লামায় ডেসটিনির গাছ কেটে উজাড়

চকরিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৬:১৩ এএম, বৃহস্পতিবার, ১৫ নভেম্বর ২০১৮ | ৪৭২
পার্বত্য বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী এলাকায় ডেসটিনি লি:এর ট্রি প্লান্টেশন প্রকল্পের ১২৫ একর জমির বাগানের গাছ কেটে উজাড় করার অভিযোগ উঠেছে এলাকার প্রভাবশালী অসাধু রাজনৈতিক এক সিন্ডিকেটের উপর।
 
এতে কোম্পানীর ক্ষতি আনুমানিক ৭০ লক্ষ টাকার মত। এ ব্যাপারে আদালতে মামলা রয়েছে। যার মামলা নং- ১৬/১৬ইং।
 
সরজমিনে দেখা যায়, ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশনের ১২৫ একর প্রকল্পের রোপিত বনায়নের গাছগুলি কেটে উজাড় করতে চলছে প্রভাবশালী এক সিন্ডিকেট।
 
এ বিষয়ে কাটুরিয়ারা জানিয়েছেন, আমরা দৈনিক বেতনের মাধ্যমে এখানে গাছ কাটতে এসেছি। আমরা এ বিষয়ে কিছু জানি না। আমাদের যারা গাছ কাটার জন্য পাঠিয়েছেন তাদের সাথে কথা বলেন।
 
জানা যায়, লামা উপজেলার ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার এবং ইউপি আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। বিভিন্ন মামলার আসামী উলা মিয়ার পুত্র কুতুব উদ্দিন (এম.ইউ.পি), চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউপির ৯নং ওয়ার্ডের রংমহল গ্রামের রশিদ আহমদ (রইস্সা মেম্বার) এর পুত্র মোঃ শাহ আলম, একই ইউপির ৫নং ওয়ার্ডের বালুরচর গ্রামের প্রভাবশালী নাগু মিয়ার পুত্র মোঃ এমরান, একই ইউপির ৬নং ওয়ার্ডের বৈরাগীরখিল গ্রামের বনখেকো নাজেম উদ্দিন ও রমজান আলী কাটুরিয়ারাদের দৈনকি বেতনে গাছ কাটার জন্য নির্দেশ দেন।
 
এ বিষয়ে গাছ ব্যবসায়ীরা জানান, গাছগুলি নাম্বার বিহীন ৩টি ডাম্পার গাড়িতে করে শাহ সুজা রোডদিয়ে এনে ডুলাহাজারা বাজারে আসলাম চৌধুরীর স’মিলে জমায়েত করে তাহা বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করেন তারা।
 
জানতে চাইলে নাজেম উদ্দিন জানান, কাটুরিয়ারা যে বাগান কাটছে এ বাগানটির মালিক আমি। সুতরাং আমার বাগানের গাছ কাটার বিষয়ে কেউ হস্তক্ষেপ করলে আমি প্রতিরোধ করব। তাছাড়া গাছ কাটার বিষয়ে ঐ এলাকার মেম্বার কুতুবকে দায়িত্ব দিয়েছি।
 
এ বিষয়ে সাবেক বাগানের মালিক বান্দরবান এলাকার বাসিন্দা মাহবুবুর রহমান মাহবুব বলেন, আমি সরকার থেকে লিচ নেওয়া ১২৫ একর জমিসহ ডুলাহাজারার বিভিন্ন লোকজন থেকে নেওয়া ২৫ একর জমি মিলিয়ে মোট ১৫০ একর জমি ডেসটিনি কোম্পানীকে বিক্রি করে দিয়েছি। এতে নাজেম নামের কোন ব্যক্তির মালিকানা নেই, ছিল না। সে অবৈধভাবে জমি দখল কিংবা গাছ কাটছে বলে জেনেছি।
 
জানতে চাইলে ডেসটিনি লিঃ এর প্রকল্প তত্বাবধায়ক কর্মকর্তা মোঃ মোশাররফ হোসেন মুঠোফোনে বলেন, লামা ফাঁসিয়াখালীর কালা পাড়া এলাকায় আমাদের কোম্পানীর ১৫০ একরের মত একটি বনায়ন প্রকল্প রয়েছে। এ প্রকল্পের গাছ রোপন করার পরে লোভের বশবতী হয়ে অত্র এলাকার কিছু ব্যক্তি তাদের জায়গা আছে বলে দাবী করে ২০১৪ সালে বাগানটি অবৈধভাবে কেটে ফেলে। কিন্তু কোম্পানী বাগানের এ জায়গাটি বান্দরবানের মাহবুব নামের ব্যক্তি থেকে ক্রয় করেছিল।
 
ফলে দাবীদারদের জন্য বিশেষ দায়রা জজ আদালত- ৫, ঢাকাতে কোম্পানী মামলা রুজু করেন, যার মামলা নং- ১৬/১৬ইং। বিজ্ঞ আদালত বিচারাধীন এই মামলাটি শেষ না হওয়া পর্যন্ত ঐ বাগানের রক্ষনাবেক্ষন ও হেফাজতের দায়িত্ব নিলেন আদালত। বর্তমানে মামলাটি সুনানীর পথে রয়েছে।
 
তিনি আরো বলেন, হঠাৎ গত ১০ই নভেম্বর বাগানের কেয়ারটেকারের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী অসাধু রাজনৈতিক নেতাসহ ব্যবসায়ীরা কাটুরিয়ার মাধ্যমে বাগানের সংরক্ষিত গাছগুলি কেটে উজাড় করতে চলছে। বিষয়টি আমরা বিচারাধিন আদালতে পিটিশনের মাধ্যমে জরুরী ভিত্তিতে জানাবো।