নন্দীগ্রামে দাদন ব্যবসায়ীদের বেড়া জালে বন্দী সাধারন মানুষ


বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলা ও পৌর শহরের সাধারন মানুষ দাদন ব্যবসায়ীদের বেড়া জালে বন্দী হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। দাদন ব্যবসায়ীদের কবজা থেকে বের হতে না পেরে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে তাদের জীবন। ফলে সব কিছু হারিয়ে নি:স্ব হচ্ছে সাধারন মানুষ। প্রাপ্ত তথ্যে জানাযায়, উপজেলা ও পৌর শহরের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের কিছু টাউট শ্রেনীর লোক অবৈধ ভাবে পুঁজি গড়ে তুলে দাদন ব্যবসা শুরু করেছে।
আবার অনেকে এনজিও ও সমিতি থেকে স্বল্প পরিমান সুদে ঋণ নিয়ে গ্রামের অসহায় মানুষদের কাছে সেটা বেশি লাভে দাদন দিচ্ছে। এক হাজার টাকা নিলে প্রতিমাসে দাদন ব্যবসায়ীকে ৩শ টাকা সুদ দিতে হয়। আবার কেউবা জমি, মেশিন, বসতবাড়ি, বাড়ির প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র বন্ধক রেখে দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা গ্রহন করছে।
দাদন ব্যবসায়ীদের বাড়িতে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, তাদের বাড়িতে বিরাট গুদাম ঘড় রয়েছে। তাদের এসব ঘরে অসহায় মানুষদের বন্ধকীর জিনিসপত্র রেখে দিয়েছে। এক সময় দাদনের টাকা সুদে আসলে কয়েকগুন হলে তারা নির্দিষ্ট সময়ে সুদ সহ টাকা ফেরত দিতে না পারার অযুহাতে সেসব জিনিস তারা তাদের কাছে রেখে দেয়।
বর্তমানে গ্রামাঞ্চলের কিছু উঠতি যুবক পেশা হিসেবেও দাদন ব্যবসাকে বেছে নিয়েছে। তারা এনজিও থেকে ঋন নিয়ে পুঁজি তৈরী করে দাদন ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এখন বিশেষ করে মোটর সাইকেল ও স্বর্ণের বিভিন্ন গহনা নেওয়ার প্রবনতা দাদন ব্যবসায়ীদের মাঝে বেড়ে গেছে। টাকা ফেরত দিতে দেরি হলেই সেসব মুল্যবান জিনিসপত্র তাদের হয়ে যাচ্ছে।
এতে করে সাধারন মানুষ তাদের মুল্যবান জিনিসপত্র হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ছে। দাদন ব্যবসায়ীরা টাকা দেওয়ার সময় জমির দলিল, ব্যাংকের ফাঁকা চেক ও সাদা ষ্ট্যাম্পে সাক্ষর নেয়। যখন কেউ টাকা ফেরত দিতে পারেনা তথন ঐ চেক ষ্ট্যাম্পে ইচ্ছেমত টাকা বসিয়ে পাওনাদারের নিকট দাবি করে।এমনকি প্রশাসনিক সাহায্য নিয়েও তারা ঐ টাকা আদায় করে।
অনেক দাদন ব্যবসায়ীরা অন্য ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে রাতা রাতি কোটিপতি বনে যাওয়ার আশায় এই দাদন ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছেন। তাদের বেড়া জালে বন্দী হয়ে অনেক সহজ সরল সাধারন মানুষ জমি, ঘড়-বাড়ি থেকে শুরু করে সব কিছু হারিয়ে নি:স্ব হয়ে পথে বসেছে। অনেক এলাকায় দাদন ব্যবসায়ীদের অত্যাচারে মানুষ ঘড়-বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে তাদের অত্যাচারে বাড়ি ফিরতে পারছেনা।
আসল টাকার সুদ দিতে দিতে চক্রবৃদ্ধি হার ছাড়িয়ে দ্বিগুন টাকা দিয়েছে। কিন্তু এর পরেও দাদন ব্যবসায়ীর পাওনা এথনও রয়েছে। এরকম দাদন ব্যবসায়ী নন্দীগ্রাম সদর, উমরপুর, রিধইল, রনবাঘা, কুন্দার, বীজরুল, হাটকড়ি, ধুন্দার, বুড়ইল, ভাটগ্রাম, পন্ডিতপুকুর সহ উপজেলা ও পৌর শহরের বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে রয়েছে। এসব দাদন ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া দরকার এবং গ্রামের সাধারন মানুষদের সচেতন করে তুলে তাদের বেড়া জাল থেকে মুক্ত করা দরকার বলে দাবি করেন সুধি সমাজ।