টাঙ্গাইলে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালিত

পারভেজ হাসান
প্রকাশিত: ১২:১৪ পিএম, রোববার, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮ | ৬১৪

সারা দেশের ন্যায় টাঙ্গাইলেও যথাযোগ্য মর্যাদায় সারাদিন ব্যাপী নানা কর্মসুচির মধ্যে দিয়ে আজ রবিবার ১৬ ডিসেম্বর ৪৭ তম মহান বিজয় দিবস পালিত হয়েছে।

সকালে জেলা আওয়ামীলীগের উদ্দেগ্যে আওয়ামীলীগ সহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীর অংশগ্রহনে বিজয় শোভাযাত্রা বের হয়ে বিভিন্ন শহরের মোড় প্রদিক্ষণ করে। শোভাযাত্রা শেষে টাঙ্গাইল শহীদ স্মৃতি স্তম্ভে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্বরণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে জেলা আওয়ামীলীগ। আওয়ামীলীগ ছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন, মুক্তিযুদ্ধো সহ বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষ শহীদদের প্রতি পুস্পস্তোবক অর্পণ করেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান খান ফারুক, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আলমগীর হোসেন মেনু,জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও টাঙ্গাইল সদর-৫ আসনের স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোঃ ছানোয়ার হোসেন ,সংরক্ষিত আসনের মহিলা এমপি মনোয়ারা বেগম, টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম -সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আশরাফউজ্জামান স্মৃতি, যুগ্ম -সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আনসারী, যুগ্ম -সাধারণ সম্পাদক নাহার আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু সুভাষ চন্দ্র সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক ও টাঙ্গাইল পৌর সভার মেয়র জামিলুর রহমান মিরণ, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুজ্জামান সোহলে,দপ্তর সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিক, টাঙ্গাইল সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম এডভোকেট, টাঙ্গাইল শহর আওয়ামীলীগের সভাপতি সিরাজুল হক আলমগীর, সাধারণ সম্পাদক এম এ রৌফ, টাঙ্গাইল শহর আওয়ামীলীগের যুগ্ম- সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হুদা নবীন,সদর প্রমুখ।

এর আগে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা ও পুস্পস্তোবক অর্পণের মধ্য দিয়ে বিজয় দিবসে নানা কর্মসুচির উদ্বোধন করেন টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক মোঃ শহিদুল ইসলাম ও টাঙ্গাইল পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়। দিবসটি উপলক্ষে টাঙ্গাইলে সারাদিন নানা কর্মসুচি পালিত হয়েছে।

পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসন ও শোষণের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ২৪ বছরের মুক্তির সংগ্রাম ও একাত্তর সালের নয় মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের পথ বেয়ে এসেছে বাঙালির বিজয়। সাম্প্রদায়িক দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে সৃষ্ট পাকিস্তানে ১৯৪৭ সালেই বাঙালির ওপর প্রথম আঘাত এসেছিল। রাষ্ট্রভাষা বাংলা করার ঘোষণা দিয়েছিলেন পাকিস্তানি শাসকেরা।

১৯৫২ সালে বুকের তাজা রক্তে রাজপথ রাঙিয়ে বাংলার বীর সন্তানেরা মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করে বিশ্বে এক অনন্য নজির সৃষ্টি করেছিলেন। ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বাধিকারের চেতনার যে স্ফুরণ ঘটেছিল, কালক্রমে তা সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে রূপ নেয়।জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে প্রতিবন্ধীরা। বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার জন্য চূড়ান্ত যুদ্ধে অংশ নিতে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে তোলেন।

তিনি ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে লাখো জনতার সামনে দেওয়া ঐতিহাসিক ভাষণে শত্রুদের মোকাবিলা করার জন্য যার কাছে যা আছে, তা নিয়ে সবাইকে প্রস্তুত থাকতে বলেন। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।

পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল নিরস্ত্র নিরপরাধ ঘুমন্ত বাঙালির ওপর। ববর হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছিল তারা। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি থেকে সেই রাতেই তারা বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে। তবে তার আগেই তিনি বাঙালির ওপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গণহত্যা শুরুর বার্তা দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। সেই ঘোষণায় তিনি বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানান।

বঙ্গবন্ধুর সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ সংগ্রাম গড়ে তোলে বীর বাঙালি। দীর্ঘ নয় মাস সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের এই দিনে পৃথিবীর মানচিত্রে অভ্যদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশের। লাল-সবুজ পতাকা ঊর্ধ্বে তুলে ধরে বিজয়ী বাঙালি। সেই পতাকা উঁচিয়ে প্রগতির পথে চলেছে বাঙালির অভিযাত্রা।