অসামাজিক কার্যকলাপের নিরাপদ স্থান টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার অনিক নগর পার্ক

মধুপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৩:৩১ পিএম, শনিবার, ১৭ মার্চ ২০১৮ | ৬৬০

টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার সীমানাবর্তী ঘাটাইল উপজেলার সাগরদিঘী ইউনিয়নের তালতলা এলাকার অনিক নগর পার্ক অসামাজিক কার্যকলাপের নিরাপদ স্থান। টাকার বিনিময়ে ঘন্টাব্যাপী রুম ভাড়া দেওয়া হয়। শুধু রুম নয়, টাকার বিনিময়ে এখানে পতিতাও বিক্রি হয়।

এতে করে এলাকার উঠতি বয়সের ছেলে মেয়ে নষ্ট হচ্ছে। এলাকাবাসী অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধের দাবি জানালেও এখনও বন্ধ হয়নি অসামাজিক কার্যকলাপ। এলাকাবাসীর অভিযোগ ওই পার্কে অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করে কোন সুরাহা পায়নি।

অনিক নগর পার্কের গেটের সামনে অবস্থানরত ভ্যান চালক মো. লাল মিয়া বলেন, অসামাজিক কার্যকলাপ করার জন্য এখানে ১ হাজার ৮শত টাকার বিনিময়ে রুম ভাড়া দেওয়া হয়। পার্কের মেয়েসহ ২ হাজার ৮ শত টাকার বিনিময়ে অসামাজিক কার্যকলাপ চলে। ওই টাকা থেকে আমরাও কিছু কমিশন পেয়ে থাকি। আপনার যদি কিছু লাগে তাহলে আমি ব্যবস্থা করে দিতে পারবো।

অপর ভ্যান চালক মো. আরফান আলী বলেন, এই পার্কের মুল আয়ই হচ্ছে অসামাজিক কার্যকলাপ। এখানে বিভিন্ন স্কুল কলেজের ছেলে মেয়েরাও রুম ভাড়া করে সময় পার করে যায়।তালতলা একালার মো. আব্দুল হালিম মিয়া বলেন, অনিক নগর পার্কে অসামাজিক কার্যকলাপ চলায় আমাদের এলাকার উঠতি বয়সের অনেক ছেলে মেয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমি প্রশাসনের কাছে এই পার্কে অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধের দাবি করছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই চলে অসামাজিক কার্যকলাপ। তাই এই পার্কে অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধ হয় না।

নাম প্রকাশে এক দর্শনার্থী বলেন, আমি টাকার বিনিময়ে অনিক পার্কে একাধিকবার রুম ভাড়া নিয়েছি। তিনি আরও জানিয়েছেন টাকার বিনিময়ে অনিক নগর পার্কে পতিতাও পাওয়া যায়।

পার্কের গেটম্যান মো. জাকির মিয়া বলেন, সকাল ৯টা হতে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত এই পার্ক চালু থাকে। এখানে ১২ টি রুম রয়েছে। টাকার বিনিময়ে এগুলো ভাড়া দেওয়া হয়। পার্কের প্রবেশ মূল্য ৫০ টাকা।

এ ব্যাপারে পার্কের ম্যানেজার মো. মাসুম মিয়া বলেন, এখানে ১ হাজার ৮শত টাকার বিনিময়ে রুম ভাড়া দেওয়া হয়। রুম ভাড়া নিয়ে আপনার ইচ্ছাস্থাধীন নিজের বাসার মতো ব্যবহার করতে পারবেন। অসামাজিক কার্যকলাপের টাকা দিয়ে আমাদের বেশি আয় হয়। অসামাজিক কার্যকলাপ ছাড়া আমাদের মাসে মাসে লজ দিতে হয়।

এ ব্যাপারে ঘাটাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলরুবা আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত প্রয়োজনী ব্যবস্থা নিবো।

জানা যায়, প্রায় ৫ বছর আগে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সাগরদিঘী ইউনিয়নের তালতলা এলাকায় পার্ক নির্মিত হয়। তারপর কয়েকমাস লজ গেলেও অসামাজিক কার্যকলাপ চালু হওয়ার পর প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা আয় হয়।

হাফিজুর রহমান/এমএমআর