কালিহাতীতে রেল সেতুর এপ্রোচের মাটি ধ্বস
উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ বন্ধ

টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার পৌলি নদীর উপর রেল সেতুর এপ্রোচের মাটি ৩০ ফুট এলাকা জুড়ে এপ্রোচ অংশ ধ্বসে পড়েছে।
ফলে ঢাকার সাথে উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এতে নীলফামারীর চিলহাটির থেকে ঢাকাগামী নীলফামারী এক্সপ্রেস ট্রেনটি আটকা পড়েছে। এছাড়া বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব স্টেশনে ঢাকাগামী রংপুর এক্সপ্রেস,বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম স্টেশনে দিনাজপুর থেকে ঢাকাগামী একতা এক্সপ্রেস এবং ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী ধুমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনগুলো জয়দেবপুর রেল স্টেশনে আটকা পড়ে।
২০ আগস্ট রবিবার সকাল ৬টার দিকে স্থানীয়রা রেল সেতুর এপ্রোচ মাটি সরে যেতে দেখে তারা স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করে এবং স্থানীয় লোকজন লাল কাপড় টানিয়ে সতর্ক বার্তা প্রদর্শন করে। ঘটনাস্থলে রেলওয়ের স্থানীয় কর্মকর্তারা উপস্থিত রয়েছেন।
রেলওয়ে পশ্চিম অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী রমজান আলী জানান, আমরা ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছি। এখানে প্রায় ৩০ফুট গভীর হয়েছে এবং মাটি সরে পড়েছে। ধসে পড়া অংশে মাটির বস্তা ফেলে সেতু চলাচল উপযোগী করার চেষ্টা করছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
এ সময় তিনি বলেন বঙ্গবন্ধুসেতু-ঢাকা মহাসড়কের চলমান ফোর লেনের কাজ চলছে। পৌলি রেল সেতুর কাছে ফোর লেন প্রকল্পের সেতু নির্মাণের সময় থেকে সেখানে পানি বাঁধা প্রাপ্ত হচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে রেল সেতুর উপর এ কারণেও ঘটনা ঘটতে পারে।
টাঙ্গাইল ঘারিন্দা রেল স্টেশন মাস্টার জালাল উদ্দিন জানান, সকাল সাড়ে ৫টার দিকে খুলনা থেকে ঢাকাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনটি লৌহজং নদীর উপর অবস্থিত কালিহাতী উপজেলার পৌলি রেল ব্রীজ এলাকা অতিক্রম করার পর পরই পৌলি রেল ব্রীজের ৩০ফুট এলাকা জুড়ে এপ্রোচ অংশ ধসে পড়ে।
বন্যার পানিতে মাটি নরম হয়ে যাওয়ায় এই ঘটনা ঘটেছে। এতে রেল লাইনে নিরাপত্তা জনিত কারনে ঢাকার সাথে উত্তরবঙ্গ ও পশ্চিম-দক্ষিনাঞ্চলের ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে নীলফামারীর চিলহাটির থেকে ঢাকাগামী নীলফামারী এক্সপ্রেস ট্রেনটি আটকা পড়েছে।
এছাড়া বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব স্টেশনে ঢাকাগামী রংপুর এক্সপ্রেস,বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম স্টেশনে দিনাজপুর থেকে ঢাকাগামী একতা এক্সপ্রেস এবং ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী ধুমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনগুলো জয়দেবপুর রেল স্টেশনে আটকা পড়েছে।
এদিকে স্থানীয় এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই রেল সেতুর কোল ঘেষে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করার ফলে এ ঘটনা ঘটেছে।
টাঙ্গাইল জেলা প্রসাশক খান মো: নুরুল আমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে জানান, এ ঘটনা যদি বালু উত্তোলনের কারণে হয়ে থাকে তাহলে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, টাঙ্গাইল পুলিশ সুপার মাহবুব আলম পিপিএম, কালিহাতী সার্কেল মাসুদুর রহমান মনি, কালিহাতী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোজহারুল ইসলাম তালুকদার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু নাসার উদ্দিন, কালিহাতী থানার ওসি তদন্ত মোস্তাফিজুর রহমানসহ রেলওয়ের অন্যান্য কর্মকর্তা বৃন্দ।
উলেখ্য, স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় পৌলি নদীতে ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, হুমকির মুখে পৌলি রেল সেতু শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করা হলেও প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।