কালিহাতীতে বেতের পাটি দিয়ে তৈরী কুটির শিল্প


টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে বেতের পাটি দিয়েই শিল্পীরা তাদের শৈল্পিক মনোভাব কাজে লাগিয়ে তৈরী করছেন বিভিন্ন কুটির শিল্প। এ শিল্পের সামগ্রীগুলো মন ছুঁয়ে গেছে সবার ।
কুটির শিল্পের মধ্যে বানানো হচ্ছে ল্যাপটব ব্যাগ (ডায়মন্ড), ছেলেদের অফিস ব্যাগ, মেয়েদের বড় গোহা ব্যাগ, লেডিস বড় ডি ব্যাগ, লেডিস কোবরা ব্যাগ, লেডিস আপেল ব্যাগ, বড় টব ব্যাগ, ছোট পিয়ালী ব্যাগ, চিকন-মোটা মার্কেটিং ব্যাগ, বাঙ্গালী লেডিস ব্যাগ, দিনহা পার্স, ছেলেদের মানিব্যাগ, বেল্ট, ছেলে ও মেয়েদের বিভিন্ন ডিজাইনের জুতোসহ নানারকম সামগ্রী।
শিল্পীরা মনের মাধুর্য্য মিশিয়ে তৈরী করছেন চোখ ধাঁধানো এসব সামগ্রী। এই ভিন্নধর্মী কুটির শিল্প তৈরী করার উদ্যোগ গ্রহন করেছেন, উপজেলার সিলিমপুর চাটিপাড়া গ্রামের অনিল চন্দ্র দে’র ছেলে স্বপন কুমার দে। তার সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি ২০১৪ সালে এ বিষয়টি মাথায় আনেন এবং পাটি তৈরীর পাশাপাশি কুটির শিল্পের সামগ্রীগুলো তৈরী করে ব্যাপক সাড়া পান। বর্তমানে তিনি এবং তার পরিবারের লোকজন দিয়ে এসব সামগ্রী তৈরী করছেন।
বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় থেকে অর্ডার নিয়ে আসেন। সময়মতো ডেলিভারী দিতে পারছেন তাই কাজের চাহিদা বেড়েই চলছে। সামগ্রীগুলো সবার মনে জায়গা করে নিয়েছে। তিনি আরোও বলেন, এ সামগ্রী তৈরী করতে সোল্ট, রেক্সিং , চেইন, কাপড়, সুতা সহ বেশকিছু উপাদান লাগে। যা বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়। সঠিক দাম না জানায় উপাদানগুলো তাকে চড়া দামে কিনতে হচ্ছে। তবুও সব খরচ বাদ দিয়ে প্রতি পিস জিনিসে ৩০/৪০ টাকা থাকে।
গড়ে একলক্ষ টাকায় বিশ হাজার টাকা লাভ থাকে। এ পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গা থেকে পাওয়া ৫/৬ টি অর্ডারের কাজ করেছি। আরোও অর্ডার আসছে। তিনি বলেন, আমি কোন রাজনীতি করিনা কিন্তু দেশকে ভালোবাসি।
পাটি শিল্পকে আরোও জাগিয়ে তুলতে আমি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের সেই ঐতিহাসিক ভাষণের চিত্রটি পাটির মধ্যে তুলে ধরার কাজ শুরু করেছি। শুধু হাতের কারুকাজ দিয়েই এ কাজটি সম্পন্ন করবো। স্বপন দে’র এ কাজ দেখে উপজেলার বিভিন্ন জায়গার পাটি শিল্পীদের মনে উৎসাহের সৃষ্টি হচ্ছে। অনেকে কাজ ও শুরু করে দিয়েছেন ।
কালিহাতী উপজেলা পাটি শিল্প সমিতির সভাপতি দিনেশ চন্দ্র দত্ত ও সাধারন সম্পাদক হরে কৃষ্ণ পালের সাথে কথা বলে জানা যায়, সরকারী ভাবে সহজ শর্তে ব্যাংক লোনের মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহ করতে পারলেই এ পাটি শিল্প ও পাটি দিয়ে কুটির শিল্প সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করবে। শুধু দেশেই নয় দেশের বাইরে ও এর ব্যাপক চাহিদা থাকবে এবং অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে। স্বপনের পাশাপাশি আরোও অনেক পাটিশিল্পীদের এ কাজের প্রতি আগ্রহ জন্ম নিবে এবং ছেলে মেয়েদের লেখা পড়াসহ সংসারের সকল চাহিদা মিটিয়ে সুন্দরভাবে বাচঁতে পারবে।