টাঙ্গাইলে মতবিনিময় সভায় সমন্বয়ক সারজিস আলম

এক ফ্যাসিস্টকে দেশছাড়া করেছি অন্য ফেসিস্টকে জায়গা দেয়ার জন্য নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৪৭ পিএম, বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৯৭

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, আমাদের আজকে এই টাঙ্গাইলে এসে শুনতে হয় আমার যে ভাই মারুফ হত্যা হয়েছে। আমার যে বোনকে অপদস্ত করা হয়েছে, আমার যে ভাইকে রক্তাক্ত করা হয়েছে, আমার স্কুল-কলেজের ছোট ভাই-বোনদেরকে বিভিন্নভাবে হামলা ও রক্তাত্ব করা হয়েছে। সেই পুলিশটা নাকি এখনো আশেপাশে ঘুরাফেরা করে। আমার ভাই যখন রক্তাক্ত হয়ে হাসপাতালে। তখন সেই হামলাকারী কতিপয় পুলিশ কিভাবে উন্মুক্ত রাস্তায় ঘোরাফেরা করে। আমরা স্পষ্ট বলে দিতে চাই ওই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর, চাটুকার তেলবাজ, তোষামতকারী যে সকল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য রয়েছে। তারা যদি এখনো নিজেকে শুধরে না নেয়। তাদের ওই নেত্রী হাসিনার মতোই তাদেরকে দেশত্যাগ করতে হবে। আমরা আপনাদের মাধ্যমে ছাত্র-জনতার মাধ্যমে পুরো বাংলাদেশকে আমাদের রায় হিসেবে জানিয়ে দিতে চাই। এক ফ্যাসিস্ট কে আমরা দেশছাড়া করেছি। অন্য ফেসিস্টকে জায়গা ছেড়ে দেয়ার জন্য নয়। কেউ যদি এখনো শয়নে স্বপনে স্মৃতিতে কিংবা ঘুমের মধ্যে চিন্তা করে আবারও ছাত্র জনতাকে ডোমিনেট করে ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠবে। তারা যেন ওই শেখ হাসিনাকে দেখে শিক্ষা নিয়ে নেয়।  

বৃহস্পতিবার বিকালে টাঙ্গাইল শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন আয়োজিত ছাত্র-নাগরিক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ছাত্র-জনতাকে উদ্দেশ্য করে সমন্বয়ক সারজিস আলম আরও বলেন, আমরা চাই আগামীতে যে বাংলাদেশ হবে, সেই বাংলাদেশের নেতৃত্ব আপনারা দিবেন। আরো চাই ওই সংসদে গিয়ে আপনি একজন এমপি ও মন্ত্রী হবেন। একজন প্রধানমন্ত্রী হবেন। আপনাকে ওই সংসদে একজন পলিসি মেকার হিসেবে যেতে হবে। কারণ দিন শেষে আপনি কি খান, কি করেন, কি পড়েন, কিভাবে চলবেন, আপনার আইন কি, আপনার নিয়ম নীতি কি হবে, আপনার চলাফেরা কিভাবে হবে। তার সব ডিসিশন পলিসি মেকিং হয় ওই সংসদ থেকে। তাহলে টাঙ্গাইলের এই মেধাবী তরুণ প্রজন্ম যদি ওই সংসদে প্রতিনিধিত্ব না করে তাহলে কারা করবে? সেই জায়গায় আজকের পর থেকে আপনাদের বাবা-মাকে বলে দিবেন আপনারা যেমন এতদিন স্বপ্ন দেখেছেন আপনার ছেলে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পাইলট, ম্যাজিস্ট্রেট হবে আজকের পর থেকে। আপনারা স্বপ্ন দেখবেন আপনার ছেলে দেশের অন্যতম সেরা একজন রাজনীতিবিদ হয়ে উঠবে। একটা জিনিস মনে রাখবেন রাজনীতিবিদ হতে হবে পলিসি মেকিং এর জন্য। অথবা রাজনৈতিকভাবে সচেতন হয়ে উঠতে হবে। যদি আপনি এটা না হন ওই দুইটার কোন একটি জায়গায় আপনাকে দেখা না যায়। তাহলে আপনার চেয়ে তুলনামূলক অযোগ্য মানুষদের দ্বারা আপনাদেরকে শাসিত এবং শোষিত হতে হবে। আমরা আপনাদেরকে স্পষ্ট করে বলি, আপনারা রাজনীতিতে আসবেন। কিন্তু তার পূর্বে যোগ্য রাজনীতিবিদ হয়ে ওই সংসদে আসবেন। যেন কেউ আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা, দক্ষতা, ভাষা থেকে শুরু করে কোন কিছু নিয়ে একটি কথা না কখনো বলতে পারে। এই বাংলাদেশ আর ফ্যাসিজন চায় না। এই বাংলাদেশ ওই পলিটিক্যাল কালচার চায় না। এই বাংলাদেশের ছাত্র জনতা এখন একটি নিউ পলিটিকাল সেটেলমেন্ট চায়। যারা কথা বলবে ছাত্রদের জন্য, যারা কথা বলবে সমতা, সমবন্টন ও সব মর্যাদার জন্য। টাঙ্গাইলের এই ছাত্র জনতা ২৪শে অভ্যুত্থানের যে স্পীড, সেই স্পীড টাঙ্গাইল থেকে ছড়িয়ে পড়–ক পুরো বাংলাদেশে। 

এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মিতু আক্তার, রফিকুল ইসলাম, ইলিমা খন্দকার এ্যানি, অয়ন, সুবাসিরুল, রফিকুল হাসান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।