সেতু থাকলেও সড়ক না থাকায় ছয় গ্রামের মানুষদের ভোগান্তি চরমে


সেতু আছে সড়ক নেই। সড়ক হবে কিনা তাও জানেন না এলাকাবাসী। সেতুর দু’পাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় পায়ে হেটে চলাচল করাও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে জনসাধারনের। এতে সেতুর আশপাশের ছয় গ্রামের মানুষের দূর্ভোগ চড়মে পৌছেছে। গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য এলজিইডি কর্তৃক নির্মিত এই সেতু জনগনের কোন কাজেই লাগছে না।
টাঙ্গাইলের নাগরপুরে প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণ হলেও দুই বছরে নির্মাণ হয়নি অ্যাপ্রোচ সড়ক। এতে জনমনে ভোগান্তির পাশাপাশি বেড়েছে ক্ষোভ। ফলে এ সেতুর সড়ক না থাকায় উপজেলা শহরে যেতে শিক্ষার্থী ও ছয় গ্রামের যাতায়তকারীদের পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি। তবে কর্তৃপক্ষ বলছেন, মামলা জটিলতার কারনে সেতুর মূল অংশ নির্মাণ কাজ শেষ হলেও দু’পাশের অ্যাপ্রোচ সড়কের কাজ শেষ হয়নি।
নাগরপুর উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের আলোকদিয়া সড়কের নোয়াই নদীর উপর নির্মাণ করা হয় এ সেতুটি।
উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়কে দীর্ঘ সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে ২০১৬ সালের ১০ আগস্ট ২ কোটি ৯৭ লক্ষ ১৬ হাজার ৭৪৩ টাকা ব্যয়ে ৭২.৬ মিটার দীর্ঘ এ সেতুর নির্মান কাজ শুরু হয়। সেই সাথে ২০১৭ সালের ৯ আগস্ট সেতু নির্মাণ কাজ শেষ করার সময় নির্ধারন করা থাকলেও সেতুর মূল অংশের কাজ হওয়ার পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেতুর দু’পাশের অ্যাপ্রোচ সড়ক করতে পারেনি মের্সাস দাস ট্রের্ডাস নামক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি।
সেতুর সংযোগ সড়ক থেকে বাইরে গিয়ে সেতু নির্মাণ এবং সরকারিভাবে জমি অধিগ্রহন ছাড়াই এলাকাবাসীর জমির উপর দিয়ে সড়ক নির্মাণ করতে গিয়ে মামলায় জড়িয়ে পড়ে মের্সাস দাস ট্রের্ডাস নামক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি। ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মধ্যক্ষ আরিফুজ্জামান সোহেল জনান, জমির মালিকরা মামলা করায় সেতুর মুল অংশের কাজ শেষ করে সংযোগ সড়কের বরাদ্দ বাতিল করে কর্তৃপক্ষের কাছে সেতুটি হস্তান্তর করেছি।
সেই থেকে এভাবেই পড়ে রয়েছে সেতুটি।এমনকি বর্ষা মৌসুমের আগে সংযোগ সড়ক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন সম্পুর্ন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
অপরদিকে এই সেতুর অভাবে নোয়াই নদীর আশপাশের ছয়টি গ্রামের মানুষ প্রতিনিয়ত ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছে। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, উপজেলা শহরে যাতায়াতকারী ও বিভিন্ন এলাকার মানুষদের চলাচলে ব্যাপক অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে তো ভোগান্তি আরো বেড়ে যায়। এখন পায়ে হাটার জন্য যে সড়ক আছে তখন তাও থাকে না। নৌকা দিয়ে চলাচল করতে হয়। আর বৃষ্টি থাকলে তো কোন কথাই নেই।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আলম মিয়া জানান, আমরা দীর্ঘদিন ধরেই এই অবস্থার মধ্যে আছি। আমাদের চলাচলে অনেক অসুবিধা হচ্ছে। এই সেতুর অভাবে উপজেলা শহর থেকে অনেক মালামাল আনতে পারি না। কোন গাড়ি চলাচল করতে পারে না। আমাদের পায়ে হেটে চলাচল করতে হয়। আমাদের ছেলে-মেয়েরা চরম কষ্টের মধ্যে স্কুলে যাচ্ছে।
উপজেলা প্রকৌশলী মো. শাহিনুর আলম জানান, সেতুর মূল অংশের কাজ শেষ হয়েছে। তবে আইনগত জটিলতার কারনে নির্ধারিত সময়ে মধ্যে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সেতুর সংযোগ সড়কের কাজ শেষ করতে পারেনি। সংযোগ সড়কের কাজটি নতুন করে টেন্ডার প্রসেসে রয়েছে। আশা করছি চলতি অর্থ বছরের মধ্যে কাজ শেষ করে জনগনের চলাচলের উপযোগী করা হবে।