শাজাহান সিরাজ আর নেই

স্টার্ফ রিপোটার
প্রকাশিত: ০৫:২৩ পিএম, মঙ্গলবার, ১৪ জুলাই ২০২০ | ৩০৮

মহান স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠক সাবেক মন্ত্রী শাজাহান সিরাজ (৭৭) আর নেই। তিনি মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩ টায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে শাজাহান সিরাজের সহধর্মিনী রাবেয়া সিরাজ।

বর্নাঢ্য রাজনীতিবিদ শাজাহান সিরাজ ১৯৪৩ সালের ১ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আব্দুল গণি মিয়া এবং মাতার নাম রাহিমা খাতুন। বাড়ি টাঙ্গাইলের কালিহাতী পৌরসভার বেতডোবাতে। শাজাহান সিরাজ স্বাধীনতা পূর্ববর্তী রাজনীতির ‘চার খলিফা’র একজন। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা তৈরির পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে তিনি অন্যতম। ৩ মার্চ ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন তৎকালীন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাজাহান সিরাজ।

শাজাহান সিরাজ একজন তুখোড় ছাত্রনেতা হিসেবে ষাটের দশকে বঙ্গের আলীগড় খ্যাত টাঙ্গাইলের করটিয়ার সরকারি সা’দত কলেজের ছাত্রসংসদের ২ বার ভিপি নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে দক্ষ, জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ শাজাহান সিরাজ জাসদ ও বিএনপি’র প্রার্থী হয়ে ১৯৭৯, ১৯৮৮, ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে ৫ বার টাংগাইল- ৪ (কালিহাতী) আসন থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি বিএনপি সরকারের নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী, বন ও পরিবেশ, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করেছেন। স্বাধীনতার পর শাজাহান সিরাজ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। পরবর্তীতে তিনি জাসদ থেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিতে যোগদান করে ভাইস চেয়ারম্যান হন। ১/১১ সময়ে দুর্নীতির দায়ে শাজাহান সিরাজের জেল হয়।

শিক্ষানুরাগী হিসেবে তিনি কালিহাতী উপজেলা সদরে কালিহাতী শাজাহান সিরাজ কলেজসহ একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। মৃত্যুকালে স্ত্রী, এক ছেলে রাজিব সিরাজ শুভ এবং এক মেয়ে ব্যারিষ্টার সারওয়াত সিরাজ শুক্লাসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।


প্রয়াত শাজাহান সিরাজের স্ত্রী রাবেয়া সিরাজ বলেন তিনি দীর্ঘদিন যাবত অসুস্থ ছিলেন। বাসায় ও হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলতো। আমি তার বিদেহী আত্মার জন্য কালিহাতী বাসীসহ দেশের সকলের কাছে দোয়া চাই।

রাবেয়া সিরাজ আরো বলেন ওনার মরদেহ বুধবার টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে নেওয়া হবে। এলেঙ্গা ও কালিহাতীতে নামাজে জানাযা শেষে তাকে ঢাকার বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে।

শাজাহান সিরাজের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন কালিহাতী ও টাঙ্গাইলের সাধারণ মানুষসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।