কর্মসূচি অব্যাহত রাখা জরুরি

প্রভাব পড়ছে চালের বাজারে

আলোকিত প্রজন্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:৪৩ পিএম, বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | ১৩৯৬

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তিন মন্ত্রীর বৈঠক, অবৈধ মজুদদারদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের অভিযান ও জেলা-উপজেলা-মহানগরীতে খোলাবাজারে সরকারি চাল বিক্রির প্রভাব পড়েছে দেশের চালের বাজারে। কমতে শুরু করেছে সব ধরনের চালের দাম।

এই ধারা অব্যাহত থাকলে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরবে বলে আশা করা যায়। দেশে দুই দফায় বন্যা ও ধানের ব্লাস্ট রোগের কারণে এবার উৎপাদন কম হয়। সরকারের মজুদ কমে যাওয়ার প্রভাবও পড়ে বাজারে, বেড়ে যায় চালের দাম।
 
মোটা চালের দামও সাধারণ ক্রেতাদের আয়ত্তের বাইরে চলে যায়। চাপে পড়ে নিম্ন আয়ের মানুষ। এ অবস্থায় চালের আমদানি শুল্ক কমিয়ে আনার পরও বাজারে তার কোনো প্রভাব পড়েনি। বরং চালের বাজার অস্থির হয়ে ওঠে।
 
প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুরু হয় অভিযান। দেশের বড় বড় চালের মোকামে অভিযান চালানো হয়। অনেক মিল মালিককে জরিমানাও করা হয়। বাজারে স্বস্তি ফেরাতে শুরু করা হয় খোলাবাজারে চাল বিক্রি কর্মসূচি।
 
প্রথমে মহানগরী, এরপর জেলা ও উপজেলায় এই কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। অন্যদিকে বাজার সহনীয় পর্যায়ে আনতে সচিবালয়ে চাল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন সরকারের তিন মন্ত্রী।
 
চাল আমদানিতে ব্যবসায়ীদের সব বাধা দূর করার প্রতিশ্রুতি দেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। আগামী তিন মাস চটের বস্তার পরিবর্তে প্লাস্টিকের বস্তা ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের রোহনপুর থেকে রেলওয়ে কার্গোতে চাল পরিবহনের ব্যবস্থা করার দাবি পূরণের আশ্বাসও দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

 

শুরুতেই যখন বাজারে চালের দাম বাড়ছিল, তখনই ব্যবস্থা নিলে আজকের পরিস্থিতির উদ্ভব হতো না বলে অনেকের ধারণা। সরকার নিজের মজুদ হিসাব করে চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে সামঞ্জস্য রাখতে পারলে কারসাজি করার সুযোগ ব্যবসায়ীদের থাকত না।

সরকারের মজুদ বাড়ালে ও আরো আগে বিকল্প বিপণনব্যবস্থা চালু করা গেলে বাজারে তার প্রভাব পড়ত। ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিলেও নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষের মধ্যে তার প্রভাব পড়ত না। আমদানি শুল্ক কমানোর ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।

শুরুতেই আমদানি শুল্ক নিম্নহারে নির্ধারণ করা হলে ব্যবসায়ীরা আরো আগে চাল আমদানিতে উৎসাহিত হতেন। তাতে বাজারে চাপ বাড়ত না। বাস্তবভিত্তিক ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেওয়া গেলে চালের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টির সুযোগ থাকত না।

কথিত সিন্ডিকেটও সক্রিয় হওয়ার সুযোগ পেত না। একই সঙ্গে বলতে হবে বাজারে নজদারির বিষয়টি। এই অভিযান আরো আগেই শুরু করা যেত। সার্বক্ষণিক বাজার মনিটরিং চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করত।

দেরিতে হলেও অবৈধ মজুদদারদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। একই সঙ্গে ওএমএস কর্মসূচি ছড়িয়ে দিতে হবে দেশের সর্বত্র। বাড়াতে হবে ট্রাকের সংখ্যা। তাহলে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। চাপমুক্ত থাকবে সাধারণ মানুষ।