নন্দীগ্রামে আলুর বাম্পার ফলনেও লাভের মুখ দেখছে না কৃষক


বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায় চলতি আলুর মৌসুমে বাম্পার ফলন হয়েও ভাল দাম না থাকায় লোকশানে পড়েছে চাষীরা। গত বছরের লোকশান পুষিয়ে নিতে আবার এবছর আলু চাষ করেছিল কৃষকরা।
কিন্তু এবছরও দাম না পেয়ে লোকশানে পড়তে হচ্ছে তাদের। অনেক কৃষক লোকশানের ভয়ে আলু বিক্রয় না করে হিমাগারে রাখছেন একটু লাভের আশায়। কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে উৎপাদন খরচ বাদে প্রতি বিঘায় লোকশান হচ্ছে তাদের ২ হাজার টাকা।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানাগেছে, এ বছরে নন্দীগ্রাম উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় ৪ হাজার ৩শ ৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ মাত্রা নিধারন করা হয়েছিল । কিন্ত কৃষকদের অতি উৎসাহের কারনে লক্ষ মাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে আলু চাষ হয়েছে ।
কৃষকরা এবছর উ্চ্চ ফলনশীল আলু হিসাবে ডায়মন্ড, কাডিনাল , এসট্রেজ, রুমানা, পাকড়ি, জাতের আলু বেশী চাষ হয়েছে।
অত্র উপজেলার আলুচাষী রিধইল গ্রামের হাবিবুর রহমান, জয়নাল, বুলু, অব্দুল জলিল, অব্দূল বাছেদ, বীরপলি গ্রামের হাজী রুহুল আমিন, জয়নাল আবেদীন, শাহিন , কাথম গ্রামের, আলতাব আলী, আব্দুল রশিদ, বুলু হাজী, সন্তোষ, বর্ষন গ্রামের , রইছ উদ্দিন, বেলাল হোসেন , জানায়, এ বছরে আলুর ফলন অত্যন্ত ভাল কিন্তু বাজারে দাম কম হওয়ায় প্রতি বিঘায় ২ হাজার টাকা লোকশান হচ্ছে।
তারা জানান, এসট্রেজ আলু প্রতিবিঘায় ১১০ থেকে ১২০মন যাহার বজার মুল্য ৯১ কেজিতে প্রতি বস্তা ৫৫০ থেকে ৬০০টাকা । কাডিনাল ও ডায়মন্ড প্রতিবিঘায় ১০০ থেকে ১১০মন যাহার বজার মুল্য ৯১ কেজিতে প্রতি বস্তা ৫০০ থেকে ৫৫০টাকা। তাছাড়া রুমানা ও পাকড়ি, আলু প্রায় একই দামে বিক্রয় হচ্ছে।
আলু উঠার আগ পর্যন্ত কিছু সময় বাজারে আলুর দাম বৃদ্ধি পেলেও বর্তমানে আলু উঠার সাথে সাথে কমে গেছে দাম। ফলে আলু চাষীরা তাদের উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে প্রতি বিঘায় ২হাজার টাকা লোকশান গুনছে ।
যাদের ভাল ফলন হয়েছে ওই সব আলুচাষীদের কোন রকম উৎপাদন খরচ উঠছে। আবার অনেকে ঋণ নিয়ে আলু চাষ করেছিল। তারা আলু বিক্রি করে সেই ধার শোধ করতে না পেরে দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে কৃষক আঃ জলিল জানান, গত বছরের লোকশান পুষিয়ে নিতে এবার ঋণ করে টাকা নিয়ে আলু চাষ করছিলাম । কিন্তু এবারও আলুর দাম না থাকায় লোকশান হয়েছে। এখন পাওনাদার টাকার চাপ দেওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছি।
আলুর বাম্পার ফলন হওয়ার কারন সর্ম্পকে উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ মশিদুল হক এই প্রতিনিধিকে জানান , এবছর আবহায়ো ভালো, রোগ বালাই নেই বললেই চলে। এছাড়া কৃষি অফিসের সঠিক পরামর্শে, কৃষকরা সময় মত আলুতে কিটনাশক ও সার প্রয়োগ করেছে এবং সময়মত সেচ দিয়েছে যার কারনে এ বছরে আলুর বাম্পার ফলন সম্ভব হয়েছে ।
মো: মাসুদ রানা/এমএমআর