বাণিজ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে কোন টানা পোড়েন নেই-কৃষিমন্ত্রী


আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেছেন, বানিজ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে কোন টানা পোড়েন নেই। আমরা একে অপরের সাথে সমন্বয়ের করে কাজ করছি। আমি মনে করি খোলা বাজার অর্থনীতিতে ও মুক্তবাজার অর্থনীতিতে দাম নিয়ন্ত্রণ করা খুবই কঠিন। তবুও আমরা মনিটরিং করছি। খুব জোরালোভাবে এটা তত্বাবধান করছি।
আমরা দেখছি কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এই কৃত্তিম ঘাটতি সৃষ্টি করে দাম বাড়িয়ে মুনাফা করছে। সেটা নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব সরকারের। আমরা সেটা সর্বাত্বক চেষ্টা করছি। এ দেশের মানুষ খুব সচেতন। তারা জানে দেশে কোন দুর্ভিক্ষ নাই।
খাদ্য শস্যের দাম বাড়ছে, মানুষের কষ্ট হচ্ছে, একথা আমরা বারবার বলছি। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি বিনামূল্যে খাদ্য দেওয়ার জন্য। কম মূল্যে খাদ্য দেয়ার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। দেশে কোন খাদ্যের হাহাকার নাই, কোন সমস্যা নাই, কোন দুর্ভিক্ষ নাই। তবে মানুষের কিছু কষ্ট আছে। যারা গরীব মানুষ, নি¤œআয়ের মানুষ, রিকশা ও ভ্যানওয়ালা তাদের সমস্যা আছে। সেটা যতটা সম্ভব মোকাবেলা করার জন্য আমরা কাজ করছি।
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ভিজিএফ দিয়ে, বিনামূল্যে খাদ্য দিয়ে আমরা যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করছি। গতকাল শুক্রবার বিকেলে টাঙ্গাইল শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে অনুষ্ঠিত শহর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, যে কোন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের মৌলিক অধিকার আছে সমাবেশ, মিছিলা, যে কোন জাতীয় কোন সমস্যা, সামাজিক কোন সমস্যা নিয়ে আন্দোলন করার। কিন্তু আমাদের সংবিধানে সুপষ্ট বলা আছে মিছিল, মিটিং, সমাবেশ সুশৃঙ্খল হতে হবে এবং শান্তি বজায় রাখতে হবে। কোনক্রমেই মানুষের জীবন ও যানমালের উপর কোন হুমকি সৃষ্টি করা যাবে না। জীবনমানকে ঝুকির মধ্যে ফেলা যাবে না। কিন্তু আমরা দেখছি এই বিএনপি ঠিকই সমাবেশ করছে। এই সমাবেশ থেকে পুলিশের উপর আক্রমণ করছে। যখন পুলিশের উপর আক্রমণ করে, তখন পুলিশ বাধ্য হয়ে তা নিভৃত করার। পুলিশ তাদের পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং মাঝে গুলি পর্যন্ত করে। আপনারা শান্তিপূর্ণভাবে মিটিং করেন, তাতে কেউ বাধা দিবে না।
মন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপি মিথ্যাচার করে দেশে একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে চাচ্ছে। তারা ’১৩ সালে আবার ফিরে যেতে চাচ্ছে। তারা নির্বাচনে যাবে না, গাড়িতে আগুন দিবে, বিদ্যুতের লাইন তুলে দিবে, ট্রেনে আগুন দিবে, জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারবে। আমরা এটা করতে দিব না। এখনকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অনেক সক্ষম, অনেক সুশৃঙ্খল। আমাদেরও দায়িত্ব পুলিশকে সহযোগিতা করা। জনগনকে নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব পুলিশের। বিএনপি কি লাঠি ও অস্ত্র নিয়ে তাদের নিরাপত্তা দিতে পারবে। এটা কি সরকার মেনে নিবে। যে কোন মানুষের জীবনের নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব সরকারের। যদি বিএনপি মনে করে তারা লাঠি নিয়ে তাদের আতœরক্ষা করবে। তবে তারা ভুল পথে আছে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমরা সারা পৃথিবীর মতামতকে সম্মান করি। বিশে^র সকল সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের আমরা সম্মান করি। কিন্তু তারা যেটা বলছে তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার। কিন্তু তাদের একটা বিষয় মনে রাখতে হবে আমাদের সংবিধানে সুস্পষ্টভাবে লেখা আছে বাংলাদেশে আর কোন দিন তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা হবে না। সুপ্রিম কোর্টের রায়েও রয়েছে তত্বাবধায়ক সরকারের আইনটা অবৈধ।
ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খান ফারক।
শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল হক আলমগীর সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি এমপি, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য এবিএম রিয়াজুল কবির কাওছার, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের এমপি, ছানোয়ার হোসেন এমপি, তানভীর হাসান ছোট মনির এমপি, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মামুনুর রশিদ মামুন, শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ রৌফ প্রমুখ।
এ সময় জেলা আওয়ামী লীগ ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকমীরা উপস্থিত ছিলেন।
এরপর সন্ধ্যায় সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির সভাপতি সিরাজুল হক আলমগীর ও সাধারণ সম্পাদক এম এ রৌফের নাম ঘোষণা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খান ফারুক।