মেলার ক্রেতা-বিক্রেতা শিশুরাই !

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:১১ পিএম, বৃহস্পতিবার, ১৭ মার্চ ২০২২ | ৪৪৯

টাঙ্গাইলে ব্যতিক্রমী এক মেলার আয়োজন করা হয়েছে। মেলার ক্রেতা ও বিক্রেতা ছিল শিশুরাই। বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে ব্যতিক্রমী এই শিশুমেলার আয়োজন টাঙ্গাইল পৌর শহরের হাতেখড়ি প্রি-প্রাইমারী স্কুল কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠানটির আয়োজনে যেমন অভিভুত শিশুরা, তেমনি অভিভাবকরাও। 

দেখা যায়, শহরের হাতেখড়ি প্রি-প্রাইমারী স্কুল প্রাঙ্গণে আয়োজিত মেলায় ক্রেতা ও বিক্রেতার ভূমিকায় ছিল শিশুরাই। এই মেলায় একাধিক স্টলে শিশুরা বিভিন্ন খাবার ও খেলনা সামগ্রী নিয়ে বসেছে। তবে মেলার স্টলে সাজানো ওই খাবার সামগ্রীগুলো বিনামূল্যে অন্যান্য শিশুরা সংগ্রহ করছে। মেলায় শিশুরা মেতে ওঠে আনন্দে-উল্লাসে। পরনে ছিল  শাড়ীসহ রং-বেরংয়ের পোশাক। দীর্ঘদিন পর বিদ্যালয় খোলার শুরুতেই এমন আয়োজন দেখে শিশু শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি মুগ্ধ হয়েছে অভিভাবকরা। 

ব্যতিক্রমী এ মেলায় জিলাপি, আকরি, চিনি সাঁজ, কদমা, চিতই পিঠা, তেলের পিঠা, কুলি পিঠা, খাজা, পোড়াবাড়ির চমচম, মাটির খেলনা, হাঁড়ি-পাতিলসহ নানান সামগ্রীর পসরা নিয়ে বসে আনন্দে দোকান করছে শিশুরা। সেই সামগ্রীই আবার কিনছে স্কুলেরই শিশুরা। মেলার পাশাপাশি শিশুদের বিনোদনে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে অভিভাবকসহ শিল্পী হিসেবে ছিল শিশুরা। তবে এ মেলায় অতিথি ছিল শিশুরাই। 

তোরা, আরিয়া,মিথিলাসহ কয়েকজন শিশু বলেন, আমাদের স্কুলে মেলা হচ্ছে। মেলায় আমরা অনেক মজা করছি। 

অভিভাবক সামিমা সিথি বলেন, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ব্যতিক্রমী এ আয়োজনে আমরা অভিভুত। দীর্ঘদিন বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের মন ভালো ছিল না। এমন আনন্দের প্রয়োজন ছিল। বিদ্যালয় খুলতেই এমন আয়োজন দেখে শিশুরা অনেক খুশি হয়েছে। যান্ত্রিক আর প্রতিযোগিতার বাজারে বেড়ে উঠা শিশুদের মানসিক বিকাশে এমন আয়োজন আরও হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।

অভিভাবক সুমাইয়া পারভীন শিলা বলেন, সত্যিই এটি একটা ব্যতিক্রমী আয়োজন। বিদ্যালয়ে আয়োজিত শিশুমেলায় উৎসবমূখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছিল। আজকের দিনটি অনেক আনন্দ-উল্লাসে কাটিয়েছে শিশুরা। আমরা এ আয়োজনের জন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। 

এ বিষয়ে হাতেখড়ি প্রি-প্রাইমারী স্কুলের চেয়ারম্যান সাংবাদিক নওশাদ রানা সানভী জানান, আমরা বরাবরই শিশুদের জন্য ব্যতিক্রম আয়োজন করে থাকি। এরই ধারাবাহিকতায় এবার ব্যতিক্রমী মেলার এ আয়োজন করা হয়েছে। করোনাকালে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় শিশুরা তাদের বাসায় দীর্ঘদিন আটকে ছিল। এ কারণে শিক্ষার্থীদের ছিল না অন্যান্য শিক্ষার্থীর সাথে মেশার সুযোগ। সেই সুযোগ সৃষ্টি আর একটু বিনোদনের জন্য আমাদের এই আয়োজন। সহপাঠীর সঙ্গে শিশুদের বন্ধুত্বপূর্ণ ভালোবাসা সৃষ্টির লক্ষে আর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের জন্মদিন ও শিশু দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য আমরা এই শিশুমেলার আয়োজন করেছি। আজকের এই বিশেষ দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ও শিশুদের মাঝে আনন্দ দিতে গ্রামীণ এই ঐতিহ্য তুলে ধরাই ছিল আমাদের মূল লক্ষ্য।