টাঙ্গাইল-২

নৌকা নিয়ে মাঠে সরব ছোট মনির, জেলে টুকু

ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৩:২৩ পিএম, শনিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮ | ৪৭৩

টাঙ্গাইলের আটটি আসনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আসন হচ্ছে টাঙ্গাইল-২। গোপালপুর উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা ও ভূঞাপুর উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৬৭০ জন।

এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭৫ হাজার ২৩৪ এবং মহিলা ভোটার ১লাখ ৭৩ হাজার ৪৩৬ জন। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এসব ভোটাররা ১৩২ টি ভোট কেন্দ্রের ৭২৯ টি ভোট কক্ষে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে।

এ আসটিতে ১৯৭৩, ১৯৯৬ (১২ই জুন), ২০০৮, ২০১৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এবং ১৯৭৯, ১৯৯১, ১৯৯৬ (১৫ই ফেব্রুয়ারি), ২০০১ সালে বিএনপি প্রার্থী জয়লাভ করেছে।

এছাড়াও ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টি ও ১৯৮৮ সালে জাসদ (সিরাজ) জয় লাভ করে। মুলত এ আসনটিতে আওয়ামী লীগ বিএনপি সমান সমান। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতীক পাওয়ার পর থেকে পুরোদমে গনসংযোগ ও ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ভোট প্রার্থনা করছেন। বিএনপির চেয়ে প্রচারনায় এগিয়ে রয়েছে আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাওয়া তানভীর হাসান ছোট মনির দলীয় নেতা কর্মীদের সাথে নিয়ে রাত দিন প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন। মোট কথা এ আসনটিতে প্রচারনার দিক থেকে চালকের আসনে রয়েছেন ছোট মনির। ইতিমধ্যেই তিনি ইউনিয়ন থেকে শুরু করে প্রতিটি ওয়ার্ডে নির্বাচনী অফিস স্থাপন ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করেছেন।

প্রতিটি ওয়ার্ডে কর্মী সভা করে নেতা কর্মীদের উজ্জীবিত করে রেখেছেন। সম্প্রতি ভূঞাপুর ও গোপালপুরে দুটি বর্ধিত সভার ব্যানারে বড় দুটি জনসভাও সেড়ে ফেলেছে তিনি। যাতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাংগঠনিক সম্পাদক উর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থেকে ছোট মনিরের পক্ষে ভোট প্রার্থনা করেন। দলীয় মনোনয়নকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের ভিতরে যে তিক্ততার সৃষ্টি হয়েছিল তা অনেকটাই কেটে গেছে। মান অভিমান ভুলে সবাই দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করতে পুরোদমে প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী কেন্দ্রীয় যুব দলের সাধারন সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু জেলে থাকায় অনেকটা মন্থর গতিতে চলছে তার প্রচারণা। টুকুর পক্ষে প্রচারনায় নেমেছেন বড় ভাই জেলা বিএনপির সভাপতি শামছুল আলম তোফা ও স্ত্রী সায়মা পারভীন। তবে এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোন সভা সমাবেশ করতে পারেনি তারা। খন্ড খন্ডভাবে দলীয় নেতা কর্মীরা প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছে। কেন্দ্র কমিটি দূরের কথা উপজেলায় মূল নির্বাচনী কমিটিই করতে পারেনি দলটি। মোট কথা এখনো অগোছালোই রয়ে গেছে তারা। তবে টুকু পত্মী প্রচারণায় আসায় নেতা কর্মীদের মাঝে অনেকটা প্রাণ ফিরে এসেছে। তবে দলীয় যে অভ্যন্তরিণ কোন্দল রয়েছে তা এখনো পুরোপুরি নিরসন হয়নি।

সাবেক পৌর মেয়র ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল খালেক মন্ডলের অনুসারি লোকজনদের মাঠে দেখা যাচ্ছে না। ফলে অনেকটা হতাশায় নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে দলীয় নেতা কর্মীরা। আবার অনেক নেতা কর্মীদের অজানা ভয়েও মাঠে দেখা যাচ্ছেনা। তবে সামনে যে কটা দিন আছে তাতে কতটুকু সফল হতে পারবে তাই দেখার বিষয়।

নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে ভূঞাপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা বলেন, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু কারাগারে থাকায় ওনার স্ত্রীকে নিয়ে আমরা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে কেন্দ্র কমিটি গঠনের কাজ শুরু হয়েছে। প্রচারণায় আমরা ভোটারদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ দেখতে পেয়েছি। আশা করি সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ধানের শীষ বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে।

আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তানভীর হাসান ছোট মনির বলেন, আমি সামান্য একজন কর্মী হিসেবে জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে নৌকার যে দায়িত্ব দিয়েছেন আমি এর সম্মান রক্ষার জন্য নেতা কর্মীদের সাথে নিয়ে পুরোদমে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। মানুষের মাঝে যে সাড়া দেখা গেছে তাতে নৌকার বিজয় সুনিশ্চত। আমি বিজয়ী হলে একবছরের মধ্যে ভূঞাপুরে গ্যাস সংযোগ, এলাকার সন্ত্রাস ও মাদক নির্মূল করবো। এছাড়াও এ আসনটি যমুনার তীরবর্তী হওয়ায় ভাঙন ঠেকাতে স্থায়ী বাঁধের ব্যবস্থা করবো এবং বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবো।