শিউলী হত্যা এক সপ্তাহে কেউ খোজ রাখেনি


দুষ্কতিকারীদের হাত থেকে সম্ভ্রম বাঁচাতে চলন্ত বাস থেকে পড়ে গার্মেন্টস কর্মী শিউলী বেগম (২৮) মৃত্যুর এক সপ্তাহ পার হলেও কোন জনপ্রতিনিধি সমাজসেবক এবং কোন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শোকর্ত পরিবারটির পাশে দাড়ায়নি। অবুজ দুই শিশু সন্তান নিয়ে বিপাকে পড়া পরিবারের সাহয্যে কেউ হাত বাড়িয়ে দেয়নি।
গত বৃহস্পতিবার সকালে সাড়ে ৭টায় একটি বাস যোগে শিউলী তার কর্মস্থল গোড়াই শিল্পাঞ্চলের কমফিট কম্পোজিট গার্মেন্টে যাচ্ছিলেন। বাসে উঠার প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বাওয়ার কুমারজানী নামক স্থানে পৌছার পর যাত্রী বেশী কয়েকজন দুর্বৃত্ত শিউলী বেগমের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করলে বাসের জানালা দিয়ে মাথা বের করে চিৎকার করতে থাকেন তিনি। এক পর্যায়ে দুষ্কৃতিকারীদের কাছ থেকে বাঁচতে শিউলী বেগম চলন্ত বাস থেকে লাফ দিলে বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা যান।
অভাবের সংসারে একটু সুখের হাশি ফেরাতে শিশু সন্তান রেখে শিউলী কয়েক মাস আগে কাজ শুরু করে একটি গার্মেন্টসে। ওখানে কাজ করে মাসে যা আয় করতেন তা দিয়ে স্বামী সন্তান নিয়ে ভালই যাচ্ছিলো শিউলীর। দশ এবং দুই বছরের শিশু সন্তান রেখে দিনের পুরোটা সময় কর্মস্থলে কাটিয়ে যখন সন্ধায় বাড়ি ফিরতেন ক্লান্ত মলিন মুখে তবু একটু হাসি মিলত সন্তানদের কাছে এসে। কে জানে তাকে এভাবে প্রাণ দিতে হবে।
শিউলীর স্বামী শরিফ থান একজন দিনমজুর। স্ত্রীকে হাড়িয়ে দুই শিশু সন্তান নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি। যে সংসারে নুন আনতে পানতা ফুড়ায় তাও আবার এক সপ্তাহ কাজ ছাড়া কিভাবে চলে। শিউলীর স্বামীর বাড়ি উপজেলার পৌর এলকার পুষ্টকামুরী গ্রামে। এখানে রয়েছেন জাতীয় সংসদ সদস্য আলহাজ মো. একাব্বর হোসেন, পৌর মেয়র সাহাদৎ হোসেন সুমন, ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এস এম রাশেদ, সাবেক দুই মেয়র সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বসবাস। এদের কেউ গত এক সপ্তাহে নিহত শিউলীর পরিবারটিকে একটু শান্তনা দেবার সময় করে উঠতে পারেননি। একটু সহযোগীতার হাত ওই পরিবারটির জন্য প্রসারিত করতে পারেননি।