সাংবাদিককে নির্যাতনের ঘটনায় সাবেক ডিসি জেল হাজতে


কুড়িগ্রামের সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগানকে ভ্রাম্যমান আদলতের নামে মধ্যরাতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগে করা মামলায় সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কুড়িগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ মোসাম্মৎ ইসমত আরা এ আদেশ দেন। সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগানের আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্র জানায়, মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১১ টার দিকে আদালতের শুনানি শুরু হয়। প্রথম দফায় প্রায় সোয়া ১ ঘণ্টা উভয় পক্ষের যুক্তি তর্ক শোনেন আদালত। পরে মুলতবি দিয়ে আবার দুপুর আড়াইটায় শুনানি শুরু হয়। উভয় পক্ষের শুনানি ও এজাহার পর্যালোচনা করে আদালত আসামি সুলতানা পারভীনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
সরকারি পুকুর সংস্কার করে ডিসির নামে নামকরণ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে ২০২০ সালের ১৩ মার্চ দিবাগত মধ্যরাতে সাংবাদিক আরিফকে তার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় জেলা প্রশাসনের তিন ম্যাজিস্ট্রেটসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তাকে ক্রসফায়ারে দেয়ার উদ্দেশে জেলা শহরের পূর্বে ধরলা নদীর তীরে নেয়া হয় বলে অভিযোগ আছে। পরে সেখান থেকে ফিরিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে বিবস্ত্র করে পেটানো হয়। এরপর মাদক রাখার অভিযোগ দেখিয়ে মধ্যরাতেই ভ্রাম্যমান আদালতের নামে এক বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১৫ দিনের কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়। এ নিয়ে সারাদেশে প্রতিক্রিয়া ও প্রতিবাদ শুরু হলে একদিন পর সাংবাদিক আরিফকে জামিন দেয় জেলা প্রশাসন।
জামিনে মুক্তি পেয়ে কুড়িগ্রাম সদর থানায় তৎকালীন ডিসি সুলতানা পারভীন ও তিন ম্যাজিস্ট্রেটসহ অজ্ঞাত ৩০/৩৫ জনকে আসামি করে এজাহার দায়ের করেন সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে ২০২০ সালের ৩১ মার্চ এজাহারটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করে কুড়িগ্রাম সদর থানা পুলিশ। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) মামলাটি তদন্ত করে ঘটনার দীর্ঘ পাঁচ বছর পর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে। চার্জশিটে সাবেক ডিসি সুলতানা পারভীন, তৎকালীন আরডিসি নাজিম উদ্দিন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমা ও এস এম রাহাতুল ইসলামকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এরপর জামিন নিতে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন সুলতানা পারভীন। অপর আসামিরা এখনও আদালতে আত্মসমর্পণ করেননি।