বাসাইল উপজেলার

সাব-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

বাসাইল প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৪:১৪ পিএম, মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট ২০২২ | ৪৭২
টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার সিরাজুল হকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে তার বদলীর দাবীতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। 
 
মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে উপজেলা দলিল লেখক সমিতির ব্যানারে বাসাইল প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
 
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আমজাদ হোসেন বলেন, বাসাইল সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি জনসাধারণ ও দলিল লেখকরা নিয়মিত করে আসছে। কিন্তু বাটরা দাগ, শ্রেণির মধ্যে ডোবা, পালান , পুকুর , ভিটা ইত্যাদি অনলাইন সফটওয়্যার গ্রহণ করে না বিধায় উক্ত দলিলগুলো এনালগ পদ্ধতিতে লিখতে হয়। এসব এনালগের দলিল লিখলেই সরকারী ফি বহির্ভূত এক হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত সাব-রেজিস্ট্রারকে ঘুষ দিয়ে রেজিস্ট্রি কাজ সম্পন্ন করতে হয়। এছাড়াও দাদা ও নানার নামে চূড়ান্ত বি.এস রেকর্ড ও যথাযথ ওয়ারিশান সনদপত্র প্রদান করলেও খারিজ করার কথা বলে রেজিস্ট্রি করেন না। আবার চুক্তির মাধ্যমে ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্তও ঘুষ গ্রহণ করে থাকে। মসজিদ, মাদ্রাসা কবরস্থানসহ অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নামে ওয়াকফ দলিল রেজিস্ট্রি করেন না।
 
তিনি আরও বলেন, কোন লেখক মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিলে সাব-রেজিস্ট্রার সিরাজুল হক কটূক্তি ও ব্যঙ্গ করে মুক্তিযোদ্ধাদের তাচ্ছিল্য করেন। চেয়ারম্যান-মেয়রের প্রদানকৃত একই ব্যক্তির দুই নামের প্রত্যয়ন মূল্যায়ন করেন না। কিন্তু চুক্তির মাধ্যমে সাব-রেজিস্ট্রার উৎকোচ গ্রহণ করে দলিল রেজিস্ট্রি করেন ঠিকই । বন্টননামা , না-দাবী , ভ্রম-সংশোধন , ব্যাংক মর্গেজসহ অন্যান্য দলিল মোটা অংকের চুক্তিতে দলিল রেজিস্ট্রি করেন। কোন লেখক দলিল তল্লাশী করতে চাইলে দাতা আসতে বলে এবং জরুরি ও সাধারণ নকল উত্তোলনের সকল ক্ষেত্রে জরুরি ফিস গ্রহণ করেন।
 
সাব-রেজিস্ট্রারের কাছে একাধিকবার পরামর্শ করতে গেলে তিনি লেখকদের বিভিন্ন অজুহাতে শোকচ প্রদান করেন এবং দলিল লিখতে নিষেধ করেন। পরবর্তীতে দলিল লেখকের কাছ থেকে ৫ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্তও ঘুষ নিয়ে থাকে।
 
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে লেখকরা জানান, এই দুর্নীতিবাজ ঘোষখোর সাব-রেজিষ্টারের অনৈতিক ও অসৌজন্য মূলক আচরণে অতিষ্ট দলিল লেখক, ভেন্ডারসহ সেবা গ্রহিতা সাধারন মানুষ। দুর্ণীতিবাজ এ সাব-রেজিষ্টারের দ্রুত বদলির দাবি জানান লেখক সমিতি। সংবাদ সম্মেলনে অনতিবিলম্বে সাব-রেজিষ্টার সিরাজুল হককে বদলী করে সাব-রেজিষ্টার অফিসে দুর্ণীতিমুক্ত পরিবেশ তৈরি ও দলিল লেখক, ভেন্ডারসহ সেবা গ্রহিতা সাধারন মানুষের হয়রানি বন্ধের দাবি করেন ।
 
এ পর্যন্ত প্রায় ১০জন লেখককে মৌখিক এবং কাগজের মাধ্যমে শোকচ ও অফিস আদেশ প্রদান করেছেন। দলিল লেখক মোজাম্মেল হকের কাছ থেকে সাব-রেজিস্ট্রার সিরাজুল হক ৬০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন। এছাড়াও আরও একজনের মাধ্যমে ৪০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন তিনি। আমরা এই দুর্নীতিবাজ সাব-রেজিস্ট্রার সিরাজুল হকের বদলী চাই। তাকে অন্যত্র বদলী করা না হলে আমরা আরও কঠোর আন্দোলনে নামবো।
 
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী মতিয়ার রহমান গাউস, দলিল লেখক সমিতির সভাপতি নুরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ ফারুক, লেখক আব্দুর রহমান, মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, শরিফুল ইসলাম, মোজাম্মেল হক, ফজলুল করিম, ফরিদ হোসেন, মাজম আলী, আলী আজম, আবু হানিফসহ সমিতির অন্যান্য সদস্য প্রমুখ।