টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে

করোনার টিকার সিরিঞ্জ ফেলে  দেয়া ওই স্বাস্থ্যকর্মীকে অব্যহতি

স্টার্ফ রিপোটার
প্রকাশিত: ০২:২৯ পিএম, মঙ্গলবার, ৩ আগস্ট ২০২১ | ৬৫২

টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে করোনার টিকা গ্রহণকারীদের শরীরে সুচ ঢুকালেও টিকা প্রবেশ না করিয়ে সিরিঞ্জ ফেলে দেয়ার অভিযোগে ওই স্বাস্থ্যকর্মী সাজেদা আফরিনকে দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দিয়া তাকে ক্লোজ করা হয়েছে। এছাড়া ওই স্বাস্থ্যকর্মীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। স্বাস্থ্যকর্মী সাজেদা আফরিন টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলায় সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক পদে কর্মরত ছিলেন। 

স্থানীয় জনগণ জানান, গত রোববার বেলা ১১টার দিকে দেলদুয়ার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ২ নম্বর বুথে টিকা দিচ্ছিলেন সাজেদা আফরিন। এ সময় তিনি টিকা গ্রহণকারীদের শরীরে সুচ ঢুকালেও টিকা প্রবেশ না করিয়েই তাড়াহুড়ো করে সিরিঞ্জ ঝুড়িতে ফেলে দিচ্ছিলেন। বিষয়টি টিকাকেন্দ্রে আসা কয়েকজনের নজরে আসে। তাঁরা আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) শামীম হোসেনকে বিষয়টি জানান। পরে ঝুড়িতে থাকা পরিত্যক্ত সিরিঞ্জগুলো বের করে দেখেন আরএমও। তখন তিনি সেখান থেকে ২০টি সিরিঞ্জের ভেতর টিকা দেখতে পান। বিষয়টি তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে জানান। এ ঘটনায় টাঙ্গাইলের ডেপুটি সিভিল সার্জন শামীম হুসাইন চৌধুরীকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন সিভিল সার্জন। তদন্ত শেষে সোমবার দুপুরে প্রতিবেদন সিভিল সার্জনের কাছে জমা দিয়েছে কমিটি।

টাঙ্গাইলের ডেপুটি সিভিল সার্জন শামীম হুসাইন চৌধুরী জানান, তদন্ত করে তাঁরা টিকা না ঢুকিয়েই সিরিঞ্জ ফেলে দেওয়ার অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন।

অভিযুক্ত সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক নিজেও লিখিতভাবে বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। তাঁর নিজের অসুস্থতা এবং টিকা গ্রহণকারীদের চাপ বেশি থাকায় এমনটি হয়েছে বলে ওই সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক তদন্ত কমিটিকে জানিয়েছেন। 

দেলদুয়ার হাসপাতালে টিকা দিতে আসা আলিম মিয়া বলেন, সুই পুশ করা হয়েছে। কিন্তু ভ্যাকসিন দেওয়া হয়নি। এ রকম ঘটনা যদি সত্য হয়ে থাকে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি অতি দ্রুত ওই স্বাস্থ্যকর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত।

সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এখানে এসে আমাদের অনেক ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে। আমি টিকা দিতে এসেছি, টিকার কার্ড জমা দিয়েছে। তারা কার্ড হারিয়ে ফেলেছে। সুমি বেগম বলেন, আমি টিকা দিতে এসে ভালো ভাবেই টিকা দিতে পারিনি। এ ঘটনায় আমি আতঙ্কিত।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন আবুল ফজল মো. সাহাবুদ্দিন খান তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার কথা নিশ্চিত করে জানান, প্রতিবেদনটি ঢাকায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক সাজেদা আফরিনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনাটি সত্য, যা সাজেদা আফরিন নিজেও স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় সাজেদা আফরিনকে দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে। তাকে ক্লোজ করা হয়েছে।