২৪ অক্টোবর উদ্বোধন হচ্ছে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট


আগামী ২৪ অক্টোবর উদ্বোধন হতে যাচ্ছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পুড়ে যাওয়া রোগীদের চিকিৎসাকেন্দ্র শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট।
ওইদিন সকাল ১০টায় এই ইনস্টিটিউটের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইনস্টিটিউটটির সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বাংলাদেশে পুড়ে যাওয়া রোগীদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে সবচেয়ে নির্ভরতার নাম ডা. সামন্ত লাল সেন। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অপরিসর বার্ন ইউনিটে চাকরি জীবনের শুরু তার। দীর্ঘ কর্মজীবনে দেখেছেন পুড়ে যাওয়া রোগীদের বাঁচার আর্তনাদ ও ক্ষতের বীভৎসতা। তাদের চিকিৎসার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন ডা. সেনসহ অন্য চিকিৎসকরা। কিন্তু, স্থান সংকুলান না হওয়ায় এবং পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও চিকিৎসা উপকরণ না থাকায় সবাইকে সমভাবে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। এত প্রতিকূলতার মধ্যেও চিকিৎসাজীবনের শুরু থেকেই তিনি স্বপ্ন দেখতেন একদিন বাংলাদেশেও পুড়ে যাওয়া রোগীদের বিশ্বমানের সেবা দেওয়া সম্ভব হবে। প্রবীণ বয়সে এসে তার সেই স্বপ্ন পূরণ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ভেতরেই গড়ে উঠছে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারির অত্যাধুনিক চিকিৎসাসেবাসম্পন্ন ১৭ তলা ইনস্টিটিউট। কৃতজ্ঞচিত্তে ঢামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই ইনস্টিটিউটের নামকরণও করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে।
ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন,‘আমি আমার চাকরি জীবন শুরু করেছিলাম বার্ন ইউনিটের মাত্র পাঁচটি শয্যা দিয়ে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে। এখন সেই বার্ন ইউনিট একটি পূর্ণাঙ্গ ইনস্টিটিউট হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে। পুরো বিষয়টা ভাবতে গেলে স্বপ্নের মতো লাগে।’
৯শ’ ১২ কোটি টাকা বাজেটে গড়া স্বপ্নের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট এখন নির্মাণের শেষ পর্যায়ে। তবে এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হবে সব যন্ত্রপাতি আনা সাপেক্ষে ৬ মাস পর।
শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট নির্মাণ সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ৬ লাখ ৬২ হাজার স্কয়ার ফুট আয়তনের এই ইনস্টিটিউটটি বার্ন এবং প্লাস্টিক সার্জারি এই দুই ইউনিটে বিভক্ত। এর একেকটা ফ্লোরের আয়তন ৩৬ হাজার স্কয়ার ফুট। ১৬টি লিফট ও পাঁচটি সিঁড়ি থাকছে এই ১৭ তলা ভবনে। ২৪টি ডাবল বেডের কেবিন এবং ২৮টি সিঙ্গেল বেডের কেবিনের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে এই ইনস্টিটিউটে। শয্যা সংখ্যা ৫শ’টি। এই ইনস্টিটিউটে একসঙ্গে ১০ জন রোগীর অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা থাকবে। আর দূরের রোগীদের সরাসরি ইনস্টিটিউটে আসার সুবিধার জন্য ছাদে থাকবে হেলিপ্যাডও।
এই ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন আরও বলেন, বার্ন চিকিৎসার ক্ষেত্রে এটিকে বিশ্বের একটি শ্রেষ্ঠ হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত করতে চাই। এখান থেকে রোগীদের জন্য সেরা সেবা দিতে চাই। মানুষের কাজে লাগবে এই হাসপাতালটি এটা ভাবতেই ভালো লাগে।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের পরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী অক্টোবর মাসে এটির উদ্বোধন করবেন কিন্তু পুরোপুরি চালু হতে আরও ছয়মাস সময় লাগবে। এরমধ্যে আমাদের সব যন্ত্রপাতি চলে আসবে।
বর্তমানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে এই ইনস্টিটিউট তৈরির কাজ চলছে। ২০১৬ সালের এপ্রিলে এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ২৯ জুন থেকে নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
সূত্রঃ অদ্বিতীয় বাংলা