মিনুর বাড়িতে নেই ঈদের আনন্দ 

মামুন সরকার
প্রকাশিত: ০১:০১ এএম, রোববার, ১১ আগস্ট ২০১৯ | ২০৬

সবার মাঝে যখন বিরাজ করছে ঈদের আনন্দ, সবাই যখন ব্যস্ত ঈদের কেনাকেনা নিয়ে। ঠিক সেই সময়ে শোকে মর্মাহত ছেলে ধরা গুজবে নিহত টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার মিনু মিয়ার পরিবারে। 

বন্যায় সড়ক ডুবে যাওয়ায় ভ্যান চালাতে পারছিলেন না মিনু মিয়া। পাঁচ বছরের ছেলে ও অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর মুখে খাবার তুলে দিতে মাছ বিক্রির সিন্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। ২১ জুলাই কালিহাতীর শয়া হাটে জাল কিনতে যাওয়ার সময় ছেলেধরা গুজবে গণপিটুনিতে আহত হন মিনু মিয়া।  পরে ২৯শে জুলাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার।

ভূঞাপুরের টেপিবাড়ি মিনু মিয়ার গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, বাড়ি, উঠান, মিনু মিয়ার ভ্যান ঠিক আগের মতোই আছে। শুধু  নেই মিনু মিয়া। তার শূন্যতা ঘিরে রেখেছে স্ত্রী-সন্তানসহ পুরো পরিবারকে। সবার চোঁখে মুখে বিরাজ করছে শোক আর হতাশার ছাপ। বাবা আর ফিরবে না এখনো জানে না মিনু মিয়ার ছেলে রাহাত। এখনো অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে কখন বাবা আসবে তার জন্য ঈদের নতুন জামা নিয়ে।

মিনু মিয়ার স্ত্রী বলেন, আমার স্বামী সরল মানুষ ছিলেন। কারো সঙ্গে কখনো ঝগড়া বিবাদ বা দ্বন্দ্বে জড়াতেন না। তার অল্প আয়ে আমাদের সংসার অনেক ভালোভাবই চলতো। কষ্ট হলেও ঈদে ছেলেকে নতুন জামা,  আমাকে নতুন কাপড় কিনে দিতে।  সাধ্য অনুযায়ী বাজার করতেন। ঈদের দিন ঘুরতে নিয়ে যেতেন ছেলেক। এখন তো সংসার চালানোর উপায়ই নেই, ঈদে আনন্দ করবো কিভাবে? আমার অনাগত সন্তানও তার বাবাকে দেখতে পাবে না। এ বলে সে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে।

ভূঞাপুর উপজেলা  পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল হালিম এ্যাডভোকট বলেন, মিনু মিয়ার মৃত্যু অনাকাঙ্ক্ষিত। এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনা হবে। 

টাঙ্গাইল জেলা মানবাধিকার কমিশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী তাজ উদ্দীন রিপন বলেন, মিনু মিয়ার মৃত্যুতে তার পরিবারে যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ হওয়ার নয়।  বিনা কারনে যারা মিনুকে হত্যা করেছে তাদের অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনতে হবে। নিঃস্ব এ পরিবারের জন্য বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিত।