কক্সবাজার খুটাখালীর

পীর হাফেজ মাওলানা আবদুল হাই এর ইন্তেকাল

জেলা সংবাদদাতা,কক্সবাজার
প্রকাশিত: ০৩:৪৯ পিএম, সোমবার, ২২ জানুয়ারী ২০১৮ | ৫২৩

কক্সবাজারের চকরিয়ার খুটাখালীর পীর  প্রখ্যাত আলেমেদ্বীন হাফেজ মাওলানা আবদুল হাই আজ ২২ জানুয়ারি রাত ২টা ৪০ মিনিটে আলীকদম সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহির রাজেউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত ডাক্তার উপ-সহকারি মেডিকেল অফিসার মো. আমিনুল ইসলাম পীর ছাহেব হুজুরের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। রবিবার দিবাগত রাত সোয়া একটার সময় তাঁকে হাসপাতালে আনা হয়। এ সময় তিনি তীব্র শ্বাসকষ্টে ভূগছিলেন বলে কর্তব্যরত ডাক্তার ও উপস্থিত শুভকাঙ্খীরা জানান।

রবিবার (২১ জানুয়ারি) আলীকদম বাজার ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সীরাতুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাহফিলের দ্বিতীয় অধিবেশনে তাঁর সভাপতিত্ব করা কথা ছিলো।

বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নাছির উদ্দিন সওদাগর জানান, ‘হুজুর আমার বাসায় রবিবার বিকেল থেকে অবস্থান করছিলেন। রাতে মাহফিলে তাঁর সভাপতিত্ব করার কথা ছিলো। কিন্তু হুজুর অসুস্থতাবোধ করায় আমার বাসায় তিনি বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। তাঁর শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে রাত সোয়া একটার সময় বাসা থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। 


হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘হাসপাতালের জরুরী বিভাগে তাকে রাখা হয়। এ সময় হুজুরের শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। তাই তাঁকে অক্সিজেন, স্যালাইন ও ইনজেকশান দেওয়ার হয়। কিন্তু ইশারায় তিনি এসব খুলে ফেলার তাগাদা দেন। একপর্যায়ে তিনি উঠে বসতে চাইলে তাঁকে বসানো হয়। কিছুক্ষণ পর উত্তরমুখি হয়ে শোয়ে যান। এ সময় তাঁর শরীর নিস্তেজ হতে থাকে এবং তাঁকে অস্ফুষ্টস্বরে কিছু পড়তে দেখা যায়। রাত ২ টা ৪০ মিনিটের সময় তিনি ইন্তেকাল করেন’।

এদিকে, গভীর রাতে তাঁর অসংখ্য মুরীদ, শুভাকাঙ্খী ও অনুগ্রাহীরা হাসপাতালে    ভীড় করেন। ভোররাত ৪টার সময় তাঁকে আলীকদম সরকারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে এ্যাম্বুলেসযোগে খুটাখালীর গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।

চকরিয়া আবাসিক মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ হুজুরের নিকটাত্বীয় আলহাজ এসএম মনজুর জানিয়েছেন, তারা পানিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আগামীকাল মঙ্গলবার (২৩.০১.২০১৮) বিকাল ৫ টায় খুটাখালী কিশালয় উচ্চ বিদ্যালয় ময়দানে হুজুরের জানাজার নামাজ অনুষ্টিত হবে। হুজুরের মৃত্যুতে পুরো কক্সবাজার জেলায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

তিনি গারাংগিয়া দরবার শরীফের বড় হুজুর কেবলার খলিফা ছিলেন। তিনি সারা দেশে ইসলাম প্রচারের কাজে সার্বক্ষণিক জড়িত থাকতেন এবং প্রায় মাহফিলে তিনি সভাপতিত্ব করতেন। তাঁর হাতে গড়া হাজার হাজার আলেম বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে আছেন।

মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি খুটাখালী হেফজ খানার পরিচালক ছিলেন এবং গারাংগিয়া হুজুরের দায়িত্ব পালন করতেন। হুজুরের মৃত্যুতে বিভিন্ন পেশার মানুষ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।