কমিশন খাই না, অপকর্ম করি না: কাদের


সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ‘দেশের জন্য, মানুষের কল্যাণে’ সর্বোচ্চ সময় ব্যয় করছেন বলে দাবি করেছেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, আমি কমিশন খাই না, অপকর্ম করি না, করবো না।
রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলার প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে জাতীয় মহাসড়কে যানজট নিরসনকল্পে অনুষ্ঠিত এক সভায় এসব কথা বলেন মন্ত্রী। এর আগে তিনি ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর ফতেহপুরে রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণ কাজের পরিদর্শন করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ঈদুল ফিতরের ১০ দিন আগে ও ঈদের দশ দিন পরে সড়ক-মহাসড়কে সংস্কারের নামে সে সব খোঁড়াখুড়ি বন্ধ থাকবে। ঈদেও তিনদিন আগ থেকে পণ্যবাহী পরিবহন বন্ধ থাকবে।
কাদের আরও বলেন, ‘ঈদের সময় রঙ লাগিয়ে ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় নামানো হয়। আর এই গাড়িগুলো রাস্তায় নষ্ট হয়। এজন্য ৫০ থেকে ৬০ কিলোমটার দীর্ঘ যানজট হয়। এ ছাড়া অতি মুনাফার লোভে চালকদেরকে ২৪ ঘণ্টা খাটাবেন না। এতে দুর্ঘটনা অনেক বেড়ে যায়। আমার লাইফ নেই। দেশের জন্য, মানুষের কল্যাণে সর্বোচ্চ সময় ব্যয় করছি। মানুষের ভুল থাকতে পারে তবে আন্তরিকতার কমতি নেই।’
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, ফ্লাইওভারের কাজ সমানতালে চলেছে। আমি কমিশন খাই না। অপকর্ম করি না, করবো না। কেউ দুনীতি করলে তার দায়ভার তাকেই নিতে হবে। আমি সাধারণ পরিবারের এক স্কুল শিক্ষকের ছেলে। আল্লাহর রহমতে আমি দেশের গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরের মন্ত্রী ও বাংলাদেশের বৃহত্তম দলের সাধারণ সম্পাদক। সমানতালে দুই পদে কাজ করে যাচ্ছি। আল্লাহর আমাকে যে সম্মান দিয়েছে আমার আর কিছু চাওয়ার নেই।
চলমান মাদকবিরোধী অভিযান সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, মাদক সহনীয় পর্যায়ে না আসা পর্যন্ত অভিযান চলবে। এখন পর্যন্ত কোনো নিরীহ মানুষ বন্দুকযুদ্ধে মারা যায়নি। যারা মারা গেছে তারা সকলেই অপরাধী। এতে সাধারণ মানুষ খুশি। যদি কোনো নিরীহ মানুষ হয়রানির শিকার হয় তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, ইয়াবা আর রোহিঙ্গার স্রোত পাঠাচ্ছে মিয়ানমার। যারা তিস্তা চুক্তি নিয়ে কথা বলেন, তারা কি জানেন না প্রধানমন্ত্রী তিস্তা এজেন্ডা নিয়ে কলকাতা যাননি। তিস্তা চুক্তি নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর আশ্বাসের প্রতি আমাদের আস্থা আছে।
উল্টো পথ দিয়ে গাড়ি চললে মন্ত্রী বা সংসদ সদস্য (এমপি) হোক জরিমানা করা হবে উল্লেখ করে কাদের বলেন, কাউকে ভয় পেলে চলবে না। এটি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ। এক্ষেত্রে কোন সমস্য হলে তার দায় আমি নেব। সবাইকে নিয়ম মানতে হবে। সরকারি লোকজন যদি নিয়ম না মানেন তবে সাধারণ মানুষকে কীভাবে নিয়ম মানাবেন। মহাসড়কে যানজটের মূল কারণ টোল প্লাজা, যানজট ঠেকাতে সমপরিমাণ টাকা নিয়ে যেতে হবে। টোল প্লাজায় টোল আদায়ের সিস্টেম যানজটের অন্যতম কারণ। এ ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে।’
ফেনী সার্কিট হাউজে অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য দেন ফেনী-২ আসনের এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারী, সড়ক ও জনপথের (সওজ)প্রধান প্রকৌশলী ইবনে আলম হাসান, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব হুমায়ুন কবির খোন্দকার, চেয়ারম্যান চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ পরিচালক অ্যাডমিন জাফর আহাম্মদ, চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি ড. মনিরুজ্জামান, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সওজ চট্টগ্রাম আখতার হোসেন খান, ফেনী জেলা প্রশাসক মনোজ কুমার রায়, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আবুল ফজল মীর, ফেনী পুলিশ সুপার (এসপি) জাহাঙ্গীর আলম সরকার, ফেনী পৌরসভার মেয়র হাজী আলাউদ্দিন, ফেনী সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বি.কম, তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (সওজ) চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী, সভাপতি চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক আক্তার হোসেন প্রমুখ।