সমাবর্তন ও কুবির প্রধান ফটক রহস্য 

কুবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৯:৫৮ পিএম, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০১৯ | ৫৪৯
আগামী বছরের ২৭ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠার ১৩ বছর পেরিয়ে গেলেও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) মূল ক্যাম্পাসের সম্মুখে কোন দৃষ্টিনন্দন ফটক নির্মাণ হয়নি। এতে শিক্ষার্থীদের মাঝে অসন্তুষ্টির আবছায়া দেখা যায়।
 
ক্যাম্পাসের সম্মুখে ফটক নির্মাণের দাবিতে শিক্ষার্থীরা বেশ কয়েকবার আন্দোলন করলেও তা অধরাই থেকে যায়। আর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৩ কিলোমিটার দূরের গেইটটিও প্রশাসনের অবহেলার দরুণ অরক্ষিত অবস্থায় ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পড়ে আছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। সমাবর্তনের আয়োজনকে সামনে রেখে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফটক নিয়ে নতুনভাবে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবি সমাবর্তনের পূর্বে একটি দৃষ্টিনন্দন ফটক নির্মাণ করতে হবে।
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মুখে কোন ফটক না থাকায় ভর্তিচ্ছু নতুন শিক্ষার্থী কিংবা পর্যটকদের কাছে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের। অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে এসেও বিশ্ববিদ্যালয় খুঁজতে থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের  শিক্ষার্থী ওবায়দুল্লাহ অনিক জানান, ‘নতুন দর্শনার্থীদের অনেকেই এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দাড়িয়ে জিজ্ঞেস করেন, ভাই বিশ্ববিদ্যালয়টা কোন দিকে? তখন বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক মূলত একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে রিপ্রেজেন্ট করে।’
 
এদিকে কুমিল্লা­ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের পাশে বেলতলীতে একটি ফটক থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই ফটকটিও দেখভাল করছেনা  বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যানার পোস্টারে ছেয়ে আছে ফটকটি।  বিশ্ববিদ্যালয়ের নামফলকের কয়েকটি অক্ষর উঠে গেলেও সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই প্রশাসনের। 
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র নামফলকবিশিষ্ট গেইট তাও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে। এই গেইটটি দেখাশুনা না করায় নামফলকের একটি অংশ উঠে গেছে অনেকদিন হলো। কিন্তু প্রশাসনের সেদিকে কোন নজর নেই।’
 
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে সৌরভ নামের এক শিক্ষার্থী মন্তব্য করেন, ‘সমাবর্তনের আগে মূল ফটক চাই।’
 
বেলতলী বিশ্বরোড সংলগ্ন গেইটের বিষয়ে এস্টেট শাখার সহকারী রেজস্ট্রার মো. মিজানুর রহমান বলেন,  ‘বেলতলীর ফটকটির নামফলকের যে অক্ষরগুলো নাই সেগুলো নতুন করে লাগানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। খুব শীঘ্রই লগোসহ নতুন নামফলক লাগানো হবে। আর ফটকটি ক্যাম্পাস থেকে দূরে হওয়ায় সবসময় রক্ষণাবেক্ষণ করা যায় না। তবে আমরা কয়েকদিন পর পর ফটকটিতে লাগানো পোস্টার সরিয়ে ফেলি।’  
 
ফটক নির্মাণের বিষয়ে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের পরিচালক ছানোয়ার আলী বলেন, ‘ফটক নির্মাণের জন্য নকশার কাজ চলছে, নকশা চূড়ান্ত হওয়ার পর এস্টিমেট হবে, এরপর টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ শুরু হবে। সব মিলিয়ে আট-নয় মাস থেকে এক বছরের মত সময় লাগবে।’
 
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, ‘ক্যাম্পাসের সামনে একটি মূল ফটক নির্মাণের ব্যাপারটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আর সমাবর্তন আয়োজনের সাজসজ্জার জন্য ইভেন্ট ম্যানেজম্যান্ট প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। সেই প্রতিষ্ঠানই সমাবর্তনের জন্য  দৃষ্টিনন্দন ফটক নির্মাণ করবে।
 
পিএইচ/জুবায়ের রহমান