বগুড়া-২ শিবগঞ্জ অাসনে মাঠ দখলে মরিয়া অাওয়ামীলীগ-বিএনপি


অাসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কে সামনে রেখে সারাদেশের মতো বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনেও নির্বাচনী হাওয়া বইছে।সাধারন মানুষের মুখে শোনা যাচ্ছে নির্বাচনের নানা গুঞ্জন। এদিকে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি দলীয় নেতাকর্মীদের চাঙা করতে তৎপর হয়ে উঠেছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। নানা সামাজিক অনুষ্ঠানকে ঘিরে তারা ভোটারদের খোঁজখবর নিচ্ছেন, কুশল বিনিময় করছেন প্রতিনিয়ত।
স্বাধীনতা পরবর্তী নির্বাচন গুলোতে এ আসনটি সব সময় বিএনপি জামায়াতের দখলে থাকার পর সর্বশেষ ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারি বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলে এ আসনটি বিনা ভোটে চলে যায় জাতীয় পার্টির দখলে।তবে বিএনপি জামায়াত অধ্যসিত এ অাসনটি ছিনিয়ে নিতে মাঠে তৎপর বর্তমান ক্ষমতাসীন দল অাওয়ামীলীগ। অাসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে তাই গুঞ্জন উঠেছে সর্বত্র।
এই আসনে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের যে কয়জন প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে, তাদের মধ্য বেশির ভাগ প্রার্থীরই দাবি কেন্দ্রীয় সমর্থন পেলে নির্বাচন করবো। এ ক্ষেত্রে সবাই দলের মনোনয়ন পাবার শতভাগ অাসাপোষন করেছেন।
অাওয়ামীলীগের হয়ে এই অাসন থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্য যাদের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে , তাদের মধ্য রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজুল হক, সেক্রেটারি মোস্তাফিজার রহমান, পৌরমেয়র তৌহিদুর রহমান মানিক, সাবেক মন্ত্রী মোজাফফর হোসেন,বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আকরাম হেসেন।
এই অাসনে দলের অারো বেশ কয়েকজন মনোনয়ন পাবার প্রত্যাশা করছেন। অাওয়ামীলীগের এসব প্রার্থীর মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজুল হকের নামে একাধিক মামলা ও দলিয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের একাধিক অভিযোগ রয়েছে বলে দাবি অন্যন্য প্রার্থীদের । কেন্দ্রীয় সাপোর্ট তার পক্ষে গেলে ভোটের চিত্র বিপক্ষে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন নেতাকর্মীরা। যদিও মনোনয়ন পেলে জিততে কোনো সমস্যা হবে না বলে মনে করছেন তিনি।
উপজেলা অাওয়ামীলীগের সেক্রেটারি মোস্তাফিজার রহমান মোস্তা জানান, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত তার পক্ষে গেলে তিনি নির্বাচন করবেন এবং তিনিই জয়ী হবেন।
এদিকে পৌরমেয়র তৌহিদুর রহমান মানিক জনপ্রিয়তায় সবচেয়ে এগিয়ে। তিনি অনেক অাগে থেকেই সাধারন মানুষের সাথে মতবিনিময় করে অাসছেন। যোগ দিচ্ছেন নানা সভা সমিতিতে। তিনি বলেনঃ আমি মাঠে অনেক আগে থেকেই কাজ করে যাচ্ছি। অার মানুষ আমাকে যেকোনো সময় ডাকলে কাছে পায়। আমাকে তারা ভালোবাসে। তাই তার প্রত্যাশা দলীয় সমর্থন পেলে তিনি জয়ী হবেন।
বিএনপিঃ
