থানায় এসেছিলেন বিচার চাইতে, কিন্তু.......

মির্জাপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১০:১৭ পিএম, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২০ | ৫৫৭

পুলিশ প্রশাসন বা থানায় সবাই যায় বিচার চাইতে, অপরাধীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে। সেখানে কখনো ভুক্তভোগিকেই হাজতবাস করতে হয় না। 

কিন্তু আশ্চার্যজনক হলেও সত্য, বিরোধীদের হামলায় গুরুত্বর আহত অবস্থায় থানায় অভিযোগ জানাতে এসে উল্টো ৭ ঘন্টা হাজতবাস করতে হয়েছে জাকির হোসেন (২৫) নামের এক সিএনজি চালকের। আর মঙ্গলবার দুপুরে এমনই ঘটনা ঘটেছে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে।

জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার আনাইতারা ইউনিয়নের চামারী ফতেপুর গ্রামের আদম আলী তার আহত স্ত্রী বেগম ও ছেলে জাকিরকে নিয়ে এক প্রতিবেশী আত্মীয়ের বিরুদ্ধে মারধর করার অভিযোগ জানাতে মির্জাপুর থানায় আসেন। 

তাদের অভিযোগ, গত রোববার সন্ধ্যার দিকে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে জাকিরের সাথে তাদের প্রতিবেশি (সম্পর্কে চাচা) ফেরদৌস মিয়ার বাকবিতন্ডা হয়।

এক পর্যায়ে ফেরদৌস তাঁকে লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকে। এ ঘটনা দেখে তাঁর (জাকিরের) মা বেগম এগিয়ে গেলে ফেরদৌস মিয়া তাঁকে লাঠি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন। এতে তার মা বেগম ও সে (জাকির) গুরুতর আহত হন। পরে তাদের উদ্ধার করে প্রথমে মির্জাপুরের জামুর্কী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 

কিন্তু আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২ টার দিকে আহত থাকার ব্যান্ডেজ নিয়ে তারা মির্জাপুর থানায় অভিযোগ করতে আসলে কর্তব্যরত পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফজলুর রহমান অভিযোগ না নিয়ে জাকিরকে আটক করে থানা হাজতে রাখেন। এ সময় তারা অনেক কাকুতী মিনতি করলেও তিনি তাঁকে ছাড়েননি। 

পরে বিষয়টি মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সায়েদুর রহমান জানলে তাঁর নির্দেশে রাত সাতটার দিকে ফজলুর রহমান জাকিরকে ছেড়ে দেন। 

জাকির হোসেনের মা বেগম বলেন, থানায় অভিযোগ করতে গেলে পুলিশ তাঁর আহত ছেলেকে আটক করে। আহত দেখেও পুলিশের ওই কর্মকর্তার মায়া হয়নি। 

এ ব্যাপারে এসআই ফজলুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিচারপ্রার্থীকে আটকে রাখার অভিযোগ আংশিক অস্বীকার করে জানান, মারামারির ঘটনায় জাকিরদের প্রতিপক্ষ থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছে। এলাকায় গিয়ে তাঁদের না পাওয়ার কারণে থানার কাছে একটি দোকানের পাশে পেয়ে বিকেল চারটার দিকে তাঁকে আটক করা হয়েছিল। ওসি সাহেবের নির্দেশের পরে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। 

এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সায়েদুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আটকের বিষয়টি জানতে পেরে তাকে ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।