মির্জাপুরে কৃষক লীগের নেতার নেতৃত্বে সরকারি পুকুর ভরাট করছে প্রভাবশালীরা


টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা কৃষক লীগের নেতা ও মির্জাপুর কলেজের সাবেক ভিপি আবু সাইদ মিয়ার নেতৃত্বে প্রভাবশালীরা খাস খতিয়ানভুক্ত সরকারি পুকুর ভরাট করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
খবর পেয়ে গতকাল সোমবার সকালে মির্জাপুরের সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. আজগর হোসেন মাটি ভরাট কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে মির্জাপুর বাইপাস বাসস্টেশনের দক্ষিন পাশে বাওয়ার কুমারজানী মৌজায় ৩৮২ দাগে ৬.৫৬ একর এবং ৩৮৩ দাগে ৪.৬৫ একর জায়গা রয়েছে। এর মধ্যে ৩৮২ দাগে ১.৫৬ শতাংশ জমি ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক প্রশস্ত করণের জন্য অধিগ্রহণ করা হয়। এছাড়া আরও প্রায় ১.৫ একর ব্যাক্তি মালিকাধীন জমি রয়েছে। আর ৩৮৩ দাগে ৪.৬৫ একর জমির মধ্যে প্রায় ২ একর জমি ব্যাক্তি মালিকাধীন। অবশিষ্ট জমি সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত। যা বর্তমানে ওই পুকুরে রয়েছে। আর ব্যাক্তিমালিকাধীন জমিতে স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন।
সম্প্রতি ওই জায়গার উপর নজর পড়ে প্রভাবশালীদের। যাদের বাড়ি সরকারি ওই জায়গার পাশেই। তারা প্রায় এক মাস আগে পুকুরটি ভরাট শুরু করেন। খবর পেয়ে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. আজগর হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটি ভরাট কাজ বন্ধ করেন। কিন্তু গত বুধবার থেকে আবারও পুকুরটি ট্রাকযোগে মাটি এনে ভরাট শুরু করে তারা।
গত রোববার বিকেলে পুকুরের পাশে দাড়িয়ে দেখা যায় পুকুরে মাটি ফেলার দৃশ্য। বড় বড় ট্রাকে (ড্রাম ট্রাক) করে অন্যত্র থেকে মাটি এনে ফেলা হচ্ছে। সেখানে দাড়িয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন আবু সাঈদ মিয়া নামে এক প্রভাবশালী। তারা দিনে রাতে সমানতালে প্রতিদিন ৮টি ট্রাকযোগে কমপক্ষে ৮০-৯০ ট্রাক মাটি ফেলে পুকুরটি ভরছেন।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ওই পুকুরটিতে মাছ চাষ করছেন আশেপাশের লোকজন। যা দিয়ে মির্জাপুরে মাছের চাহিদা মেটানো হতো। কিন্তু পুকুর ভরাট করার ফলে মাছের চাহিদা ঘাটতি হবে বলে তারা অভিযোগ করেন।
উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ের সার্ভেয়ার মো. সাখওয়াত হোসেন বলেন, ৩৮২ দাগের মোট ৬.৫৬ একর জমির মধ্যে ১.৫৬ একর জমি মহাসড়ক নির্মাণের সময় সরকার অধিগ্রহণ করেছিল। আর কিছু জমি কয়েকজন লোক পত্তনমূলে ভোগ দখল করছেন। তবে আমার মতে পুরো জায়গাই সরকারি সম্পত্তি। আর ৩৮২ দাগের ৪.৬৫ একর জমির মধ্যে প্রায় ২ একর জমি ব্যাক্তি মালিকাধীন হিসেবে স্থানীয়রা দখলে আছেন। অবশিষ্ট জমি পুকুরের রয়েছে।
স্থানীয় কয়েকজন প্রায় এক মাস আগে পুকুর ভরাট করতে চেয়েছিলেন। সে সময় তাদের বাধা দেয়া হয়েছিল। আবার তারাই পুনরায় পুকুরের মাটি ফেলছে বলে খবর পেয়েছি।
এ ব্যাপারে আবু সাঈদ মিয়া জানান, তিনিসহ স্থানীয় ২৬ জন মিলে ৮৮ শতাংশ রেকর্ডিয় জায়গা কিনে সেখানে মাটি ফেলছেন বলে দাবি করেন।
উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. আজগর হোসেন জানান, মাটি ভরাটের খবর পেয়ে গতকাল তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
।