মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে ফেরার আনন্দটা আমি জানি

মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে ফেরার আনন্দটা আমি জানি। একেবারে আতংক গ্রস্থ হয়ে পড়েছিলাম, মনে হয় আর বুঝি বাঁচবো না। কখন যে কি হয়ে যায়? যদি আর জীবিত না ফিরতে পারি। অবশেষে আল্লাহর রহমতে প্রাণে বেঁচে গেছি।

কথাগুলো বলছিলেন, ইউক্রেন থেকে ফিরে আসা বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার টাঙ্গাইলের রবিউল আউয়াল (৩২)।

গত মঙ্গলবার (৮ মার্চ) রোমানিয়া থেকে বিমান যোগে প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশে এবং গত বুধবার (৯ মার্চ) রাতে টাঙ্গাইলের নিজ বাসায় পরিবারের সাথে মিলিত হন তিনি। রবিউল টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার লাউহাটী ইউনিয়নের পাহাড়পুর গ্রামের হোসেন আলীর ৫ ছেলে মেয়ের মধ্যে সবার ছোট সন্তান রবিউল।

রবিউল বলেন, চট্রগ্রামের বাংলাদেশ মেরিন একাডেমিতে লেখাপড়া শেষ করে ২০২১ সালে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনে চাকরি নেন তিনি। এবছর ২১ ফেব্রুয়ারি তুরষ্ক থেকে জাহাজ নিয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে পৌঁছি। সেখানে গত বুধবার (২ মার্চ) বিকেলে আমাদের জাহাজে বোমাহামলা হয়। এতে জাহাজে থাকা ২৯ জনের মধ্যে ১ জন শাহাদত বরণ করেন। জাহাজের ক্যাপ্টেন ও প্রধান ইঞ্জিনিয়ার মোবাইলের মাধ্যমে শিপিং কর্পোরেশনে যোগাযোগ করতে থাকেন। সরকারের কাছে বিভিন্নভাবে সাহায্য কামনা করতে থাকি আমরা।

পরে দূতাবাসের সাহায্যে গত বৃহস্পিবার (৩ মার্চ) আমাদেরকে ট্রাকবোর্ডের মাধ্যমে জাহাজ থেকে বন্দরে আনা হয় এবং গত শুক্রবার  (৪ মার্চ) তারিখ পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করি। গত শনিবার (৫ মার্চ) তারিখে বাসযোগে আমাদেরকে ইউক্রেন সীমান্ত দিয়ে মলদোভা হয়ে রোমানিয়া পৌছাঁনো হয়। বিশ্বাস আসে যে, এখন আর যুদ্ধে মারা যাবো না। ইউক্রেনে ওই কয়েকটি দিনে ছিলাম মৃত্যুর ভাবনায়।

গত মঙ্গলবার (৮ মার্চ) রোমানিয়া থেকে বিমান যোগে বাংলাদেশে আমরা অবতরণ করি। গত বুধবার (৯ মার্চ) রাতে টাঙ্গাইলের সাবালিয়ার নিজ বাসায় পরিবারের সাথে মিলিত হই। জন্মভূমিতে নিজ পরিবারের কাছে ফিরে এসে কি যে আনন্দ লাগছে সেটা বলে বোঝাতে পারবো না। আল্লাহর দরবারে কোটি শুকরিয়া জানাই।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সরকার ও শিপিং কর্পোরেশনের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। পোল্যান্ড এবং রোমানিয়া দূতাবাস অকল্পনীয় সহযোগিতা সত্যিই প্রশংসনীয়।  কয়েকটা দিন রেস্ট নিয়ে রমজানের ঈদের পর চাকরিতে ফেরার আশা প্রকাশ করেন তিনি।