১৯ প্রতিশ্রুতিতে বিএনপির ইশতেহারে

আলোকিতপ্রজন্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:১১ পিএম, মঙ্গলবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮ | ৪৪১

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ১৯টি বিশেষ প্রতিশ্রুতি উল্লেখ করে বিএনপি পৃথক ইশতেহার ঘোষণা করেছে। ইশতেহারে বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি সংক্রান্ত অনুসন্ধ্যান রিপোর্ট প্রকাশ, বড় বড় প্রকল্পের দুর্নীতির বিচারসহ নানা বিষয় উল্লেখ থাকলেও ‘যুদ্ধাপরাধীর বিচার’ বিষয়ে কোনো কিছু উল্লেখ করা হয়নি।

রাজধানীর লেকশোর হোটেলে বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে ইশতেহার ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর৷

১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধীর বিচার বিষয়ে কোনো কিছু উল্লেখ কেন নেই ইশতেহারে, জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, এসব বিষয়ে চলমান সব কিছুতে বলা আছে।

মূল ইশতেহারে এবিষয়ে উল্লেখ আছে দাবি করে অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমেদ বলেন, যু্দ্ধাপরাধীর বিচার অব্যাহত থাকবে। জাতি হিসেবে আমাদের মূল বিষয় হলো মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন৷ এই স্বাধীনতার যারা বিরোধিতা করেছে এবং অপরাধ করেছে তাদেট বিচার চলমান থাকবে।

বিএনপির ইশতেহারে এবিষয়ে স্পষ্ট উল্লেখ না থাকলেও বিএনপির সম্পৃক্ত ও ড. কামাল হোসেন এর নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহারে ‘যুদ্ধাপরাধীদের  বিচার চলমান’ রাখার কথা স্পষ্টভাবে লেখা আছে।

বিএনপির ১৯ প্রতিশ্রুতির মূল ধারাগুলো হলো-গণতন্ত্র ও আইনের শাসন, বিচার বিভাগ সংস্কার, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ, অর্থনৈতিক সংস্কার, মুক্তিযোদ্ধা, যুব, নারীও শিশু, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান, জ্বালানী, তথ্য ও প্রযুক্তি, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি, বৈদেশিক ও প্রবাসী কল্যাণ, কৃষি ও শিল্প, স্বাস্থা ও চিকিৎসা, প্রতিরক্ষা ও পুলিশ, আবাসন, পেনশন ফান্ড ও রেশনিং ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা, পরিবেশ, পররাষ্ট্র, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়।

মঙ্গলবার ঘোষিত ইশতেহারের সারক্ষেপে মুক্তিযোদ্ধাদের বিষয়ে কিছু প্রতিশ্রুতি উল্লেখ রয়েছে- মুক্তিযোদ্ধাকে ‘রাষ্ট্রের সম্মানিত নাগরিক’ হিসেবে ঘোষণা করা এবং মুক্তিযোদ্ধা তালিকা প্রণয়নের নামে দুর্নীতির অবসান ঘটানো হবে, মূল্যস্ফীতির নিরিখে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের ভাতা বৃদ্ধি করা হবে, দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষা ও মুক্তিযুদ্ধকালীন বধ্যভূমি ও গণকবর চিহ্নিত করে সেসব স্থানে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হবে,  রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে নিবিড় জরিপের ভিত্তিতে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের একটি সঠিক তালিকা প্রণয়ন করা হবে এবং তাদের যথাযথ মর্যাদা ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান করা হবে।

বিচার বিভাগ বিষয়ে বলা হয়, সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে নিম্ন আদালতের নিয়ন্ত্রণ রাষ্ট্রপতির হাত থেকে সুপ্রিম কোর্টের হাতে ন্যস্ত করা হবে, মামলার জট দূর করার জন্য যোগ্য বিচারক নিয়োগ দেওয়া হবে এবং এর জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে, বর্তমান বিচার ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য একটি জুডিশিয়াল কমিশন গঠন করা হবে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং বিএনপির ইশতেহারের অনেকগুলো বিষয়ে সম্পর্ক বিদ্যমান। এর মধ্যে যেমন- রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য স্থাপন, একাধারে পরপর দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী না থাকার বিধান, মন্ত্রীসভা সহ প্রধানমন্ত্রীকে সংসদের কাছে দায়বদ্ধ থাকার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করা, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার নিয়োগ, সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে শর্তসাপেক্ষে সংসদ সদস্যদের স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার নিশ্চিত করা, জাতীয় সংসদে উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা করা, সংবিধানে ‘গণভোট’ ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন করে জনগণেট গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃস্থাপন করা, দেশরক্ষা, পুলিশ ও আনসার ব্যতিত শর্তসাপেক্ষে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোনো বয়সসীমা থাকবে না ইত্যাদি।