কুমুদিনী সরকারি কলেজে নতুন অধ্যক্ষ  বদরুল আলম এর যোগদান

তনয় বিশ্বাস
প্রকাশিত: ১১:১৬ এএম, সোমবার, ৪ এপ্রিল ২০২২ | ৮০৬

টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ কুমুদিনী সরকারি কলেজে নতুন অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেছেন প্রফেসর মো. বদরুল আলম।

গত ২ এপ্রিল (শনিবার) সকালে প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছ থেকে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে তার দায়িত্ব গ্রহন করেন।২০২২ সালের ৩০ শে মার্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে কুমুদিনী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে তিনি নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছেন।

জানা যায়, তিনি টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী পাইশকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৮২ সালে এসএসএসি পাশ এবং দেশের সুনামধন্য উচ্চ মাধ্যমিকের প্রতিষ্ঠান হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত ঐতিহ্যবাহী নটরডেম কলেজ থেকে ১৯৮৪ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন বিষয়ে কৃতিত্বের সাথে ১৯৮৭ সালে ¯œাতক এবং ১৯৮৮ সালে এম.এ. ডিগ্রি লাভ করেন। প্রথম বারেই ১৪ তম বিসিএস ক্যাডার পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হন। এরপর ১৯৯৩ সালে জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ এ.এইচ.জেড সরকারি কলেজে প্রভাষক হিসেবে প্রথম যোগদান করেন। 

পরবর্তীতে মানিকগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে ১৯৯৮ সালে প্রভাষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৩ সালে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি প্রাপ্ত হয়ে কুমিল্লা সরকারি কলেজে এবং ২০০৬ সালে ঢাকা কবি নজরুল কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। এরপর ২০০৯ সালে ঢাকা সোহরাওয়ার্দী কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করেন। ২০১৩ সালে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজে দর্শন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সালের সেই বছরেই মাউশিতে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে সংযুক্ত হয়ে গাজীপুরে অবস্থিত ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। ২০২০ সালে একই কলেজে অ্যধাপক হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে দায়িত্ব পালন করেন। তারপর শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের প্রজ্ঞাপনে কুমুদিনী সরাকরি কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। তিনি যোগদান করার পরেই বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক এবং কর্মকর্তারা তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়।

এছাড়া প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ হিসেবে তিনি যোগদান করার দিন বিকেলেই প্রতিষ্ঠানের সকল সহকর্মী এবং কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে শহরের পৌর উদ্যানে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পন করেন। 

তিনি বলেন, ‘কুমুদিনী সরকারি কলেজে যোগদান করে আমি প্রথমেই স্মরণ করছি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে। আমি তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি। ১৫ ই আগস্টে ঘাতকের নির্মম বুলেটে নিহত বঙ্গবন্ধুর পরিবারসহ যেসব মানুষকে হত্যা করা হয়েছে আমি গভীরভাবে তাদেরকেও স্মরণ করছি এবং তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। আজকে কুমুদিনী সরকারি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা এবং যার নামে এই প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হয়েছে সেই স্বর্গীয় কুমুদিনী দেবীকে গভীরভাবে স্মরণ করছি। 

তিনি আরোও বলেন কুমদিনী কলেজ প্রতিষ্ঠা লঘেœর পর থেকেই যেসব ছাত্রী তাদের ফলাফলের মাধ্যমে দেশ তথা দেশর বাহিরে প্রতিষ্ঠানের সুনাম ছড়িয়ে দিচ্ছে তাদেরকে আমি সালাম এবং প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। কুমুদিনী সরকারি কলেজের মত একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানে যোগদান করতে পেরে আমি খুবই সৌভাগ্যবান, আনন্দিত এবং গর্বিত। আমার লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য হলো, এই কুমুদিনী সরকারি কলেজের যে ঐতিহ্য সেটা উত্তোরত্তর বৃদ্ধি এবং প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মানোন্নয়ন করা। এই কলেজকে কিভাবে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, এই প্রতিষ্ঠানের সুনামকে কিভাবে অব্যাহত রাখা যায় আমি সেই প্রচেষ্টা রাখবো। সেই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে আমি প্রতিষ্ঠানে আমার সহকর্মীদের নিয়ে সব সময় বসবো এবং তাদের পরামর্শ ও সহযোগিতা  গ্রহন করে এই কলেজকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবো। কলেজের যেসকল সমস্যাগুলো রয়েছে আমি প্রথমেই সেগুলো চিহ্নিত করবো। তারপর সকলের সহযোগিতা নিয়ে সমস্যাগুলো সমাধান করারা চেষ্টা করবো। 

এছাড়া টাঙ্গাইলের জনপ্রতিনিধি যারা আছে তাদেরও সহযোগিতা প্রয়োজন। আমি আশা করি, প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকসহ সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠানটিকে দেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠে পরিণত করতে পারবো।’