কোটা সংস্কার আন্দোলনে

গুলিবিদ্ধ শিমুলের স্বপ্ন এখন কামড়ে কামড়ে খাচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:০০ পিএম, মঙ্গলবার, ২৭ আগস্ট ২০২৪ | ৩২৭
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আহত শিমুলের  স্বপ্ন এখন কামড়ে কামড় খাচ্ছে। তার একটি স্বপ  ছিল স্বাধীন দেশে সৈনিক হওয়ার। কিন্ত পায়ে গুলিবিদ্ধ  হওয়াতে সৈনিকে চাকুরী হবে কি না সেটি নিয়েই শংকায় শিমুল ও তার বাবা মার। 
 
জানাযায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ৪ আগস্ট পুলিশের গুলিতে আহত হন শিমুল । তিনি টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার মঙ্গলহোর গ্রামের শহীদ মিয়ার ছেলে শিমুল মিয়া। তিনি উপজেলার পাথরাইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে গত বছর এসএসসি পাশ করেছেন। তার চার ভাইয়ের মধ্য তিনিই বড়। তাকে নিয়েই স্বপ দেখতেন বাংলাদেশের সেনাবাহিনীতে চাকুরি নিয়ে তাদের সংসারটা স্বাবলম্বী হবে।
 
গুলিবিদ্ধ শিমুল বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে আমার বন্ধুদের সাথে শহরের আম ঘাট এলাকায় অবস্থান নেই। বিকেলে পুলিশ অর্তকিতভাবে আমাদেরকে লক্ষ করে গুলি করেন। এরই এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। ছত্রভঙ্গের এক পযায়ে আমার বন্ধুদেরকে হারিয়ে ফেলি। সেই সময় আমার দুটি পায়েই  ছিটগুলিতে গুলিবিদ্ধ হই।  বিশেষ করে ডান পায়ে অনেকটি ছিট গুলি লাগে।  তখন রোডের মধ্য পড়ে থাকি।। যার ফলে আন্দোলনকারীদের মধ্য কয়েকজন আমাকে টেনে হিচড়ে গাড়িতে তুলে হাসপাতালে ভর্তি করেন। 
 
তখন আমার মনে হয়েছিল আমি মনে হয় বাচঁবো না। কোন দিন এরকম বিপদে পড়িনি। তাই ভয়ে অনেক কিছুই মনে হয়েছিল। 
 
এছাড়াও গুলিবিদ্ধ শিমুল বলেন, অনেকটি ছিট গুলি বের করা হয়েছে। হাসপাতালে ৭দিন ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে এসেছি। আমার ডান পায়ে এখনো ৫ টি  ছিট গুলি রয়েছে। 
 
সোমবার ( ২৬আগস্ট )  পায়ে থেকে গুলি বের করার জন্য আবারও টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভতি হয়েছি। 
 
আমার ব্যাথা কষ্ট কোন কিছুই মনে পড়ে না। শুধুই একটি কষ্ট আমাকে কামড়ে কামড়ে খাচ্ছে সেটি হল আমার বাবা মার ইচ্ছা ছিল আমাকে সেনাবাহিনীতে চাকুরী করাবে। 
 
সেটি আজ মনে হয় হবে না। আমার পায়ের কারনে হয়তো  আনফিড হয়ে যাবো ।   
 
গুলিবিদ্ধ শিমুলের বাবা শহীদ মিয়া জানান,  আমার চারটি সন্তান। আমি একজন হতদরিদ্র।  মাইক ভাড়া করে বিভিন্ন জায়গাতে প্রচারের কাজ করে দিন এনে দিন খাই।  এভাবেই আমার সংসার চলে। এর মধ্যেই চারটি সন্তানকে লেখাপড় করিয়ে  স্বপ্ন বুনছি সুখের। 
 
আমার  বড় ছেলেকে সেনাবাহিনীতে চাকুরী করাবো। তিনিই ধরনের আমার সংসারের হাল। আজ বুঝি এই আন্দোলনে সব শেষ। তারপরও আমি হাল ছাড়বো না। 
 
সরকারের কাছে আমার প্রানের দাবি আমার সন্তানকে সেনাবাহিনীতে চাকুরি দিয়ে দেশের জন্য জীবন দিতে এমন কাজ করার জন্য সুযোগ তৈরি করে দিন এটাই আমার দাবি।। 
 
স্থানীয়  ইউপি সদস্য সুলতান মাহমুদ বললেন, পাথরাইল উত্তর পাড়ার মধ্য একদম নিরহ লোক। এরা কোন জুট ঝামেলায় যায় না। কোটা আন্দোলনে বন্ধুদের সাথে শিমুল অংশগ্রহণ করে। এতে তার পায়ে ছিট গুলিতে জায়গা জায়গাতে ঝাজরা হয়ে গেছে। দুই পায়েতেই গুলিবিদ্ধ হয়। তার মধ্য এক পায়ে বেশি । 
 
যদিও চিকিৎসা করে এখন কিছুটা ভাল হয়েছে। তবে আমার মনে হয় সমস্যা কিছুটা থেকে যাবে। 
 
এবিষয় টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবোধায়ক ডা. মো.সাদিকুর রহমান বলেন, গুলিগুলো এমন গভীরে চলে যায় যাহা খুঁজতে অনেক কষ্ট হয়। এক্স‌-রে ফ্লিমে যত সহজে দেখা যায় তত সহজে পাওয়া যায় না। এরা রক্তনালীতে  পৌছাতে পারে বিধায় গুলি বের করতে অনেক সময় রক্ত নালী ডেমেছ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
 
 তাই যদি বড় কোন সমস্যা না হয়ে থাকে সেখানে কোন ধরনের অস্ত্র না ধরাই ভাল।  তিনি আরও বলেন এই গুলিগুলো শরীরে থাকলেও কোন ধরনের ক্ষতি হবে না।