বাগাতিপাড়া বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচি হয়নি

বাগাতিপাড়া (নাটোর) সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৪:২৬ পিএম, সোমবার, ১৪ মে ২০১৮ | ৮৯১

দুর্ণীতি মামলায় পাঁচ বছরের সাজা পেয়ে কারাগারে থাকা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তার চিকিৎসার দাবিতে থানা ও উপজেলা পর্যায়ে সোমবার বিক্ষোভ কর্মসুচির ঘোষনা থাকলেও নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলায় কোন কর্মসূচি হয়নি। নেতাদের দাবি থানা পুলিশের পক্ষ থেকে মানা-নিষেধ, আর থানা বিএনপির সভাপতি সহ বেশ কিছু নেতাকর্মী উপজেলার বাইরে থাকায় কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা সম্ভব হয়নি।

তবে বাগাতিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন দাবি করেন, ‘বিএনপি’র কোন নেতাকে আমরা প্রোগ্রাম করতে নিষেধ করিনি। তারা দলীয় কর্মসূচি পালন করবে কী না, তাদের ব্যাপার। কিন্তু জনগণের জানমালের ক্ষতি বা বিগ্ন সৃষ্টি করে যারাই কর্মসূচি করুক তাদের ব্যাপারে পুলিশতো হস্তক্ষেপ করবে, এটাই সাভাবিক।’ কিন্তু শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ কোনরুপ বাধা সৃষ্টি করবে না বলে জানান তিনি।

সূত্রে জানা যায়, নয়াপল্টনের দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও তার চিকিৎসার দাবিতে সোমবার ঢাকা মহানগরসহ দেশের সব মহানগর, জেলা, থানা ও উপজেলা সদরে বিক্ষোভ কর্মসুচি ঘোষনা করেছিলেন, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ঘোষিত ওই কর্মসুচি সারাদেশে বিভিন্ন স্থানে করা হলেও বাগাতিপাড়ায় তা করতে দেখা যায়নি। অভিযোগ উঠেছ্ েবিএনপি করে বাগাতিপাড়া উপজেলায় সবচেয়ে বেশী লাভবান হয়েছে থানা বিএনপির সভাপতি মোশাররফ হোসেন। তিনি প্রথমে সেক্রেটারী পরে সভাপতি হন।

বর্তমানে প্রায় একযুগের বেশী সময়ধরে বাগাতিপাড়া পৌরসভায় মেয়র হিসেবে আছেন। দলীয় সুবিধা ভোগ করলেও দলীয় কর্মসুচি পালনে তার অনিহা বলে দাবী করেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা। এমনকি বিএনপির ডাকা হরতালে তিনি ব্যাক্তিগত যানবাহন ব্যবহার করে স্থানীয় একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করেন, যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়। স্থানীয় এই নেতার এমন দলীয় কর্মসূচি পালনে গড়িমশিতে দলের সাধারণ নেতাকর্মীদের আগ্রহ হারাচ্ছে বলে মনে করেন প্রবীণনেতাকর্মীরা।

থানা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মোশারফ হোসেন দাবি করেন, ‘এই প্রোগ্রাম কেন, বাগাতিপাড়া থানায় দীর্ঘদিন যাবৎ কোন কর্মসূচি পালন করা হয় না। দলের স্থানীয় কর্মীরা প্রোগ্রাম করতে চাইলেও থানা বিএনপি’র সভাপতি মোশাররফ হোসেনের কারণে তা সম্ভব হয় না। তিনি প্রশাসনকে বলেন বিরোধীপক্ষ কর্মসূচি করতে চেষ্টা করছে সেটা বিএনপির কর্মসূচি না।’ এমনকি বিভিন্ন প্রোগ্রামের সময় পুলিশকে উস্কানি দেয়া ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি দেখানো হয় বলে জানান তিনি।

পৌর বিএনপির সভাপতি আমিরুল ইসলাম জামাল দাবি বলেন, ‘আমি পৌর বিএনপির নেতা হয়ে ইতিপূর্বে কেন্দ্র ঘোষিত বেশ কিছু কর্মসূচি করেছি। কিন্তু যখনই কর্মসূচি আসে তখনই বিভিন্ন দোহাই দিয়ে থানা বিএনপির সভাপতি এলাকার বাইরে থাকেন। আর পুলিশের হুমকি-ধামকি আমাকে সহ্য করেেত হয়। কিন্তু সুনাম কুড়ায় থানা বিএনপি।

বাগাতিপাড়া থানা বিএনপির সেক্রেটারী হাফিজুর রহমান দাবি করেন, ‘পুলিশ প্রশাসনের কাছে অনুমতি চেয়েও তারা অনুমতি দেয়নি। আমাদেরকে মানা-নিষেধ করা হচ্ছে প্রোগ্রাম করতে। আর থানা বিএনপির সভাপতি সহ বেশ কিছু নেতাকর্মী এলাকার বাইরে থাকায় কর্মসূচি করা সম্ভব হয়নি।’

বাগাতিপাড়া থানা বিএনপির সভাপতি ও বাগাতিপাড়া পৌরসভার মেয়র মোশাররফ হোসেন বিভিন্ন কর্মসূচির সময়ে ঢাকায় থাকেন এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভয়ভীতি থাকতেই পারে। আমি ঢাকায় আছি। আজকের প্রোগ্রামতো হওয়ার কথা। আমার শরীর খুব খারাপ, মাথা ব্যাথা করছে। আমি বেশী কথা বলতে পারছি না। ’

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, যারা কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি পালন করেনি তারা ব্যর্থ। বাগাতিপাড়া থানা বিএনপি কর্মসূচি পালনে অনিহার বিষয়টি তিনি পূর্বেও শুনেছেন বলে জানা জায়।