কালিহাতীতে রমজান মাসে মুড়ি ভাজতে ব্যস্ত মুড়ি শ্রমিকরা

শুভ্র মজুমদার, কালিহাতী (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০১:৫০ পিএম, মঙ্গলবার, ৫ জুন ২০১৮ | ৫১৭

পবিত্র রমজান মাসে মুড়ির চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি। তাই রমজান মাসকে ঘিরে মুড়ি ভাজতে ব্যস্ত সময় পার করছেন টাঙ্গাইলের কালিহাতীর মুড়ি শ্রমিকরা। এদের মধ্যে নারী মুড়ি শ্রমিকের ভূমিকা সবচেয়ে বেশী।

উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামে চাল শুকানো আর মুড়ি ভাজতেই দিনরাত পার করছেন তারা। দম ফেলার সময় নেই তাদের। হাতে মুড়ি ভাজার কাজে ব্যস্ত থাকলেও তাদের মধ্যে হতাশাও দেখা গেছে। দ্রব্য মূল্যের উর্দ্ধগতির কারনে প্রতিযোগীতায় টিকে থাকতে পারছেনা তারা মেশিনে ভাজা মুড়ির জন্য।

উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়নের মুড়ি ভাজার কারিগররা এ পেশা ছেড়ে দিয়ে বেছে নিচ্ছে অন্য পেশা। কালিহাতী উপজেলার নারান্দিয়া, মাইস্তা, দৌলতপুর, বর্তা, লুহুরিয়া গ্রামে তাদের বসবাস। এ গ্রামগুলোতে প্রায় ৫ থেকে ৬ শতাধিক পরিবার এ পেশা থেকে জীবিকা নির্বাহ করে হাতে মুড়ি ভেজে। মুড়ি ভাজার প্রায় সকল কাজই করে নারীরা। এ গ্রামগুলোতে প্রতিদিন প্রায় তিনশো মণ মুড়ি ভাজা হয়। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিদিন ভোর থেকে গৃহীনিরা মুড়ি ভাজার কাজ শুরু করেন। অনেকে চালুন দিয়ে মুড়ির বালু ছাড়াচ্ছে, কেউ বস্তায় ভরছে। আবার অনেক বাড়িতে এ সব কাজ একজনেই করছে। পুরুষরা মুড়ি বাজারজাত করছেন বিভিন্ন পিকআপ ও ভ্যান যোগে। তারা দেশের বিভিন্নস্থানে মুড়ি সরবরাহ করে থাকেন।

দৌলতপুর গ্রামের জীতেন মোদক জানান, বংশগত থেকেই আমরা এ পেশার সাথে জড়িত আছি। হাতে মুড়ি ভেজে বাজারে বিক্রি করে সংসারের সকল চাহিদা পূরণ করে থাকি। স্বপন কুমার মোদক জানান, রমজান মাসের ২০-২৫ দিন আগে থেকে ধান সংগ্রহ করতে হয়।

রমজানের ১-২ দিন আগে থেকেই মুড়ি ভাজার কাজ শুরু করতে হয়। এ মুড়ি প্রতিমণ ৩২০০ টাকায় বাজারে বিক্রি করছি। দৌলতপুর গ্রামের লক্ষী রানী মোদক জানান, মুড়ি ভাজার কাজটি খুব কষ্টদায়ক।

রাত ৩ টা থেকে শুরু করে সকাল ৮ টা পর্যন্ত মুড়ি ভাজি। কিন্তু খড়ি ও লবনের দাম অনেক বেড়ে গেছে। মুড়ি ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর জানান, আমি প্রতি বাড়ি বাড়ি গিয়ে মুড়ি কিনে ঢাকায় বিক্রি করি। হাতে ভাজা মুড়িতে কোন ঝামেলা নেই এবং এর চাহিদাও বেশি।

হাতে মুড়ি ভাজার অনেক কারিগররা জানান, সরকার আমাদের দিকে একটু সু-নজর দিলে এ ব্যবসা আরোও ভালোভাবে করতে পারবো।