শিবগঞ্জে বিএনপির অবস্থান বরাবরই প্রসংসনীয়। তবে গ্রেফতার অাতঙ্ককে ঘিরে পূর্বে দলীয় ইউনিটি কিছুটা দুর্বল হলেও অাসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলীয় নেতা কর্মীদের চাঙ্গা মনোভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
অাসন্ন শিবগঞ্জ ২ অাসনের নির্বাচনী মাঠে পাঁচ প্রার্থীর আনাগোনা দেখা যাচ্ছে। বিগত বছরগুলোতে তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে দূরত্ব থাকলেও এখন সেই দূরত্ব কমানোর চেষ্টা করছেন এসব নেতারা। নিয়মিত কর্মীদের খোঁজখবর রাখছেন। দলের বিভিন্ন প্রোগ্রামে উপস্থিত হচ্ছেন।
এই আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় আছেন বগুড়া জেলা বিএনপির সাংগাঠনিক সম্পাদক মীর শাহে আলম, সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট একেএম হাফিজুর রহমান,সাবেক পৌর মেয়র মতিউর রহমান মতিন, এম আর ইসলাম স্বাধীন এবং শিক্ষাবিদ মোস্তাফিজুর রহমান।
মনোনয়ন প্রত্যাশী শিবগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মীর শাহে অালমের বক্তব্য হলো,ম্যাডাম এই অাসন থেকে অামাকেই মনোনিত করবেন। অামি শিবগঞ্জ বাসীর পাশে থাকতে চাই।
নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভবনা প্রশ্নে সাবেক এমপি হাফিজুর রহমান বলেনঃ ‘ধানের শীষের টিকিট তিনিই পাবেন। সেই অনুযায়ী মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। তার মতে সুষ্ঠ ভোট হলে জনগণ তাকেই নির্বাচিত করবেন।’
জাপাঃ
বগুড়া-২ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য বগুড়া জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি শরীফুল ইসলাম জিন্নাহ। তিনি এবারো দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর এলাকায় তেমন কাজ হয়নি বলে অভিযোগ আছে জনসাধারণের মধ্যে। ফলে সাধারণ মানুষ এবার অন্য প্রার্থী খুঁজবেন বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। যদিও জরিপে তিনিই এগিয়ে আছেন।
নাগরিক ঐক্যঃ
জাতীয় পর্যায়ে রাজনীতি করলেও মাহমুদুর রহমান মান্না এখানকার সন্তান। আগামী নির্বাচনে তিনি এই আসন থেকে লড়তে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে।তবে বিএনপির সাথে জোট গত ভাবে নির্বাচন করলে তিনি এই অাসনটি চাইতে পারেন বলে ধারনা করা হচ্ছে।
জামায়াতঃ
দলীয় নিবন্ধন বাতিল হলেও এই আসনে নির্বাচনী আলোচনার ব্যাপক অংশ জুরে রয়েছে জামায়াতে ইসলামী। শিবগঞ্জের যে কোন নির্বাচনে জামায়াত বরাবরই অন্যতম ফ্যাক্ট হিসেবে কাজ করেছে।মাঠে তাদের প্রকাশ্য কার্যক্রম লক্ষ্য করা না গেলেও নেতাদের দাবি তাদের সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত রয়েছে।
এ অাসনে ইতমধ্যেই প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ শাহাদাতুজ্জামান। অনেক অাগে থেকেই তিনি বিভিন্ন সভা,মাহফিল,কুল খানি, ও জানাযায় উপস্থিত হচ্ছেন। এছাড়া সম্প্রতি শীতার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরনেও তার উপস্থিতি লক্ষ্যনীয় ছিলো। জোট গত নির্বাচন প্রশ্নে তিনি বলেন এই অাসনে বিএনপি প্রার্থী দিলেও জামায়াত একক ভাবে নির্বাচন করবে।
তবে বগুড়া শিবগঞ্জের এই অাসনটির নির্বাচনে সকল দলের অংশ গ্রহণ থাকায় উৎসব মুখর পরিবেশেই অনূষ্ঠিত হবে এ নির্বাচন এমন টাই প্রত্যাশা এলাকাবসীর।
এখন দেখবার বিষয় সর্বশেষ কে কে পাবেন মনোনয়ন অার কেইবা হচ্ছেন অাগামীর শিবগঞ্জের এমপি।