আমি এখন কাকে মা ও ভাই বলে ডাকবো

আমিরুল ইসলাম, পঞ্চগড় প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৮:২২ পিএম, সোমবার, ২৯ অক্টোবর ২০১৮ | ৬০৮
ফুটফুটে ছোট মেয়েটির নাম নার্গিস আক্তার মা ও আদরের একমাত্র ছোট ভাইকে হারিয়ে কাঁদতে কাঁদতে অজ্ঞান হচ্ছে। চার ভাই বোনদের মধ্যে তার ছোট ভাই ইয়াছিস ছিল ছোট।
 
একমাত্র ছোট ছেলেকে নিয়ে বড় মেয়ের ওষুধ কিনতে গিয়ে ছিল উপজেলার জোতহাসনা গ্রামের লাভলী বেগম (৩৫),পঞ্চগড় থেকে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয়ে লাভলী বেগম ঘটনা স্থলে নিহত হন। এবং ছেলে ইয়াসিন (৭) পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নেয়ার পর নিহত হয়।
 
স্বামীর অসুস্থতার কারণে পরিবারের সকল কাজ প্রায় লাভলী আক্তারকে করতে হতো । তিনি মারা যাওয়ায় তিন মেয়ে এবং অসুস্থ স্বামী এখন পাগলের মতো।
 
শুক্রবার পৌনে রাত আটটার দিকে বাংলাবান্ধা – পঞ্চগড় জাতীয় মহাসড়কের দশমাইল এলাকায় ভয়াবহ সড়ক দূর্ঘটনা ঘটে। ১১জন নিহতের মধ্যে মা ও শিশু মারা যায়।
 
শনিবার সকালে নিহতদের নিজ নিজ এলাকায় দাফন সম্পন্ন হয়। শুক্রবার গভীর রাতে পঞ্চগড়ের দশমাইল বাজারে এই দূর্ঘটনা ঘটে। লাভলী আক্তারের তিন মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে তার পরিবার। বড় মেয়ে সেলিনা (১৫) সে এবার জে এস সি পরীক্ষাথী,সারজিনা (১০) ৫ম শ্রেণীতে, ছোট মেয়ে নার্গিস (৮) ১ম শ্রেণী ও শিশু ইয়াসিন (৭) নুরানী মাদ্রাসায় পড়তো। মা ও ভাইয়ের মৃত্যু তিন বোন মেনে নিতে পারছে না। বড় মেয়ে সেলিলা বলেন “আমার মা ও ভাইকে যে ট্রাকের চালক মারছে তার বিচার ও দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি চাই “। কোনমতেই থামছে না তাদের কান্না। নিহত হওয়ার পর লাভলী আক্তারের বাড়িতে গেলে তার তিন মেয়ে,স্বামী সহ তার নিকট আত্মীয়,প্রতিবেশীদের কান্নার আহাজারীতে শোকের ছায়া নেমে গেছে পুরো এলাকায়। ছোট মেয়ে নার্গিস বার বার তার মা ও ভাইয়ের লাশ পাশে গিয়ে কান্না করে আর বলে আমার মা ও ভাইয়ে ফিরিয়ে দাও তোমরা, তাদের নিয়ে যেও না আমার মা আমার জন্য খাবার আনতে চাইছে আমাকে বলে গেছে আমার মা। এমন কথা বলতে বলতে বার বার অজ্ঞান হয়ে পড়ে সে।