ধর্ষণ ও খুনের কথা অস্বীকার বাবুলের

আলোকিতপ্রজন্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:৫৬ পিএম, শনিবার, ৩১ মার্চ ২০১৮ | ১৯৩

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে কিশোরী বিউটি আক্তারকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলার প্রধান আসামি বাবুল মিয়াকে সিলেটের বিয়ানীবাজার এলাকায় তার ফুফুর বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৯ এর একটি দল। 

র‌্যাব-৯ এর অধিনায়ক ল্যাফটেনেন্ট কর্নেল আলী হায়দার আজাদ জানান, গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিউটিকে অপহরণের কথা স্বীকার করছে বাবুল। তবে ধর্ষণ ও হত্যার কথা অস্বীকার করছে এবং একেক সময় একেক কথা বলছে। বিউটি হত্যাকাণ্ডের পরপরই সে হবিগঞ্জ থেকে পালিয়ে সিলেটে এসে আশ্রয় নেয় বলেও জানান তিনি।

সিলেটে র‌্যাব-৯ এর সদর দফতরে শনিবার (৩১ মার্চ) দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ল্যাফটেনেন্ট কর্নেল আলী হায়দার আজাদ জানান, শুক্রবার (৩০ মার্চ) রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাবুল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। র‌্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাবুল বেশ কয়েকজনের নাম বলেছে। তার দেওয়া তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করছে র‌্যাব। তবে বাবুল বিউটির পরিবারকে দোষারোপ করছে। সে র‌্যাবকে বলেছে, বিউটির মাথায় সমস্যা আছে। সে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে অস্বীকার করলেও বিভিন্ন ধরনের কথা বলছে বলেও জানান র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।   

তিনি আরো জানান, জানুয়ারিতে বিউটি অপহরণের ঘটনায় সে জড়িত। এই ঘটনায় থানায় মামলা যাতে না হয় সেজন্য বাবুলের পক্ষ থেকে ঘটনাটি মীমাংসা করার জন্য একাধিকবার বৈঠক হয়েছে। তবে বিউটির পরিবার তা আমলে না নিয়ে অপহরণ মামলা করে। অপহরণের পর থেকেই বিউটিকে তার মামার বাড়িতে রাখা হয়।

হবিগঞ্জ পুলিশ জানায়, শনিবার বাবুলকে হবিগঞ্জে এনে আদালতে তোলা হবে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাবুল মিয়াকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করবে।

গ্রেপ্তারকৃত বাবুল মিয়া হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ব্রাহ্মণডোরা গ্রামের মৃত মলাই মিয়ার ছেলে। মা স্থানীয় ইউপি মেম্বার কলমচান।

অভিযোগ রয়েছে, গত ২১ জানুয়ারি শায়েস্তাগঞ্জের ব্রাহ্মণডোরা গ্রামের দিনমজুর সায়েদ আলীর মেয়ে বিউটি আক্তারকে (১৪) বাড়ি থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায় বাবুল মিয়া ও তার সহযোগীরা। এক মাস তাকে আটকে রেখে ধর্ষণ করে। এক মাস নির্যাতনের পর বিউটিকে কৌশলে তার বাড়িতে রেখে পালিয়ে যায় বাবুল। এ ঘটনায় গত ১ মার্চ বিউটির বাবা সায়েদ আলী বাদী হয়ে বাবুল ও তার মা স্থানীয় ইউপি মেম্বার কলমচানের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। পরে মেয়েকে সায়েদ আলী তার নানার বাড়িতে লুকিয়ে রাখেন।

এরপর বাবুল ক্ষিপ্ত হয়ে ১৬ মার্চ বিউটি আক্তারকে উপজেলার গুনিপুর গ্রামের তার নানার বাড়ি থেকে রাতের আঁধারে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। ফের ধর্ষণের পর তাকে খুন করে লাশ হাওরে ফেলে দেয়। বিষয়টি জানাজানি হলে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। বিউটিকে হত্যা ও ধর্ষণের অভিযোগে ১৭ মার্চ তার বাবা সায়েদ আলী বাদী হয়ে বাবুল মিয়াসহ দুজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে শায়েস্তাগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর ২১ মার্চ পুলিশ বাবুলের মা কলমচান ও সন্দেহভাজন হিসেবে একই গ্রামের ঈসমাইলকে আটক করে।