’ঘূর্ণীঝড় ফর্ণী’ ব্যাপক প্রস্তুতি থাকলেও
নিরাপত্তা ঝুঁকিতে উপকূলের দুই লক্ষাধিক মানুষ


ঘূর্ণীঝড় ’ফর্ণী’ ব্যাপক প্রস্তুতি থাকলেও ভোলায় ঝুঁকিতে মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীর উপকূলবর্তী চরাঞ্চলের প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষ। এসব এলাকায় নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রের অভাবে বিচ্ছিন্ন চরের বাসিন্দাদের অর্ধেকের বেশি ঝড়-বাদলে অরক্ষিত। এসব মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে প্রয়োজনীয় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের দাবি সংশ্লিষ্টদের। অবশ্য এসব চরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
তজুমদ্দিন উপজেলার মেঘনার মধ্যবর্তী চর মোজাম্মেলে বাস করেন প্রায় ১০ হাজার মানুষ। আর ঝড়- জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় রয়েছে এক হাজার লোকের ধারণক্ষমতার মাত্র একটি স্কুল কাম সাইক্লোন সেল্টার। একই অবস্থা পার্শ্ববর্তী চর জহির উদ্দিন, চর নাসরিন, সিডার চর, মনপুরার কলাতলির চর, চর নিজাম, ঢালচর, চর কুকরী মুকরিসহ মেঘনা-তেঁতুলিয়ার উপকূলবর্তী ৩৫টি চরের দুইলক্ষাধিক মানুষের। গবাদি পশুর আশ্রয়েরও তীব্র সংকট রয়েছে এসব উপকূলে। বৈরী আবহাওয়ায় জানমালের ঝুঁকি থাকলেও শুধু সৃষ্টিকর্তার ওপর ভরসা করেই বছরের পর বছর পার করছেন অসহায় উপকূলবাসী।
এসব উপকূলের বাসিন্দারা বলেন, ঝড়-বাদলে ঘর উড়িয়ে নিয়ে যায়, ঝড়-বাদল আসলে থাকার কোনো জায়গা নেই তাদের। এ অবস্থায় আশ্রয় কেন্দ্রের সংকটে থাকা চরবাসীর জান মালের নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি উপকূলবাসীদের।
মানবসেবা সংস্থার সভাপতি মো. রফিক সাদী বলেন, বেড়িবাঁধ নাই, দূর্যোগের সময় তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ চরগুলিতে থাকে।
ঘূর্ণীঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচীর উপ-পরিচালক মো. সাহাবুদ্দিন জানান, শুধু চরাঞ্চল নয়, ঝড়-বন্যায় জেলার জনসংখ্যার অর্ধেককেই আশ্রয়কেন্দ্রের বাইরে থাকতে হয়। তিনি বলেন, ৬০ শতাংশ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে এবং কিছু এলাকায় শক্ত ঘর আছে সেখানে আশ্রয় নিতে পারবে। বাকি ৪০ শতাংশ মানুষ সতর্কাবস্থায় থাকলেও নিরাপদ আশ্রয়ের অভাবে অনেকটাই বিপদ ও ঝুঁকির মধ্যে থাকতে হয়।
তবে এসব উপকূল ও চরাঞ্চলের পর্যাপ্ত সাইক্লোন সেল্টার ও কিল্লা নির্মাণের মাধ্যমে সবাইকে নিরাপত্তার মধ্যে আনার কথা জানালেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক। তিনি বলেন, পর্যাপ্ত সংখ্যক সাইক্লোন শেল্টার ও কিল্লা নির্মাণের জন্য আমরা প্রস্তাব পাঠিয়েছি। প্রস্তাব পাস হলেই তা নির্মাণ করা হবে।
জেলার ২১ লাখ মানুষের আশ্রয়ের জন্য ৬৫৭টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র ও স্কুল কাম সাইক্লোন শেল্টার রয়েছে। এর মধ্যে শতাধিক আশ্রয়কেন্দ্র ব্যবহারের অনুপযোগী।
কামরুজ্জামান শাহীন