যমুনায় বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী

আলোকিতপ্রজন্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:১২ পিএম, রোববার, ২৯ নভেম্বর ২০২০ | ১৯৬

যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু সেতুর উজানে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি পৃথক ডাবল লেনের ডুয়েল মিটারগেজ বিশিষ্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ রোববার সকালে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমপাড় সিরাজগঞ্জে আয়োজিত ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে সত্যি আমি খুবই আনন্দিত। আজ থেকে যমুনা নদীর ওপর পৃথক রেলওয়ে সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হতে যাচ্ছে। এই সেতু নির্মাণের ফলে আমি মনে করি, দেশের অভ্যন্তরীণ আর্থসামাজিক উন্নয়ন তো হবেই, আন্তর্জাতিকভাবেও আমরা লাভবান হতে পারব।’

গণভবন প্রান্তে ও মূল অনুষ্ঠানস্থলে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, স্থানীয় সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনের কর্মকর্তা, উন্নয়ন সহযোগী জাইকার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, গণ্যমান্য ব্যক্তি ও সাধারণ মানুষ মূল অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব সেলিম রেজা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আহমদ কায়কাউস গণভবন প্রান্ত থেকে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতুর ওপর একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শিত হয়।

রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে নির্মিত হচ্ছে ডাবল লেনের ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বঙ্গবন্ধু রেল সেতু। জাপান ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে ১৬ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা ব্যয়ে রেল সেতুটি নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে জাইকা। নির্মাণকাজ ২০২৫ সাল নাগাদ শেষ হওয়ার কথা। এই সেতু দিয়ে ১০০ কিলোমিটার বেগে একই সঙ্গে দুটি ট্রেন চলাচল করতে পারবে। উন্মুক্ত হবে সব ধরনের পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলের। ফলে সময় সাশ্রয় হওয়ার পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও ব্যবসা-বাণিজ্যেরও প্রসার ঘটবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত সদিচ্ছায় ১৯৯৮ সালে প্রমত্তা যমুনা নদীর ওপর চালু হওয়া বঙ্গবন্ধু সেতুর সঙ্গে রেল সেতু চালুর মাধ্যমে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়।

প্রথমে ব্রডগেজ ও মিটারগেজের চারটি ট্রেন দৈনিক আটবার পারাপারের পরিকল্পনা থাকলেও যাত্রী-মালামাল পরিবহনের পরিমাণ বাড়তে থাকায় সেতুটির ওপর চাপ বাড়তে থাকে। এবং পৃথক একটি রেলসেতুর প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপর থেকে চাপ কমিয়ে এখানে চলাচলকারী ট্রেনের গতিসীমাও নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ট্রেন যোগাযোগব্যবস্থা নির্বিঘ্ন করতে বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে নির্মাণ করা হচ্ছে দেশের সর্ববৃহৎ ডেডিকেডেট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেল সেতু।

২০১৪ সালের ২৫ থেকে ২৮ মে টোকিও সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে জাপানকে এই প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য অনুরোধ করেছিলেন। পরে ২০১৪ সালের ৬ সেপ্টেম্বর জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ঢাকা সফরে এলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিষয়টি উত্থাপন করেন। বাসস