বেনাপোল পৌর শোক দিবস আজ 

সাগর হোসেন, যশোর জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১১:৫২ এএম, শুক্রবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৯ | ৬৬২
যশোরের বেনাপোলে পিকনিকের বাসে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৯ শিশু শিক্ষার্থীর স্মরণে বিশাল শোক দিবস পালিত হয়েছে।
 
শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে বেনাপোল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আয়োজনে বেনাপোল প্রাইমারী স্কুল থেকে বিশাল এক শোক র‌্যালী বের করা হয়।
 
উক্ত র‌্যালিটি নিহত শিক্ষার্থীদের স্মরনে বেনাপোল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে নির্মিত স্মৃতি স্তম্ভে যশোর-১ (শার্শা )আসনের জাতীয় সংসদের সাংসদ শেখ আফিল উদ্দীনসহ সর্বস্তরের মানুষ ফুল দিয়ে নিহত শিশুদের স্মরন করেন। সকালে বেনাপোল সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে।
 
যশোর-১(শার্শা)আসনের এমপি শেখ আফিল উদ্দীনের নেতৃত্বে উক্ত র‌্যালিতে উপস্থিত ছিলেন শার্শা উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব সিরাজুল হক মঞ্জু, শার্শা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব নুরুজ্জামান, শার্শা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান,উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুর রব, শার্শা উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক অধ্যক্ষ ইব্রাহিম খলিল, বেনাপোল পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি অালহাজ্ব এনামুল হক মুকুল ,সাধারন সম্পাদক নাসির উদ্দীন, বেনাপোল ইউপি চেয়ারম্যান বজলুর রহমান, শার্শা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি অহিদুজ্জামান অহিদ, শার্শা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুর রহিম সরদার, সাধারন সম্পাদক ইকবাল হোসেন রাসেলসহ বেনাপোলের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক বৃন্দ,বিভিন্ন সংগঠনের নেতা কর্মীরা এ শোক র‌্যালি তে অংশ গ্রহন করেন।
 
এ উপলক্ষে বেনাপোল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাগফেরাত কামনা করে কোরআন খতম ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন উক্ত স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মজনুর রহমান,
 
চার বছর আগে ২০১৪ সালের এই দিনে বেনাপোল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শিক্ষা সফরে মেহেরপুরের মুজিবনগরে যায়। সেখান থেকে ফেরার পথে চৌগাছার ঝাউতলা কাঁদবিলা পুকুর পাড়ে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয় ৭ জন শিক্ষার্থী, আহত হয় আরো ৭০ জন শিশু শিক্ষার্থী ও ৩/৪ জন শিক্ষক। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ২ জন শিক্ষার্থী মারা যান।
 
ঘটনাস্থলে নিহতরা হলো, বেনাপোল পৌরসভার ছোটআঁচড়া গ্রামের সৈয়দ আলীর দুই মেয়ে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী সুরাইয়া (১০) ও তার বোন তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী জেবা আক্তার (৮), একই গ্রামের ইউনুস আলীর মেয়ে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী মিথিলা আক্তার (১০),  লোকমান হোসেনের ছেলে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র শান্ত (৯),রফিকুল ইসলামের মেয়ে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী রুনা আক্তার মীম (৯), গাজিপুর গ্রামের সেকেন্দার আলীর ছেলে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র সাব্বির হোসেন (১০) ও নামাজ গ্রামের হাসান আলীর মেয়ে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী আঁখি (১১)।
 
১৩ দিন পর ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় ছোট আঁচড়া গ্রামের মনির হোসেনের ছেলে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র ইকরামুল (১১), সর্বশেষ দুর্ঘটনার ৩২ দিন পর ১৯ মার্চ ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় একই গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ইয়ানুর রহমান (১১)।
 
দিন মাস পার হয়ে ফিরে এসেছে ৪ বছরের ঠিক এই দিনটি। কিন্তু ফিরে আসিনি হারিয়ে যাওয়া ৯ শিশু শিক্ষার্থী। আজো কাঁন্না থামেনি হারিয়ে যাওয়া এ সব শিশুদের পরিবারের। পথ চেয়ে বসে আছে এই বুঝি ফিরে আসছে তাদের হারিয়ে যাওয়া সন্তানেরা।