সরকারি জলাশয় ভরাট করে অবৈধ মার্কেট নির্মাণের প্রতিবাদে এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৫৭ পিএম, রোববার, ২১ এপ্রিল ২০২৪ | ৩৫

মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর স্মৃতি বিজড়িত টাঙ্গাইলের সন্তোষে সরকারি জলাশয় ভরাট করে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণের পায়তারা করছে একটি প্রভাবশালী মহল। এর প্রতিবাদে রোববার (২১ এপ্রিল) সকালে পৌর শহরের সন্তোষ পীর শাহাজামান মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতি ও সর্বস্তরের জনসাধারণের উদ্যোগে এ মানববন্ধন করে। 

এর আগে গত বছর ১২ মে পত্রিকায় “ভাসানীর হাতে গড়া বাজার দখলে নিয়ে নির্মাণ হচ্ছে বহুতল মার্কেট” শিরোনামে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর প্রশাসনসহ বিভিন্ন মহলে নজরে আসে। পরে উধ্বর্তন কর্তপক্ষের হস্তক্ষেপে মার্কেট নির্মাণের জন্য মাটি ভরাট সাময়িকভাবে বন্ধ হয়।

জানা যায়, মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী এই সন্তোষে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়সহ সর্বমোট ৩৩টি প্রতিষ্ঠান স্থাপনের পরিকল্পনার কাজ শুরু করেন। এ কাজ গুলো বঙ্গবন্ধুকে সমন্বয় করেই শুরু করেছিলেন, যেমন কাগমারী কলেজ প্রতিষ্ঠিত করেন ১৯৫৭ সালে । পরবর্তীতে ভাসানী বঙ্গবন্ধুকে একটি চিঠি লিখেন যে এ সন্তোষে আমি একটি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় করতে চাই বলেও জানা যায়। সেই সালেই ১৯৭৪-৭৫ সালে টাঙ্গাইল পৌর এলাকায় সন্তোষে টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রায় ১০ একর জমি লীজের জন্য আবেদন করেন আব্দুল হামিদ খান ভাসানী। সে বছরই সেখানে আব্দুল হামিদ খান ভাসানী প্রতিষ্ঠিত করেন পীর শাহ্জামান মার্কেট এবং ভোগ্য পণ্য সমিতিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। ১৯৭৬ সালে ভাসানীর মৃত্যুর পর ১৯৮৪ সালে জাতীয় সংসদে গঠন করা হয় সন্তোষ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাষ্ট বোর্ড। এই ট্রাষ্টই বোর্ডের দখলেই ছিল এই জমি। পরবর্তীতে ২০০৫ সালে ট্রাষ্টই বোর্ডের সাথে সমঝোতা স্বাক্ষর হয় ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে।

আরো জানা যায়, ২০০৫ সালেই বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে টাঙ্গাইল সড়ক ও  জনপথ বিভাগের ফজলুল করিম সন্তোষ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাষ্ট বোর্ড পক্ষে সেক্রটারী এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) সদরকে বিবাদী করে রেকর্ড সংশোধনের মামলা দায়ের করেন। ডিপি খতিয়ান ১/১ সাবেক দাগ ৮০৩,৮০৪, এবং হাল দাগ ২০০৪,২০০৫,২০০৬ । ২০০৭ সালে সে রেকর্ড মামলায় রায় পান বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে টাঙ্গাইল সড়ক ও  জনপথ বিভাগ।

প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন  জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র জামিলুর রহমান মিরন, পীর শাহ্জামান মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির বর্তমান আহবায়ক ও ভাসানীর নাতি  হাসরত খান ভাসানী, সদস্য সচিব আবু বক্কর সিদ্দিক, যুগ্ম-আহবায়ক মাসুম আহমেদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিক হোসেন প্রমুখ। তারা মার্কেট নির্মাণ বন্ধ করার জোর দাবি জানান। না হলে আরো বৃহত্তম আন্দোলনে যাবার ঘোষণা দেন। 

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এসএম সিরাজুল হক আলমগীরের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি । 

টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক কায়ছারুল ইসলাম বলেন, জায়গায়টি সড়ক ও জনপথ বিভাগের। সরকারি জায়গায় অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করতে দেওয়া হবে না। আমরা সকল প্রকার আইনগত ব্যবস্থা নিবো।