয় মির্জাপুর উপজেলা সদরের মির্জাপুর এবং আন্ধরা গ্রাম ২টিতে। পাকবাহিনী এবং তাদের স্থানীয় দোসররা গণহত্যা চালিয়ে এশিয়াখ্যাত কুমুদিনী হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা দানবীর মানব প্রেমিক রণদা প্রসাদ সাহা ও তার ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহা রবিসহ ৩১ নিরপরাধ গ্রামবাসীকে হত্যা করে।

৭১-র ৭ মে ছিল শুক্রবার উপজেলা সদরের হাটবার। ওইদিন দুরদুরান্তের লোকজন বিভিন্ন সওদা কেনাবেচার জন্য বারটা থেকে একটার মধ্যে হাটে আসলেও সদরের লোকজন সাধারণত দুইটার পরে এসে থাকেন। মির্জাপুর ও আন্ধরা এই গ্রাম দুটিরও কেউ বা হাটে এসেছিলেন, কেউ বা আসার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। আবার কেউ দুপুরে খাওয়ার পর বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। এমন সময় বেলা আনুমানিক পৌনে তিনটার দিকে পাকবাহিনীর ক্যাপ্টেন আইয়ূর এবং তাদের স্থানীয় দোসর মাওলানা ওয়াদুদের নেতৃত্বে পাকবাহিনীর একটি দল আকস্মিক লৌহজং নদীর পাশে মির্জাপুর ও আন্ধরা গ্রাম দুটিকে ঘিরে ফেলে। এরপর যাকে যেখানে যে অবস্থায় পায় তাকেই পাখির মতো গুলি করে হত্যা করে। পরে চালায় লুটপাট । এতে মূহুর্তের মধ্যেই সদা কর্ম চঞ্চল ও কোলাহলপূর্ণ গ্রাম দুটি বিরান ভূমিতে পরিণত হয়। ঘাতকদের এই দলটিই সন্ধ্যার পর নারায়গঞ্জের বাসা থেকে দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা ও তার ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহা রবি এবং কর্মচারী গৌরপদ সাহাকে ধরে নিয়ে শীতলক্ষার পাড়ে হত্যা করে। পাকবাহিনী ও তাদের দোসরদের এই হত্যাযজ্ঞে মির্জাপুর ও আন্ধরা গ্রামের নারী-পুরুষ শিশুসহ ৩১ জন নিরাপরাধ গ্রামবাসী শহীদ হন।

পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা উপজেলা সদরের পুষ্টকামুরী গ্রামের জয়নাল সরকারকে ঘরের ভেতর আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে। বাসায় আওয়ামী লীগ অফিস থাকা এবং গোপনে মুক্তিযোদ্ধাদের খবর আনা নেওয়ার অপরাধে পুষ্টকামুরী গ্রামের মাজম আলীকে পাকবাহিনী জনসম্মুখে গুলি করে হত্যা করে।

দিনটি উপলক্ষে এলাকবাসী বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন। এছাড়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে সন্ধায় উপজেলা প্রশাসন চত্বরের মু্িক্তর মঞ্চে মোমবাতি প্রজ্জলন করে শহীদদের স্মরণ করা হবে বলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল মালেক জানিয়েছেন।

/শামসুল ইসলাম সহিদ