ভোলায় সন্তানের সামনে ’মা’ গণধর্ষণের শিকার,মামলা দায়ের


ভোলার মনপুরার চরে শিশু সন্তানের সামনেই এক গৃহবধূ গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। খবর পেয়ে ধর্ষকদের ধরতে গিয়ে নিজেও ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ মনপুরায় ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি সহ ছয় জনকে আসামি করে মনপুরা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার চর পিয়াল থেকে সন্তান সহ ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে মামলা দায়েরের ২৪ ঘণ্টা পার হলেও এখনো (রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত) কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এজন্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানিয়েছেন ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূ। ধর্ষিতা গৃহবধূ চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচা এলাকার বাসিন্দা। তাঁর দুই সন্তান রয়েছে।
এদিকে পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে মনপুরা থানা পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।
রোববার (২৭ অক্টোবর)সকালে ধর্ষিতা ওই গৃহবধূকে ভোলা সদর হাসপাতালে মেডিকেল পরীক্ষার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় শনিবার (২৬ অক্টোবর) রাতে ধর্ষণের অভিযোগে ৬ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন ওই গৃহবধূ।
আসামিরা হলেন, উপজেলার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম (৩০), বেল্লাল পাটোয়ারী (৩৫), রাসেদ পালোয়ান (২৫), শাহীন খান (২২), কিরণ (২৬) ও ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগে স্পিডবোট চালক রিয়াজকে আসামি করা হয়। এদের সবার বাড়ি দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের রহমানপুর গ্রামের ৭ নং ওয়া।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাবার বাড়ি থেকে আড়াই বছরের সন্তানকে নিয়ে মনপুরা যাওয়ার জন্য চরফ্যাশনের বেতুয়া লঞ্চ ঘাটে আসেন গৃহবধূ। ঘাটে এসে দেখেন লঞ্চ ছেড়ে চলে গেছে। পরে স্পিডবোটে ওঠেন। বোটে সেসময় ২জন পুরুষ যাত্রী ছিলেন। পথিমধ্যে খালপাড় থেকে আরো ২জন যাত্রী ওঠে। একপর্যায়ে ৪ যাত্রী মিলে স্পিডবোটটি নির্জন চরপিয়াল নিয়ে যেতে বাধ্য করে। গৃহবধূকে চরে নিয়ে বাগানের মধ্যে গণধর্ষণ করে ওই ৪ যাত্রী। পরে স্পিডবোট চালক রিয়াজ বোটটি চালিয়ে জনতা ঘাটে এসে বোটের মালিক ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নজরুলকে জানায়। সাবেক সভাপতি একই স্পিডবোটে করে চরপিয়াল যায়। ওই সময় নজরুল ৪ ধর্ষণকারীকে মারধর করে ৩ হাজার টাকা নিয়ে ছেড়ে দেন। পরে নজরুল নিজেও ওই গৃহবধূকে সেখানে ধর্ষণ করে। এরপর গৃহবধূকে ১ হাজার টাকা দিয়ে নিজের কাছে ২ হাজার টাকা রাখেন তিনি।
বাদী এজাহারে আরো উল্লেখ করেন, নজরুল ধর্ষণের ঘটনাটি ভিডিও করে তার নাম না বলার জন্য হুমকিও দিয়েছেন। যদি বলে তাহলে ফেসবুকে ওই ভিডিও ছেড়ে দেবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে এই ধর্ষণ মামলার আসামি সাবেক ছাত্রলীগের সভাপতি নজরুল অভিযোগ ধর্ষণের কথা অস্বীকার করেন।
মনপুরা থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, চরপিয়ালে গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনায় ৬ জনকে আসামি করে শনিবার রাতে থানায় মামলা করেছে ওই গৃহবধূ। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। ধর্ষণ কাজে ব্যবহৃত একটি স্পিডবোট জব্দ করা হয়েছে।