পৃথিবীর সব অদ্ভুত সৎকার

ফিচার ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:২২ পিএম, সোমবার, ২ এপ্রিল ২০১৮ | ৫৮২

মৃত্যুই জীবনের সর্বপেক্ষা সত্য। সব জরা, গ্লানিকে বিদায় জানিয়ে পৃথিবীর বুক থেকে বিদায় নেয়ার অপেক্ষা প্রতিটি মানুষের ক্ষেত্রে অবশ্যম্ভাবী। জীবনের শেষ যাত্রাটির জন্য চিন্তা করেন না এমন মানুষ বোধহয় এই ভুবনে বিরল। পৃথিবীজুড়ে নানান শেষযাত্রার রকমভেদ রয়েছে। মূলত এই প্রকার ভেদ হয় ধর্ম আর বর্ণের ভিত্তিতে। তবে ইতিহাস বলছে অন্য কথা। সারা বিশ্বজুড়ে আজো প্রচলিত সৎকারের নানান বিচিত্র রূপ। তারই বর্ণনা রইল পাঁচমিশালির পাতায়-

স্বজাতিভক্ষণ
প্রাচীনযুগে ব্রাজিল ও ভেনেজুয়েলায় ইয়ানোমামো জনগোষ্ঠীরা স্বজাতীয় ব্যক্তি মারা গেলে সেই ব্যক্তির দেহাবশেষ ভক্ষণ করত। তাদের বিশ্বাস ছিল সেই মাংস ভক্ষণের মধ্যে দিয়ে মৃত ব্যক্তি চারিত্রিক গুণাবলির ভালো দিকগুলো তাদের মধ্যে সঞ্চারিত হবে। আর এই বিশেষ তত্ত্বকে কিছু নৃতাত্ত্বিকরাও সমর্থন করেন। আজো এই প্রথা দক্ষিণ আমেরিকা ও পাপুয়া নিউগিনির মতো অঞ্চলে প্রচলিত আছে।

মমিফিকেশন
এটি আমাদের সবার কাছেই অতি পরিচিত একটি শব্দ। মিসর আর মমির সম্পর্ক অতি প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে। মিসরের ফারাওদের মমিফিকেশন করে সমাধিস্থ করা হতো। প্রথমে শরীরের সব অভ্যন্তরীণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বের করে নেয়া হতো। এরপরে শরীরের সব আর্দ্রতা অপসারিত করে গোটা শরীর ব্যান্ডেজের আকারে লিনেন কাপড় দিয়ে মুড়ে ফেলার মধ্যে দিয়েই প্রস্তুত হতো মমিফিকেশন। বর্তমানে অবশ্য এই প্রক্রিয়াটি পুরোটাই ভিন্নভাবে করা হয়। রাসায়নিক তরলের মধ্যে চুবিয়ে রেখে মৃতদেহ সংরক্ষণ করা হয়।

আকাশ সৎকার
তিব্বতের পাথুরে মালভূমিতে মৃতদেহ দাফন করা অনেক কষ্টসাধ্য সেই কারণে এখানকার মানুষরা মারা গেলে তাদের মৃতদেহ টুকরো টুকরো করে উঁচুস্থানে রেখে আসা হয়। এই প্রক্রিয়াটি পক্ষান্তরে আকাশে উড়ে বেড়ানো শকুনদের সেই মৃতদেহ খেতে দেয়া হয়। মৃতদেহ খেয়ে বেড়ানো পাখিরা আকাশে উড়ে বেড়ায় বলে এই পদ্ধতিকে আকাশ সংস্কার বলা হয়।

ভাইকিংদের শেষকৃত্য
স্ক্যান্ডেনেভিয়ান ভাইকিং জাতির এক চমকপ্রদ শেষকৃত্যের কথা জানা যায় আরবীয় পর্যটন লেখক আহমেদ ইবন ফাদলানের বর্ণনা থেকে। ভাইকিং সর্দারদের মৃত্যু হলে আট-দশদিন সেই মৃতদেহ কোনো একটি অস্থায়ী কবরে রেখে দেয়া হতো এর পরে কোনো একটি দাসীকে মৃতদেহের পরকাল সঙ্গী-স্বরূপ একটি নৌকায় বসিয়ে সেই নৌকাটিতে আগুন ধরিয়ে সমুদ্রে ভাসিয়ে দেয়া হতো।