ধনবাড়ী শশুরালয় থেকে লাশ হয়ে ফিরলো মধুপুরের হাফিজুর


টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীর নরিল্যা এলাকায় শশুরালয় থেকে লাশ হয়ে ফিরলো মধুপুরের হাফিজুর রহমান (২৮) নামের এক যুবক। ধনবাড়ী থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য টাঙ্গাইল মর্গে প্রেরণ করেছে।
মামলার বিবরণ ও নিহত হাফিজুরের স্ত্রী মোছা: ভাবনা(১৮) জানায়, তার সাথে পাশ্ববর্তী মধুপুর উপজেলার গোলাবাড়ী ইউনিয়নের চাকন্ডতকী পুর গ্রামের মৃত নূরুল ইসলামের ছেলে হাফিজুর রহমানের সাথে প্রায় ৭ থেকে ৮ মাস আগে প্রেমর সর্ম্পক করে বিয়ে করেন তারা।
বিয়ের পর সুখেই চলছিলো তাদের সংসার । আমার স্বামী আগে মধুপুর শহরে ভাড়ায় মাইক্রোবাস চলাত এখন ঢাকায় মাইক্রোবাস চালায়। গত বৃহস্পতিবার দিন ঢাকা থেকে বাড়ী এসেছে। পরে শুক্রবার দুপুরে আমাকে আমাদের বাড়ীতে আমাকে নিতে আসে। এর আগে আমার স্বামী বরিশালের একটি মেয়েকে বিয়ে করেছে। একথা আমি জানতে পেরে আমি আমার স্বামীর সাথে ঢাকা তার বাসায় যেতে চাইনি। এনিয়ে একপর্যায়ে কথাকাটাকাটি হয়।
আমি আমার স্বামীকে আমাদের বাড়ীর থাকার রুমে রেখে ছাগল খোঁজার জন্য বাড়ীর পাশে যাই। ছাগল নিয়ে বাড়ী এসে দেখি রুমের দরজা আটকানো। ডাকাডাকি করার পর কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে আশেপাশের লোকজন নিয়ে কুড়াল দিয়ে দরজা ভেঙ্গে ভিতরে আমাদের আড়া(ধর্ণা)’র সাথে আমার পরিহিত সবুজ রংঙের উড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে ঝুলে আছে।
এ ঘটনার সংবাদ পেয়ে ধনবাড়ী থানা পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ধনবাড়ী থানায় নিয়ে আসে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছে।
নিহত হাফিজুরের ছোট ভাই মধুপুরের বানরগাছি গন উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র আতিকুল ইসলাম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন,আমার ভাই নিজে আত্মহত্যা করতে পারে না তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমি আমার ভাই হত্যার সঠিক বিচার চাই।
নিহত হাফিজুরের রহমানের চাচা আবু সাঈদ সহ নিহতের আরো স্বজনরা জানান, হাফিজুরের শাশুড়ী শুক্রবার সকালে দাওয়াত করে মেয়ে সহ জামাই হাফিজুর কে বাড়ীতে নিয়ে যায়। তাদের বাড়ীতে নেওয়ার পর শুক্রবার দুপরে হাফিজুর কে মেরে ফাঁসিতে ঝুঁলানো হয়েছে। হাফিজুর নিজে আত্মহত্যা করেনি। আমরা এই হত্যার সঠিক বিচার দাবী করছি।
গোলাবাড়ী ইউনিয়নের ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার আমিনা বেগম জানান, হাফিজুর ছেলে হিসেবে খুবি ভাল ছিলো কোন প্রকার নেশা করনি। ছেলেটি বৃহস্পতিবার তার নিজ বাড়ীতে আসলে হাফিজুরের বাড়ীতে তার স্ত্রী ভাবনা সহ রাত যাপন করার পর শুক্রবার সকালে হাফিজুরের শাশুড়ী খবর দিয়ে নিয়ে গেছে। তার পর আমি বিকেলে সংবাদ পেয়েছি হাফিজুর মারা গেছে এখন থানায় লাশ দেখতে এসেছি। তবে তিনি এই মৃত্যুর ঘটনার পিছনে অন্য কোন রহস্য থাকতে পারে বলে ধারনা করে বলেন আমরা এঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে সঠিক বিচার দাবী করছি।
এব্যাপারে ধনবাড়ী থানার এসআই শাজাহান জানান, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়না তদন্তের পর হত্যা নাকি আত্মহত্যা আসল রহস্য জানা যাবে।