ই-অরেঞ্জের প্রতারণা : দুদককে তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

আলোকিতপ্রজন্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:৩০ পিএম, বৃহস্পতিবার, ৭ এপ্রিল ২০২২ | ৩৮৪
ফাইল ছবি

দেশের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে ওঠা গ্রাহক ঠকানো, অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)-কে তদন্ত করে চার মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।  

আজ বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) ই-অরেঞ্জ থেকে পণ্য কিনে প্রতারণার শিকার দাবি করে ৫৪৭ গ্রাহকের পক্ষে ছয় গ্রাহকের করা রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রুলসহ এ আদেশ দেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ।    

প্রাথমিক শুনানির রুলে বলা হয়, গ্রাহকদের নিরাপত্তা, সুরক্ষায় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের সঙ্গে সম্পৃক্ত বনানী থানার সাময়িক বরখাস্ত পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা, স্বত্বাধিকারী সোনিয়া মেহজাবিন ও বিথি আক্তারসহ অন্যদের বিরুদ্ধে গ্রাহক ঠকানো, অর্থপাচারের অভিযোগে আইনি ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, জানতে রুল দেওয়া হয়েছে।

সেই সঙ্গে সোহেল রানা, স্বত্বাধিকারী সোনিয়া মেহজাবিন ও বিথি আক্তারসহ অন্যদের কাছ থেকে টাকা উদ্ধার করে ক্ষতি অনুপাতে আবেদনকারীসহ অন্যান্য প্রতারিত গ্রাহকদের মধ্যে সেই টাকা বণ্টন বা বিতরণের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

বাণিজ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, পুলিশের মহাপরিদর্শক, বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান, বনানী থানার সাময়িক বরখাস্ত পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা, স্বত্বাধিকারী সোনিয়া মেহজাবিন ও বিথি আক্তারকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।      

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আহসানুল করিম ও আব্দুল কাইয়ুম লিটন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম লিটন বলেন, ‘সোহেল রানাসহ ই-অরেঞ্জের যাদের বিরুদ্ধে গ্রাহক ঠকানোর অভিযোগ উঠেছে, তারা যদি দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে থাকে, তাহলে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সেটিও আদালতকে জানাতে বলা হয়েছে। ’ 

গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় অভিযুক্ত ই-অরেঞ্জের সঙ্গে সম্পৃক্ত সোহেল রানাকে গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর সীমান্ত এলাকা থেকে আটক করা হয়। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা অনুপ্রবেশের অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার চ্যাংড়াবান্ধা সীমান্ত থেকে তাকে আটক করে। পরে ৫ সেপ্টেম্বর তাকে সাময়িক বরখাস্তের কথা জানায় ঢাকা মহানগর পুলিশ।  

ই-অরেঞ্জ থেকে ৭৭ কোটি টাকার পণ্য কিনে প্রতারণার শিকার ৫৪৭ জন গ্রাহকের পক্ষে মো. আফজাল হোসেন, মো. আরাফাত আলী, মো. তরিকুল আলম, সাকিবুল ইসলাম, রানা খান ও মো. হাবিবুল্লাহ জাহিদ নামের ছয়জন গ্রাহক গত মার্চে হাইকোর্টে রিট করেন।  

সোহেল রানা, ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন ও বিথি আক্তারসহ ই-অরেঞ্জের সঙ্গে সম্পৃক্তদের ব্যাংকসহ কার কোথায় কত ব্যক্তিগত সম্পদ আছে, তা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে দুদক ও বিএফআইইউ-এর দক্ষ কর্মকর্তাদের দিয়ে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশনাসহ রুল চাওয়া হয় রিটে।