নন্দীগ্রামে উজানের ঢলে ২০টি গ্রাম প্লাবিত : ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি


বগুড়ার নন্দীগ্রামে নাগর নদীর উজানের ঢলে উপজেলার ভাটরা ও থালতা মাঝগ্রাম ২টি ইউনিয়নের ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। মানুষের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। বাড়ীর গৃহকর্তৃরা বাহিরে বের হতে পারছেনা।
ফলে খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও গো খাদ্যর চরম সংকটে পড়েছে পানি বন্দী মানুষ। এতে করে তাদের জনজীবনে চরম দূর্ভোগ নেমে এসেছে। গত ১ সপ্তাহ থেকে অবিরাম বৃষ্টিপাতে উজানের ঢলে এ সমস্যায় পড়তে হয়েছে তাদের। উপজেলায় প্রচন্ড বৃষ্টিপাতে রাস্তা-ঘাট গুলো নাগরিকদের চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
মাঠ গুলো পানিতে থৈ-থৈ করছে। সদ্য রোপনকৃত আমন আবাদি জমি গুলো তলিয়ে গেছে। অধিকাংশ কৃষক জমি রোপন করতে পারেনি। এখন তাদের চারা গুলো পানিতে পঁচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে করে তাদের জমিগুলো অনাবাদী থেকে যাওয়ার সম্ভাবনার সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় শতাধিক পুকুর-পুস্কনি ডুবে গিয়ে মাছ গুলো বের হয়ে গেছে। যার ফলে কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়ে মৎস্য চাষীরা হতাশায় ভুগছে।
প্রচন্ড বৃষ্টিপাতের কারণে আবাদি ফসল, পুকুরের মাছ, বাড়ী-ঘর ব্যাপক ভাবে ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। গৃহপালিত পশুগুলো ভাইরাস জনিত রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ফলে উপজেলার ২টি ইউনিয়নের ২০টি গ্রামের প্রায় ৫ কোটি টাকার ক্ষতি সাধন হয়েছে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে। বাড়ী-ঘর পানিতে ডুবে যাওয়ায় বাড়ী-ঘর গুলো ধ্বসে যাওয়ার ঝুকিতে রয়েছে।
যেকোনো সময় দেয়াল ধ্বসে ও টিনের ছাওনি ঘর গুলো ভেঙ্গে পড়ে প্রাণ হানির আশংকা রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি উঠায় ছাত্র/ছাত্রীরা পড়াশোনা করতে পারছেনা। প্লাবিত গ্রাম গুলো হলো, ৩নং ভাটরা ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর, উমাপতি দিঘি, নাগরকান্দি, পার নাগরকান্দি, কালিয়া গাড়ী, চাতরাগাড়ী, দমদমা।
৪নং থালতা মাঝগ্রাম ইউনিয়নের পারশুন, গুলিয়া, কৃষ্ণপুর সহ ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। দমদমা গ্রামের নাসরিন বেগম জানান, তিনদিন হলে পানি বন্দী হয়ে পড়েছি। অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটছে। এখনও কেউ খোঁজ নিতে আসেনি। একই গ্রামের মোয়াজ্জিন হোসেন জানান, ঘর বাড়ি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কাজ করতে না পেরে না খেয়ে অতি কষ্টে দিন কাটছে।
৪নং থালতা মাঝগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন জানান, কিছু গ্রাম উজানের ঢলে প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও কিছু পুকুর ডুবে গেছে ও রাস্তা ঘাটের উপর পানি উঠে স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যহত হচ্ছে। অতিসত্ত¡র এ দূর্যোগ মোকাবেলা করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জোরদাবী জানিয়েছেন পানিবন্দী মানুষেরা।