রুপা ধর্ষণ ও হত্যা মামলায়
চার ম্যাজিস্ট্রেট সহ পাঁচজনের সাক্ষ্য গ্রহণ


টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে ঢাকার আইডিয়াল ল’কলেজের ছাত্রী রুপা খাতুনকে গণধর্ষণ ও হত্যার মামলায় আদালতে ১৭ জানুয়ারি বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টায় ৭ম বারের মতো ৫ আসামীদের ১৬৪ ধারা স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি গ্রহণকারী ৪ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ১ পুলিশ কন্সটেবলসহ ৫ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেছে।
আগামী রবিবার ২১ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আদালত দিন ধার্য করেছেন।এনিয়ে মামলার বাদি, ডাক্তার, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটসহ ২৪ জনের আদালতে সাক্ষী ও জেরা সমাপ্ত হলো। টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিয়া দুপুর পোনে ১২ টায় এই চাঞ্চল্যকর মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু করেন।
মামলায় আসামী গাড়ি হেলপার আকরাম ও তিন জন সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণকারী ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়া, আসামী শামীমের জবানবন্দি গ্রহনকারী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলাম ও নিহত রুপার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে আসা পুলিশ কন্সটেবল মাহবুবুর রহমান আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করে।
পরে দুইঘন্টাব্যাপী আসামী পক্ষের আইনজীবীরা তাদের জেরা করেন। দুপুর দুইটায় ১ ঘন্টার জন্য মুলতবি ঘোষণা করেন।বিকেল তিনটায় বিচারক এজলাসে উঠে পুনরায় বিচার কাজ করেন।
আসামী বাসের হেলপার জাহাঙ্গীর আলম ও সুপারভাইজার সফর আলীর স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি গ্রহনকারী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শামছুল আলম সাক্ষ্য প্রদান করেন এবং আসামীপক্ষের আইনজীবীরা তাকে জেরা করেন। আসামী ছোঁয়া পরিবহনের চালক হাবিবুরের জবানবন্দি গ্রহনকারী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রূপম কান্তি দাস আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন।
পরে বিকেল সাড়ে চারটায় আসামী পক্ষের আইনজীবীরা তাকে জেরা করেন। পরে আগামী রবিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষীর জন্য দিন ধার্য করেন আদালত।
উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে রুপা খাতুনকে চলন্ত বাসে পরিবহন শ্রমিকরা ধর্ষণ করে। পরে তাকে হত্যা করে টাঙ্গাইলের মধুপুর বন এলাকায় ফেলে রেখে যায়।
পুলিশ ওই রাতেই তার লাশ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্ত শেষে পরদিন বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় অরণখোলা পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম বাদি হয়ে মধুপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
রুপার ভাই ২৮ আগস্ট মধুপুর থানায় এসে লাশের ছবি দেখে রুপাকে সনাক্ত করেন। পরে পুলিশ ছোঁয়া পরিবহনের চালক হাবিবুর (৪৫), সুপারভাইজার সফর আলী (৫৫) এবং সহকারি শামীম (২৬), আকরাম (৩৫) ও জাহাঙ্গীর (১৯) কে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশের কাছে তারা রুপাকে ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করে। ২৯ আগস্ট বাসের তিন সহকারি শামীম, আকরাম, জাহাঙ্গীর এবং ৩০ আগস্ট চালক হাবিবুর এবং সুপারভাইজার সফর আলী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তারা সবাই এখন টাঙ্গাইল কারাগারে আছে।
৩১ আগস্ট রুপার লাশ উত্তোলন করে তার ভাইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে তাকে সিরাজগঞ্জের তাঁরাশ উপজেলার নিজ গ্রাম আসানবাড়িতে নিয়ে দাফন করা হয়।