ইউক্রেন সংকট

বেলারুসের সাথে যৌথ সামরিক মহড়া শুরু করেছে রাশিয়া

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:০৯ পিএম, বৃহস্পতিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২২ | ৪২৬

ইউক্রেনে রুশ অভিযানের আশংকার মধ্যেই ১০ দিনের এক যৌথ সামরিক মহড়া শুরু করেছে রাশিয়া ও বেলারুস।

বেলারুস রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং ইউক্রেনের সাথে তাদের দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। এ সামরিক মহড়া উপলক্ষে রাশিয়া বেলারুসে যে সৈন্য সমাবেশ করেছে তাকে স্নায়ুযুদ্ধের পর বৃহত্তম বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সম্প্রতি রাশিয়া তাদের ইউক্রেন-সংলগ্ন সীমান্তে এক লক্ষেরও সৈন্য সমাবেশ করার পর যে কোন সময় তারা ইউক্রেনে অভিযান চালাতে পারে বলে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলো আশংকা প্রকাশ করে। তবে রাশিয়া বার বার এরকম কোন পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করেছে।

বেলারুস ও রাশিয়ার এই যৌথ সামরিক মহড়াকে ফ্রান্স একটি "সহিংস ইঙ্গিত' বলে আখ্যায়িত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রও এ মহড়াকে এমন একটি পদক্ষেপ বলে বর্ণনা করেছে - যা উত্তেজনা বৃদ্ধি করতে পারে।

ইউক্রেন বলছে, এটা মানসিক চাপ প্রয়োগের শামিল।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বৃহস্পতিবার বলেছেন, গত কয়েক দশকের মধ্যে ইউরোপ এখন তার সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা সংকটের সম্মুখীন।

কোথায় এই সামরিক মহড়া হচ্ছে?

এই মহড়ার নাম দেয়া হয়েছে 'এ্যালাইড রিজলভ ২০২২' - এবং এটা ঘটছে বেলারুসের সাথে ইউক্রেনের সীমান্তের কাছেই। ইউক্রেনের সাথে বেলারুসের সীমান্ত ১০০০ কিলোমিটারের কিছু বেশি দীর্ঘ।

আশংকা করা হয় যে যদি রাশিয়া ইউক্রেনে অভিযান চালায়, তাহলে এই মহড়ার জন্য আসা রুশ সৈন্যরা ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের অনেক কাছাকাছি থাকবে, এবং শহরটির ওপর আক্রমণ চালানো সহজতর হবে।

 
মস্কো এবং মিনস্ক - কেউই এটা প্রকাশ করেনি যে তাদের ঠিক কত সৈন্য এ মহড়ায় যোগ নেবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, প্রায় ৩০,০০০ রুশ সৈন্য এতে অংশ নেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
 
এ সামরিক মহড়ার লক্ষ্যটা কী?

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, এই মহড়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে বহিঃশত্রুর আক্রমণকে কীভাবে আত্মরক্ষামূলক কার্যক্রম দিয়ে ঠেকিয়ে দেয়া যায় - তার অনুশীলন করা।

এ ছাড়াও সীমান্তকে সুরক্ষিত করা এবং অস্ত্র ও গোলাবারুদের সরবরাহের পথগুলো আটকে দেয়ার অনুশীলনও করবে দু'দেশের বাহিনী।

ক্রেমলিনের একজন মুখপাত্র এই যৌথ মহড়াকে 'সিরিয়াস' বলে বর্ণনা করে বলেন, রাশিয়া ও বেলারুস এখন নজিরবিহীন হুমকির সম্মুখীন।

 
পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে রাশিয়া এই নিশ্চয়তা চাইছে যে ইউক্রেনকে যে কখনো নেটো সদস্য করা হবে না এবং পূর্ব ইউরোপে নেটোর সামরিক উপস্থিতি কমাতে হবে। তবে মার্কিন-নেতৃত্বাধীন নেটো এমন কোন নিশ্চয়তা দিতে রাজি নয়।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেন যদি নেটোতে যোগ দেয় এবং আট বছর আগে রাশিয়ার দখল করে নেয়া ক্রাইমিয়া পুনর্দখল করার চেষ্টা করে - তাহলে পুরো ইউরোপ একটা বড় আকারের সংঘাতে জড়িয়ে যাবে।

মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন যে একটি সর্বাত্মক অভিযান চালানোর জন্য যতটা দরকার তার ৭০% সামরিক শক্তি এর মধ্যেই সমাবেশ করে ফেলেছে রাশিয়া।