বাবার লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা দেওয়া সেই সানজিদা পেল ৪.৭৫


বাবার লাশ বাড়িতে রেখে এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়া টাঙ্গাইলের সেই সানজিদা আক্তার উত্তীর্ণ হয়েছেন। তিনি বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৪.৭৫ পেয়েছেন। বুধবার তাদের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। তিনি শহরের সরকারি কুমুদিনী কলেজের শিক্ষার্থী এবং শেখ ফজিলাতুন নেসা মুজিব মহিলা মহাবিদ্যালয়ের কেন্দ্রে পরীক্ষা দেন।
সানজিদার বাবা শামীম আল মামুন গত ১২ নভেম্বর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থা মৃত্যুবরণ করেন। বাবার লাশ বাড়িতে রেখে পরদিন রোববার (১৩ নভেম্বর) এইচএসসি পরীক্ষার ইংরেজি দ্বিতীয় পর্বের পরীক্ষা দেন তিনি। তার বাড়ী সদর উপজেলার দাইন্যা ইউনিয়নের বাইমাইল গ্রামে।
সানজিদা আক্তারের বড় ভাই ইমরান হোসেন জানান গত ১৬ সেপ্টেম্বর বাবা শামীম আল মানুন পাকস্থলীর সমস্যা নিয়ে টাঙ্গাইল শহরের একটি ক্লিনিকে চার দিন চিকিৎসা নেন। পরবর্তীতে কিডনিতে সমস্যা দেখা দেওয়ায় তাকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শনিবার (১২ নভেম্বর) রাতে বাবা মারা যান।
তিনি আরো জানান সকালে বাবার লাশ বাড়িতে আনা হয়। বাবার লাশ রেখেই ছোট বোন এইচএসসি পরীক্ষা দিতে যায়। পরে বাইমাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জানাযা শেষে পার্শ্ববর্তী কবরস্থানে বাবাকে দাফন করা হয়।
সানজিদা আক্তার জানান আমি বাবাকে খুব সম্মান ও ভালবাসতাম। তার অনুপ্রেরণাতেই লেখাপড়া করছি। আমার ও বাবার জন্য সবার কাছে দোয়া চাই। ভবিষ্যতে ডাক্তার হয়ে অসহায় মানুষের সেবা করতে চাই।
সরকারি কুমুদিনী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর বদরুল আলম জানান, বাবার লাশ বাড়িতে রেখে সন্তানের পরীক্ষা দেওয়া সত্যি মর্মান্তিক ঘটনা। উৎসাহ ও মনোবল একেবারে ভেঙে পড়ে। তবুও আমাদের ছাত্রী সানজিদা আক্তার পাশ করেছে। ওর জন্য আমাদের ভালবাসা, সহানুভূতি ও সহযোগিতা থাকবে। ও যেন বড় হয়ে মানুষের মতো মানুষ হতে পারে। জাতি ও সমাজের কাজে লাগে।